বিজয় কর রতন, মিঠামইন (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন কিশোরগঞ্জের হাওরের ৮৭ হাজার জেলে। জেলার হাওর, নদ-নদী ও বিলই তাদের জীবিকার উৎস। জেলা মৎস্য অফিসের তথ্যমতে, বর্তমানে জেলায় নিবন্ধিত কার্ডধারী জেলের সংখ্যা ৮৭ হাজারের ওপরে। আরও কিছু জেলে কার্ডের জন্য আবেদন করেছেন। এগুলোর অনুমোদন দেওয়া হলে জেলের সংখ্যা ৮৮ হাজার ছাড়িয়ে যাবে।
তবে কিশোরগঞ্জ হাওরবেষ্টিত জেলা হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করা মানুষের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জেলার ১২২টি ছোট-বড় হাওর থেকে প্রতিবছর পাওয়া যায় বিভিন্ন প্রজাতির হাজার হাজার টন মাছ।
এর সংখ্যা পাওয়া যায় প্রচুর শামুক-ঝিনুক। নদ-নদীসহ বহু বিল-ঝিল রয়েছে কিশোরগঞ্জে। ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে জেলায় ৯৪ হাজার ৮৮৭.১৯ টন মাছ উৎপাদন হয়। এরমধ্যে আহরণের মাধ্যমে উৎপাদন হয়েছে ৪২ হাজার ৭৪১.৩৪ টন, যা মোট উৎপাদনের ৪৪.৪২ শতাংশ।
আর চাষের মাধ্যমে এসেছে ৫২ হাজার ৭৪১.৩৪ টন মাছ, যা উৎপাদনের ৫৫.৫৮ শতাংশ। এসময়ে হাওর থেকে উৎপাদন হয়েছে ২৮ হাজার ০২০.৫২ টন মাছ, যা মোট উৎপাদনের ২৯.৫৩ শতাংশ। আর এর আনুমানিক বাজারমূল্য এক হাজার ২৬০.৯২ কোটি টাকা। কিশোরগঞ্জের হাওরে মাছ উৎপাদনে রেকর্ড কিশোরগঞ্জের হাওর, নদ-নদী ও বিল-ঝিলে ৮০-১২০ প্রজাতির দেশি মাছ পাওয়া যায়। আর জেলায় বছরে মাছের চাহিদা রয়েছে ৭০ হাজার ৫৩০ টন। হাওর থেকে সারাবছর মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন মন্টু মিয়া। তিনি এ প্রতিনিধিকে বলেন, ‘সাধারণ জেলেরা বর্তমানে হাওরে মাছ ধরে সুবিধা করতে পারে না।
বড়লোকেরা জলমহাল ইজারা নিয়ে সব মাছ ধরে। এমনকি ইজারা না নেওয়া জলমহাল থেকেও তারা মাছ ধরে নিয়ে যায়। মাছ ধরার পেশায় বর্তমানে আর পোষায় না। কী করবো! ছোটবেলা থেকেই বাবার সঙ্গে হাওরে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে আসছি। তাই এখনো এই পেশায় রয়ে গেছি।’ মিঠামইনের জেলে তপন চন্দ্র বলেন, ‘বর্ষা মৌসুমে হাওর যখন পানিতে একাকার হয়ে যায়, তখনই কেবল সাধারণ জেলেরা মাছ ধরতে পারেন। যখন পানি কমে যায় ও মাছ বড় হয়, তখন আমরা বঞ্চিত হই।
কারণ বড়লোকেরা জলমহাল ইজারার নামে হাওর দখল করে। এ অবস্থায় না খেয়ে-পরে কোনোমতে বেঁচে রয়েছি।’ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, জেলা ও উপজেলা মৎস্য অফিসের মাধ্যমে সারাবছরই জেলেদের খোঁজখবর নেওয়া হয়। প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। দুর্যোগের সময়ও তাদের সহায়তা করা হয়।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: