
নিউজ ডেস্ক: দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি কে হচ্ছেন- তা নিয়ে জল্পনার শেষ নেই। এই পদে তিনজন ব্যক্তিকে নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে ত্রিমুখী আলোচনা থাকলেও তালিকাটি এখন ছোট হয়ে এসেছে। আলোচনায় প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিকবিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান এগিয়ে রয়েছেন। তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠক থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতি পদে কে মনোনয়ন পেতে যাচ্ছেন, তা জানা যাবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মন্ত্রিসভার একজন প্রভাবশালী সদস্য বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিকেই পরবর্তী রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করতে চাইছেন। তিনি দু'জন খ্যাতনামা ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তাঁরা সম্মত হননি। তবে এখন যে আলোচনা চলছে, তাতে ড. মসিউর রহমান এগিয়ে রয়েছেন।
পরবর্তী রাষ্ট্রপতি হিসেবে শুরু থেকেই সম্ভাব্য হিসেবে আলোচনায় ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু, দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার এমপি, সুপ্রিম কোর্টের সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।
তবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের দিনক্ষণ এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে এই তালিকা ছোট হয়ে এসেছে। বর্তমানে ড. মসিউর রহমানের মধ্যেই আলোচনা সীমিত হয়ে পড়েছে । তবে আওয়ামী লীগের বড় অংশটি নতুন রাষ্ট্রপতি হিসেবে রাজনৈতিক ব্যক্তিকে দেখতে চাইছে। আরেকটি অংশ রাষ্ট্রপতি পদে আমলা প্রত্যাশা করছে।
আগামী ২৩ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। দু'বারের বেশি রাষ্ট্রপতি হওয়ার সুযোগ না থাকায় তাঁর জায়গায় নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করতে হবে। আবদুল হামিদ ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল দেশের ২০তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন। ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল দ্বিতীয় মেয়াদে ২১তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। অর্থাৎ ২৪ এপ্রিলের মধ্যেই ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে নতুন কারও শপথ নেওয়ার কথা।
রাষ্ট্রপতির পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ৯০ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের কথা সংবিধানে বলা হয়েছে। অর্থাৎ বর্তমান রাষ্ট্রপতির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। সে অনুযায়ী, স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করেছেন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের নির্বাচন কর্তা ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
তপশিল অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি পদে ভোট গ্রহণ করা হবে ১৯ ফেব্রুয়ারি। আগ্রহী প্রার্থীরা ১২ ফেব্রুয়ারি মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন। ১৩ ফেব্রুয়ারি যাচাই-বাছাইয়ের পর ১৪ ফেব্রুয়ারি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে। রাষ্ট্রপতি জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হন না। সংসদীয় গণতন্ত্রে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন সংখ্যাগরিষ্ঠ সংসদ সদস্যের ভোটে।
রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী হতে হলে সংসদ সদস্য হতে হয় না। তবে সংসদ সদস্যদের মধ্য থেকে একজনকে প্রস্তাবক এবং একজনকে সমর্থক হতে হবে। সংবিধান অনুযায়ী, পরবর্তী রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়ে শপথ না নেওয়া পর্যন্ত বর্তমান রাষ্ট্রপতি নিজ পদে বহাল থাকবেন।
ঢাকানিউজ২৪.কম /
আপনার মতামত লিখুন: