• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ; ২৯ মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে বদলে গেছে গতিপ্রকৃতি


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: শনিবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, ০৮:৩৩ এএম
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:  ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর সময় ধারণা করা হচ্ছিল, এটি দ্রুত থেমে যাবে। গত সপ্তাহে এর গতিপ্রকৃতি উল্টে শঙ্কা জাগিয়েছে। গত রোববার কিয়েভ সফর গিয়ে ভারী অস্ত্র সরবরাহের বার্তা দিয়েছেন মার্কিন প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী। মার্কিন প্রেসিডেন্টও এ যুদ্ধের মাধ্যমে মস্কোকে 'শায়েস্তা' করার কৌশল প্রকাশ করেছেন।

কিয়েভকে ভারী যুদ্ধাস্ত্র দিতে জার্মানিতে ৪০টির বেশি দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী নিয়ে সম্মেলন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। রাশিয়া একে 'ন্যাটোর সঙ্গে ছায়াযুদ্ধ' আখ্যা দিয়ে পশ্চিমাদের 'দ্রুত গতির জবাবে'র হুঁশিয়ারি দিয়েছে। ক্রেমলিনের হুমকিকে পাত্তা না দিয়ে যুদ্ধ দীর্ঘ হওয়ার শঙ্কা জানাচ্ছে কিয়েভ মিত্ররা। এ সময়ে কূটনৈতিক প্রচেষ্টাও অনেকটা থমকে গেছে। এসব পদক্ষেপ যুদ্ধ স্থায়ী হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

সিএনএনের এক বিশ্নেষণে বলা হয়েছে, গত রোববার থেকে বৃহস্পতিবারের এই পাঁচ দিনে ইউক্রেন যুদ্ধ কয়েক বছরব্যাপী স্থায়ী হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছে। এসব পদক্ষেপ শুধু এ যুদ্ধে কারা জয়ী হবে, তার সিদ্ধান্ত দেবে না। পাশাপাশি একবিংশ শতাব্দীর বাকি সময়ের পথও বাতলে দেবে।

বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, 'আমরা ইতিহাস থেকে শিখেছি, স্বৈরাচারদের তাদের আগ্রাসনের মূল্য দিতে বাধ্য না করলে তারা আরও আগ্রাসন চালায়, যা যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বের জন্য হুমকি। আমরা এটি ঘটতে দিতে পারি না।' ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস বলেন, ভূরাজনীতি ফিরে এসেছে। এ যুদ্ধ আরও কয়েক বছর স্থায়ী হতে পারে। এসব বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের কৌশল পরিস্কার হয়েছে; তা হলো 'বৈশ্বিক হুমকি মোকাবিলায় রাশিয়াকে দুর্বল করা।'

এসবের পর মস্কোর প্রতিক্রিয়ায়ও ছাড় দেওয়ার লক্ষণ নেই। এরই মধ্যে রুশ প্রেসিডেন্ট ভদ্মাদিমির পুতিন 'জ্বালানি অস্ত্র' ব্যবহার করেছেন। পোল্যান্ড ও বুলগেরিয়ায় গ্যাস সরবরাহ স্থগিতের নির্দেশনা দিয়েছে মস্কো। পাশাপাশি পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারেরও হুমকি দিয়েছে তারা।

এ যুদ্ধে ইউক্রেনের বহু শহর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। হাজারো মানুষের প্রাণহানির পাশাপাশি কোটি ইউক্রেনীয় বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। তবুও যুদ্ধ বন্ধে বাস্তবিক কোনো কূটনৈতিক প্রচেষ্টা নেই। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার কিয়েভ সফর করেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। তার সফরের মধ্যে কিয়েভ ও শহরতলিতে জোড়া বিমান হামলা চালিয়েছে মস্কো। এতে এক সাংবাদিকসহ অন্তত দু'জন নিহত হয়েছেন। এ যুদ্ধ বন্ধে ব্যর্থতার জন্য তিনি নিরাপত্তা পরিষদের কড়া সমালোচনা করেছেন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি অভিযোগ করেছেন, রাশিয়া জাতিসংঘকে অবমূল্যায়ন করছে।

মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনের কিয়েভ সফর, পশ্চিমা বিশ্বের প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সম্মেলন, ইউক্রেনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে মস্কোর সাম্প্রতিক সমন্বিত হামলা এবং পুতিনের ঝোড়ো হামলার হুমকি- এসব কর্মকাণ্ড ইঙ্গিত দিচ্ছে যুদ্ধ শিগগিরই থামছে না। ন্যাটো মহাসচিব জেনস স্টোলটেনবার্গ বলেন, এ যুদ্ধ কয়েক মাস বা বছর ধরে চলতে পারে।

ট্রাস রুশ সম্প্রসারণবাদের বিরুদ্ধে পশ্চিমা বলকান ও ন্যাটো জোটের বাইরের জর্জিয়া ও মলদোভায় সামরিকায়ন বাড়াতে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। মস্কো এর প্রতিশোধ নিতে শুরু করেছে। পশ্চিমা মিত্রদের জন্য জ্বালানির মূল্য রুশ মুদ্রা রুবলে পরিশোধের শর্ত দিয়ে কিছু দেশে গ্যাস বন্ধের নির্দেশনা দিয়েছে মস্কো।

ইউক্রেনকে সামরিক, অর্থনৈতিক ও মানবিক সহায়তার জন্য আরও ৩৩ বিলিয়ন ডলারের তহবিল দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বাইডেন। এর মধ্যে পূর্ব ইউরোপে মহড়ার জন্য আট হাজার সেনা মোতায়েন করছে যুক্তরাজ্য। ন্যাটো এতদিন প্রকাশ্যে সামরিক সহায়তা দেওয়ার কথা না বলেও গতকাল জোটটি জানায়, তারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে এ যুদ্ধে সহায়তা দিতে প্রস্তুত। কিয়েভকে যুদ্ধাস্ত্র দিয়ে ন্যাটো ও পশ্চিমারা ছায়াযুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ক্রেমলিন। যার কারণে পারমাণবিক যুদ্ধের শঙ্কা বাড়ছে, যা চলমান যুদ্ধ লম্বা হতে রসদ জোগাচ্ছে। ন্যাটোর উপমহাসচিব মিরসিয়া জিওয়ানা বলেন, এ যুদ্ধ শেষ হতে কয়েক বছর লেগে যেতে পারে।

গুতেরেস এ সফরে মস্কো ও কিয়েভের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। শেষে সিএনএনকে তিনি বলেন, 'বৈঠকে এ যুদ্ধ বন্ধ হবে না। কেবল রুশ ফেডারেশন চাইলে এবং গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক চুক্তি হলেই থামবে সংঘাত। আমরা সব আলোচনা করেছি, তবে তা যুদ্ধ বন্ধ করছে না।'

 

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image