গৌতম চন্দ্র বর্মন, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ ঠাকুরগাঁওয়ে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বেলসাড়া গ্রামের মোশারফ হোসেন (৫৫) নামের এক কৃষকের সাজার সংবাদ পেয়ে ছেলে ক্ষমা চাইতে গেলে ছেলেকেও হাজতে পাঠান উপজেলা নির্বাহী অফিসার যোবায়ের হোসেন। এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
গতকাল শনিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বড় পলাশবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান সাহাবউদ্দীন।
এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বেলসাড়া গ্রামের মরহুম কুশম উদ্দীনের ছেলে কৃষক মোশারফ হোসেন পৈত্রিক ও কবলা সূত্রে জমি ক্রয় করে প্রায় ২০ বছর আগে একটি টিনসেড বাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করে আসছেন।
একই গ্রামের কতিপয় ব্যাক্তি সুপরিকল্পিত ভাবে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে রেকর্ডীয় রাস্তায় পাকা ঘর নির্মাণ করেছে মর্মে ইউএনও’র বরবারে অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের প্রক্ষিতে ইউএনও ওই কৃষককে তার স্থাপনা সরিয়ে নিতে সময় বেঁধে দেন। কিন্তু মোশারফ হোসেন আর্থিক সংকটের কারণে স্থাপনা সরিয়ে নিতে পারেননি।
গত বৃহস্পতিবার বিকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার পুলিশ ফোর্স, সার্ভেয়ার ও মিস্ত্রীসহ গিয়ে মোশারফ হোসেনের সীমানা পাচীর ও শয়ন ঘরের একটি কক্ষের ওয়াল (আংশিক) ভেঙ্গে দেয়। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপে ওয়াল ভাঙ্গা বন্ধ করেন। এরপর স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে ডেকে মোশারফ হোসেনের কাছে অঙ্গীকার নামায় স্বাক্ষর চান। কিন্তু তিনি অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর দিতে অস্বীকৃতি জানালে স্থানীয় চেয়ারম্যানকে রাত ৮টার দিকে ওই কৃষককে সাথে নিয়ে যেতে বলেন।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেনকে সাথে নিয়ে গেলে ইউএনও আবারো অঙ্গিকার নামায় স্বাক্ষর চান, তিনি আবারও স্বাক্ষর দিতে অস্বীকৃতি জানালে ইউএনও ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে সরকারী কাজে বাঁধা দেওয়ার অভিযোগে কৃষক মোশারফ হেসেনকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন। এই সংবাদ পেয়ে ছেলে মাহফুজ (৩০) ইউএনও অফিসে গিয়ে ক্ষমা প্রার্থণা করলে ছেলেকেও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন।
এ ব্যাপারে মাহফুজের স্ত্রী রিনা আক্তার বলেন, এলাকার একটি কুচক্রী মহল মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে আমাদের পরিবারকে হয়রানী করে আসছে। আমার স্বামী ও শ^শুড় ন্যায় বিচার হতে বঞ্চিত হয়েছে।
ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহা. যোবায়ের হোসেন বলেন রেকর্ডীয় রাস্তায় ওই ব্যক্তি পাকাঘর নির্মাণ করায় এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে এবং সরকারি কাজে বাঁধা সৃষ্টি করায় তাদের এ আদেশ প্রদান করা হয়।
জেলার আইনজীবী সহ সচেতন মহল বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার যোবায়ের হোসেন যে কাজটি করেছেন তা সংবিধান পরিপন্থী এবং এখানে পক্ষপাতিত্বের বিষয় অবশ্যই রয়েছে।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: