• ঢাকা
  • শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২০ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

বাংলাদেশের ‘সিলিকন ভ্যালি’ হবে বনানী


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৬ আগষ্ট, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, ১২:০১ পিএম
‘সিলিকন ভ্যালি’ হবে বনানী
সিলিকন ভ্যালি

নিউজ ডেস্ক : চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগ চলছে। প্রথম শিল্প বিপ্লব ছিল বাষ্প ইঞ্জিনের, দ্বিতীয়টি বিদ্যুতের, তৃতীয়টি কম্পিউটার ও ইন্টারনেটের এবং বর্তমান শিল্পবিপ্লব হবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে (এআই) ঘিরে।

আমাদের অনেকের কাছে এখনো এআই এর ধারণাটি ঘোলাটে। একটু পরিষ্কার করে বললে, এই যে গুগলে কিংবা ইউটিউবে দেয়া ভয়েস কমান্ড (কোন গান শুনবেন, কী দেখবেন মুখে বলে দেয়া) ও সে অনুযায়ী ফলাফল পাওয়া, গাড়িতে উঠে কিংবা হাঁটতে গিয়ে গুগল ম্যাপে গন্তব্য সেট করে দিয়ে সে অনুযায়ী চলাচল করা, টিভি কিংবা এসিকে নিজেদের কথামতো অন/অফ করা- এসবই এএই এর প্রাথমিক রূপ। অর্থাৎ আমাদের পাশে এমন কেউ আছে যারা আমদের কথা শুনতে বাধ্য, আমাদের সেবা দিয়ে থাকে, পূরণ করে আমাদের প্রাথমিক প্রয়োজনীয়তা।

ইতোমধ্যে আমরা প্রবেশ করেছি চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে। এখন যুগটা সম্পূর্ণ সফটওয়্যারের। একটি অফিসের কথাই চিন্তা করা যাক- একজন কর্মী কখন প্রবেশ করছেন, কখন বের হচ্ছেন, কতক্ষণ টেবিলে থাকছেন, কী পরিমাণে কাজ করছেন, কাজের মান কেমন- এসবই এখন সফটওয়্যার ভিত্তিক কাজ। নিজ থেকে গিয়ে হাজিরা খাতায় এখন স্বাক্ষর করতে হয় না, মালিককে এসে খোঁজ নিতে হয় না- কে কাজ করছেন, কে করছেন না। সবকিছুই হচ্ছে টেকনোলজির মাধ্যমে। জন্মসনদ, স্বাস্থ্যসেবা, নাগরিক সেবা, শিক্ষা সেবা থেকে শুরু করে মৃত্যুর প্রত্যয়নপত্র পর্যন্ত সবকিছুতে ডিজিটালাইজেশনের ছোঁয়া লেগেছে। দেশের সিংহভাগ মানুষকে ডিজিটালাইজড করতে দেশের বুকেই গড়ে উঠেছে শত শত স্টার্টআপ কোম্পানি। তারা এআই ডেভেলপমেন্ট, অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট ও সফটওয়্যার সুবিধা থেকে দিচ্ছে সব ধরনের প্রযুক্তিগত সুবিধা।

২০ বছর আগেও বলা হতো, বাংলাদেশের বাজারে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারের দাম নেই। কিন্তু এখন এ কথা সেকেলে হয়ে গেছে। দেশের প্রযুক্তিখাত এখন আইটি ইঞ্জিনিয়ারদের হাতের মুঠোয়। অনেকেই শুরু করেছেন নিজেদের ব্যবসা। দেশে সফটওয়্যার সরবরাহ করে রফতানি করছেন বিদেশে। অনেকে বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে একজোট হয়ে কাজ করছেন। যারা দেশের বাইরে বড় বড় সফটওয়্যার কোম্পানিতে কাজ করছেন, তারাও স্বপ্ন দেখেন দেশে ফিরে এসে নিজের প্রতিষ্ঠান খোলার।

গুগলের ইঞ্জিনিয়ার শ্রীজয় হালদার বলেন, বাংলাদেশে টেকনোলজিক্যাল খাতে বড় ধরনের বিপ্লব হচ্ছে। ঢাকার বনানীর দিকে তাকালেই কিন্তু এটা টের পাওয়া যায়। বনানী দিনকে দিন দেশের সিলিকন ভ্যালিতে পরিণত হচ্ছে। বড় বড় টেক হাবগুলো গড়ে উঠছে এ এলাকায়। আমারও ইচ্ছা আছে দেশে কিছু করার। নিজের একটি টেক কোম্পানি গড়ে তোলার।

খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, এ এক অন্য বনানী। প্রায় প্রতিটি ভবনেই রয়েছে একের অধিক টেক কোম্পানি। দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে তারা প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়ে থাকে।

এমনই এক টেক কোম্পানি নেক্সট আইটির বিজনেস ডেভেলপমেন্ট অফিসার মৃত্যঞ্জয় দাস সময় সংবাদকে বলেন, আমরা মূলত গার্মেন্টস এক্সেসরিজ সফটওয়্যার নিয়ে কাজ করে থাকি। একটা সময় বিদেশ থেকে এ সফটওয়্যার কিনে এনে কাজ করতে হতো। এখন আমরা নিজেরাই এটি তৈরি করি। শুরুর দিকে সবখানে বাজারজাতের ইচ্ছা না থাকলেও আমরা বর্তমানে এটি বাজারজাত করা শুরু করেছি। এ ছাড়াও আমাদের আরও অনেক টেকনোলজিক্যাল কার্যক্রম আছে। আমাদের সবসময়ই লক্ষ্য থাকে নতুন কিছু করার।

সিলিকন-চিপ উদ্ভাবন ও বাজারজাত করার সূত্র ধরে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যে গড়ে উঠেছিল বিখ্যাত সিলিকন ভ্যালি। অ্যাপল, ফেসবুক (বর্তমান মেটা), ভিসা ও শেভরনের মতো দুনিয়া কাঁপানো কোম্পানিগুলোর আঁতুড়ঘর এটি। প্রতিদিন এখানে চালু হচ্ছে নতুন নতুন স্টার্টআপ কোম্পানি। ইতোমধ্যে হাজার হাজার সফটওয়্যার ও ইন্টারনেট ভিত্তিক কোম্পানিতে সয়লাব এ সিলিকন ভ্যালি। ২০-২৫ বছর আগেও কেউ ভাবেনি সমুদ্র তীরবর্তী এ এলাকা কাঁপিয়ে বেড়াবে সারা দুনিয়া, কিন্তু হলো তাই। বর্তমান বাংলাদেশ দিনকে দিন প্রযুক্তিগতভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, আসছে নতুন নতুন উদ্ভাবন;  নানা আইডিয়া নিয়ে শুরু হচ্ছে নিত্যনতুন স্টার্টআপ।

এককালে গুলশানের পাশে বনানী বিখ্যাত ছিল অভিজাতদের আবাসন ও রেস্টুরেন্ট ব্যবসার জন্য। সেই বনানী ধীরে ধীরে পরিণত হচ্ছে বিশাল এক টেক হাবে- যেন বাংলাদেশের বুকে এক নতুন সিলিকন ভ্যালি।

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image