• ঢাকা
  • শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২০ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

ফুলবাড়ীতে গরুর ল্যাম্পি স্কিন ডিজিজ ছড়িয়ে পড়ায় শংকিত কৃষক


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: সোমবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, ০১:১৯ পিএম
শংকিত কৃষক
গরুর ল্যাম্পি স্কিন ডিজিজ

জাকারিয়া মিঞা, ফুলবাড়ী প্রতিনিধি, কুড়িগ্রাম : কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে আশংকাজনকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে গরুর ল্যাম্পি স্কিন ডিজিজ। এর ফলে ছোট বড় খামারী এবং কৃষকরা তাদের হালের গরু নিয়ে শংকিত হয়ে পড়েছে। 

গোলাম মোস্তফা (৪৫) একজন প্রান্তিক কৃষক। কিছু দিন আগে সংসারে সচ্ছলতা আনতে শুরু করেছেন গরু পালন। তার চারটি গরুর মধ্যে দুইটি গরু ল্যাম্পি স্কিন ডিজিজে (এলএসডি) আক্রান্ত। এখন গরু নিয়ে কপালে তার চিন্তার ভাঁজ। উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের ঘোগারকুটি গ্রামের এ কৃষক বলেন, প্রায় তিন সপ্তাহ আগে গরু দুটির গায়ে ফোস্কা দেখা দেয়। এলার্জি হয়েছে ভেবে দুদিন কোন ডাক্তার ডাকিনি। পরে গরুর মুখে ঘা হয়, পা ফুলে যায়। অবস্থা আরও খারাপ হলে গ্রাম্য ডাক্তার ডাকি।

ডাক্তার বলে এ রোগের নাম ল্যাম্পি স্কিন ডিজিজ। ওনি সরকারি ডাক্তার ডাকার পরামর্শ দেন। ওনার পরামর্শে সরকারি ডাক্তারের চিকিৎসা নিচ্ছি। বর্তমানে অবস্থা উন্নতির দিকে। তবে এ রোগের চিকিৎসা ব্যয়বহুল। এপর্যন্ত গরু দুটির চিকিৎসায় আমার প্রায় দশ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ডাক্তার বলেছে এটা ছোঁয়াচে রোগ। তাই বাকি গরু দুটি নিয়ে চিন্তায় আছি। তার মতো ওই এলাকার শতশত কৃষক গবাদিপশু নিয়ে চরম আতঙ্কে আছেন।

একই এলাকার কৃষক আজাদ আলী বকসী, শফিকুল ইসলাম, আলী হোসেন বলেন, আমাদের এলাকার প্রায় সবার গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে। স্থানীয় পশু ডাক্তারের চিকিৎসা নিচ্ছি। এখন পর্যন্ত এ রোগের প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় উপজেলা প্রাণি সম্পদ দপ্তরের কোন তৎপরতা দেখিনি। 
ওই এলাকার খামারি মোজাম্মেল হক বলেন, আমার খামারে ৭টি গাভী আছে। গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধির ফলে খামারের গরু গুলোকে পালন করতেই হিমসিম খাচ্ছি। তার ওপর আবার ল্যাম্পি স্কিন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। একটি গরু আক্রান্ত হয়েছে। খামারে এ রোগ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে আমার পথে বসা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না। 

উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ কৃষকের গরু ল্যাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত। কৃষকেরা জানিয়েছেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারে এ রোগের প্রাদুর্ভাব ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। রোগাক্রান্ত গরু মারা না গেলেও দ্রুতই স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটছে। আর এ রোগের চিকিৎসা চলমান রাখতে মোটা অংকের টাকা খরচ হচ্ছে। উপজেলা প্রাণি সম্পদ দপ্তরের তথ্য মতে, উপজেলায় নিবন্ধিত ৩৬০ টি গাভীর খামার রয়েছে। সব মিলিয়ে উপজেলা গরুর সংখ্যা ৭৪ হাজার। ল্যাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত কোন গরু মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটেনি। তবে উপজেলার সর্বত্র এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। গত কয়েক দিনের তুলনায় বর্তমান পরিস্থিতি উন্নতির দিকে। 

উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা (অঃ দাঃ) ডাক্তার আতিকুজ্জামান বলেন, উপজেলায় খামারিদের তুলনায় প্রান্তিক কৃষকদের গরু ল্যাম্পি স্কিন রোগে বেশি আক্রান্ত হয়েছে।

এ রোগ প্রতিরোধের কোন টীকা নেই। গরুর সঠিক পরিচর্যা ও বাসস্থান পরিস্কার পরিছন্ন রাখার মাধ্যমে এ রোগ ছড়িয়ে পড়া রোধ করা সম্ভব। আমরা মাঠ পর্যায়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। এ রোগে আক্রান্ত গরুকে নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। সঠিক চিকিৎসায় আক্রান্ত গরুকে পুরোপুরি সুস্থ করা সম্ভব। সুচিকিৎসার জন্য উপজেলা প্রাণি সম্পদ দপ্তরে দ্রুত যোগাযোগ করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি। 

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image