• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৬ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

কুমিল্লায় ১১৭ গ্রামে আর্সেনিক আতংক 


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: শনিবার, ০৩ জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১১:৩৫ এএম
কুমিল্লায় ১১৭ গ্রামে
আর্সেনিক আতংক 

মশিউর রহমান সেলিম, লাকসাম, কুমিল্লা : দক্ষিনাঞ্চলের বৃহত্তর লাকসাম উপজেলার প্রায় ১১৭টি গ্রামের ৩০ হাজার লোক আর্সেনিক বিষে আক্রান্ত হয়ে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েছে। আর্সেনিক নামের মহাদূযোর্গে আক্রান্ত রোগীদের মাঝে গবেষনা ও রোগ প্রতিরোধে সরকারি- বেসরকারী এনজিও ও বিদেশী আর্থিক সংস্থাগুলোর তৎপরতা দেখা গেলেও নাটকীয় বানিজ্যের কারনে বরং বেড়েই চলেছে।

স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, এ নিয়ে আমেরিকার সিকাগো ও কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় আর্সেনিক গবেষনা প্রকল্প বাংলাদেশে ২০০৭ সালে কার্যক্রম শুরু করে। এরপর দি হাঙ্গার প্রজেক্ট, ব্র্যাক ও ওয়ার্ল্ড ভিশন, সূর্যের হাসি ক্লিনিক ও মেরিষ্টোপসহ একাধিক দাতাসংস্থার অর্থায়নে বৃহত্তর লাকসামের ৪টি উপজেলায় আর্সেনিক মুক্তকরণে ব্যাপক উদ্যোগ নিলেও তা অনেকটাই অনুপস্থিত। ওইসময় প্রাথমিক পর্যায়ে বিভিন্ন এলাকায় প্রায় দুই সহস্রাধিক লোককে আর্সেনিক রোগী হিসাবে চিহ্নিত এবং  কয়েক হাজার লোককে এ রোগের চিকিৎসার আওতায় আনে। জেলা দক্ষিনাঞ্চলের লাকসাম, লালমাই, নাঙ্গলকোট ও মনোহরগঞ্জ উপজেলার বেশ ক’টি সরকারী/বেসরকারী সামাজিক সংগঠন ৪ উপজেলার প্রায় লক্ষাধিক লোক নিয়ে গবেষনা ও আর্সেনিকমুক্ত কার্যক্রম চালালেও চলমান সময়ে ওই প্রকল্পটি লাল ফিতায় বন্দি হয়ে পড়ে। এর মধ্যে লাকসাম উপজেলার ৩২টি গ্রামে ৬ হাজার ৮’শত, মনোহরগঞ্জ উপজেলার ২৭টি গ্রামে ৬ হাজার ৩’শত, লালমাই উপজেলার ২৩টি গ্রামে ৩ হাজার ৬’শত ও নাঙ্গলকোট উপজেলার ৩৫টি গ্রামে ৭ হাজার ১’শত লোককে আর্সেনিক আক্রান্ত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। 

সুত্র গুলো আরও জানায়, বিশেষ করে লাকসাম পৌর এলাকাসহ উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন ও মনোহরগঞ্জ উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন, লালমাই উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও নাঙ্গলকোট উপজেলার পৌরসভাসহ ১৬টি ইউনিয়নসহ ৪ উপজেলার ১১৭টি গ্রামের প্রায় ১৫ ভাগ মানুষ আর্সেনিকে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। ওইসব এলাকায় আর্সেনিক রোগীর মাঝে গবেষনা ও রোগ প্রতিরোধে বিভিন্ন বেসরকারী আর্থিক সংস্থা প্রায় ৩ হাজার সনোফিল্ডার এবং বিপুল পরিমান ঔষধ বিতরণ, স্বাস্থ্য সচেতনতায় সভা-সেমিনার ও সাংবাদিকদের সাথে মত বিনিময়ের মাধ্যমে এ রোগের প্রতিকারের বিষয়ে বিভিন্ন দিক তুলে ধরলেও তার কোন প্রতিকার নেই।

যুক্তরাষ্ট্রের আইসিডি. ডিআরবি. র্ভাটমাউন্ট, মেডিকেল স্কুল এ গবেষনা কার্যক্রমের সাথে জড়িত এবং ইউনিসেফ ও ভিপিএইচইর সহায়তায় আর্সেনিক গবেষনা কাজে বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সহযোগিতার কথা থাকলেও বৃহত্তর লাকসামের ৪টি উপজেলায় এদের কোন কার্যক্রম নেই। এছাড়া এ অঞ্চলে আগামী কিছুদিনের মধ্যে আর্সেনিক মহাদূযোর্গ হিসেবে ঝুঁকি রয়েছে। পাশাপাশি এলাকার প্রায় ৯৮ ভাগ টিউবওয়েল আর্সেনিকযুক্ত,  ৫৬ ভাগ টিউবওয়েল মল যুক্তে আক্রান্ত। বিভিন্ন সংস্থাগুলো ৩ বছর মেয়াদে আর্সেনিক মুক্ত বেশক’টি টিউবওয়েল স্থাপনের মাধ্যমে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে অনেকটাই পিছিয়ে। সদ্য স্থাপিত প্রতিটি টিউবওয়েল থেকে আর্সেনিক মুক্ত বিশূদ্ধ পানির সুবিধা অনেক তলানিতে। 

এ ব্যাপারে জেলা ও উপজেলা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ ও প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের দায়িত্ব অতি মুখ্য হলেও এ মহাদূর্যোগ আর্সেনিকের ভয়াবহতায় রোধে কারো কোন মাথা ব্যাথা নেই। বর্তমান মহাদূযোর্গ আর্সেনিক সম্পর্কে জানতে চাইলে কোন দপ্তরই মুখ খুলতে নারাজ এবং ওই সংস্থাগুলোর কর্মকর্তাদের মুঠো ফোনে বার বার চেষ্টা করেও এ সম্পর্কে তথ্য নির্ভর কোন বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। 

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image