• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৩ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

মুদ্রার মান কেনো কমছে


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৪ জুন, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, ০১:১৮ পিএম
মুদ্রার মান কমছে
মুদ্রা

ডেস্ক নিউজ: করোনার ছোবলে বেমানান বিশ্ব অর্থনীতি। ২০২১ সালের শেষের করোনার প্রভাব কমতে থাকে,শুরু হয় অর্থনীতির পুনরুদ্ধারের পালা।

মহামারীর রেশ কাটতেই  রাশিয়া ও ইউইক্রেন আক্রমণ করে বসে,ফলে আবার ও ঘনীভূত বৈশ্বিক অর্থনীতির সংকট। সম্প্রতি তেল রপ্তানি ব্যাতিত সকল দেশের ডলারের পরিবর্তে মুদ্রার মান কমেছে।

ঠিক একই ধারাবাহিকতায় কমতে থাকে আমাদের টাকার মানও, যাকে অর্থনীতির ভাষায় বলা হয় "মুদ্রার অবমূল্যায়ন"

প্রশ্ন হচ্ছে, মুদ্রার অবমূল্যায়ন কি?
এটার ইতিবাচক ও নীতিবাচক দিকগুলো কি?

প্রথমত, বৈদেশিক মুদ্রার বিপরীতে জাতীয় মুদ্রার মূল্য হ্রাসকে মুদ্রার অবমূল্যায়ন বলা হয়, যদি ধরা হয় দেশে ১ ডলার = ৮০ টাকা  বাংলাদেশে মুদ্রামান হ্রাস করে ১ ডলার = ৯০ টাকা ধার্য করলো,এতে মুদ্রার অবমূল্যায়ন করা হলো.

প্রশ্ন হলো, এই অবমূল্যায়ন কিসের ভিত্তিতে করা হয়? এটা করা হয় দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ভিত্তিতে এবং স্থায়ী হিসাব নিকেশে। সম্প্রতি বাংলাদেশ সহ  বিশ্বের প্রায় সকল দেশের মুদ্রার মান কমছে.

এক গবেষণায় দেখা গেছে যে,ডলারের বিপরীতে নিজস্ব মুদ্রার ম্যান কম হ্রাস পাবার দিক দিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বের দ্বিতীয় ও উদয়ীমান অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে প্রথম।অর্থাৎ বাংলাদেশে ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমলেও তা অন্যান্য দেশের থেকে অনেক কম.

ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশে টাকার মান কমেছে -৩.৪১%,যা ভারতীয় রুপিতে -৬.৮৩%,পাকিস্তানের -৩০.৬৩%,নেপালে -৬.৪৮%,মায়ানমার -১২.৬৭%,চায়না -৫.৪%,জাপান -১৭.৩২%,তুর্কি -৮৯.৩৭%,ইউকে -১১.৮৬%,ইউরো -১৩.৪০%

ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমলেও অনেক দেশের মুদ্রার বিপরীতে টাকার মান বেড়েছে, যেমন:জাপানের বিপরীতে +১৩.৮৬,ইউরো +১০.৯৪,ভারতীয় +২.৭৩,ব্রিটিশ পাউন্ড +৮.৭ বৃদ্ধি পেয়েছে। ডলারের মূল্য সাধারণত বাজারের চাহিদা ও জোগানের ওপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া,বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর ভিত্তি করে বাজার দরের থেকে অতিমূল্যায়ন ও অবমূল্যায়ন এর সুযোগ থাকে।

মূলত দুটি কারণে বিশ্বব্যাপী ডলারের সংকট দেখা দিয়েছে।


প্রথমত,মহামারী ও ইউইক্রেন সংকট ও চীনের জিরো পলিসি,আর দ্বিতীয়ত বিশ্বব্যাপী সকল পণ্যের মূল্য লাগামহীন বৃদ্ধি পাওয়া,যা বাড়িয়ে দিয়েছে আমদানি খরচ.

তবে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আরও দুটি কারণ রয়েছে, করোনার পর মূলধনী যন্ত্র ও কাঁচামাল আমদানী বেড়েছে আর খুলে দেওয়া হয়েছে সীমান্তগুলো।যার কারণে মানুষ পেশাগত কাজ,শিক্ষা,চিকিৎসা ও কেনাকাটার জন্য বিভিন্ন দেশে যাতায়াত করছে। ফলে হঠাৎ করেই ডলারের চাহিদা বেড়েছে।

এই মুদ্রার অবমূল্যায়নের ইতিবাচক ও নীতিবাচক দুটো দিকই রয়েছে।

ইতিবাচক দিকগুলো:
১) মুদ্রার অবমূল্যায়নের ফলে প্রবাসীরা আগের থেকে ডলারের মূল্য বেশি পায়  ফলে বৈধ পন্থায় বেশি রেমিটেন্স পাঠায়।
২) অবমূল্যায়ন হলে রপ্তানী  কারকরাও ডলারের দাম বেশি পায় যাতে রপ্তানী বৃদ্ধি পায় ফলে চলতি হিসাবে ঘাটতি কমতে থাকে।
৩) আমদানীর চেয়ে রপ্তানী  বেশি হয় বলে দেশে মুদ্রার ঘাটতিও কমে যায়.
৪) রপ্তানী খাতে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পায়.


নীতিবাচক দিকগুলো:

১) মুদ্রার অবমূল্যায়নের ফলে বাড়তি অর্থ দিয়ে ডলার কিনতে হয় ফলে আমদানি খরচ বেড়ে যায়.
২) ডলারের উর্ধগতির ফলে আমদানিকৃত কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি  পায়.
৩) আমদানীকৃত ভোগ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পায়.
৪) বিদেশ ভ্রমণের খরচ বেড়ে যায়.
৫) স্বল্প মেয়াদে মুদ্রাস্ফীতি আশঙ্কা থাকায় মানুষের প্রকৃত আয় কমে যায়.

বর্তমান এই পরিস্থিতিতে অর্থনীতির স্থিতিশীলতা ঠিক রাখা হচ্ছে সবচেয়ে জরুরি।এখন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ লাগামহীন আমদানি ব্যায় ও রিজার্ভ ধরে রাখা।

তাই অবমূল্যায়নের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আমদানিকে নিরুসাহীত করতে চাচ্ছে ও বৈধ ভাবে রেমিটেন্স পাঠাবার সুযোগ করে দিচ্ছে। এজন্য ধীরে ধীরে বার বার টাকার অবমূল্যায়ন করা হচ্ছে।

ঢাকানিউজ২৪.কম / খান মোহাম্মদ ওয়ালিদ/কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image