• ঢাকা
  • শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২০ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

কুমিল্লায় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য গাছের ঢেঁকি এখন অস্তিত্ববিহীন


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: সোমবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ০১:০৯ পিএম
কুমিল্লায় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য গাছের
ঢেঁকি এখন অস্তিত্ববিহীন

মশিউর রহমান সেলিম, লাকসাম, কুমিল্লা :  দক্ষিনাঞ্চল লাকসাম, লালমাই, বরুড়া, নাঙ্গলকোট ও মনোহরগঞ্জ উপজেলা জুড়ে এখন আর চোখে পড়ে না গ্রামবাংলার ঐতিহ্য গাছের ঢেঁকি। প্রযুক্তির যুগের কাছে হার মেনে এ অঞ্চলে চিরায়ত ঐতিহ্য গাছের ঢেঁকি এখন নিজেই নিজের কাছে অস্তিত্ববিহীন হয়ে পড়েছে। 

জেলা দক্ষিনাঞ্চলের একাধিক পরিবার জানায়, একসময় এ অঞ্চলের কেউ কেউ গ্রামবাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী গাছের ঢেঁকি ছাঁটাইয়ের কাজে ভাড়া দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতো। তবে উপজেলাগুলোর প্রতিটি বাড়ী কিংবা ঘরে ঢেঁকির রুম ছিলো। বিয়ে অথবা কোন অনুষ্ঠান আসলে ঢেঁকি ঢং ঢং খট খট শব্দে বুঝা যেতো ওই বাড়ীতে কোন না কোন অনুষ্ঠান কিংবা কিছু একটা হচ্ছে। বিশেষ করে রবি ও আমন মৌসুমে এবং শীতকালেই এ ঢেঁকির ব্যবহার বেড়ে যেতো। এলাকার প্রতিটি পরিবার এ ঢেঁকি দিয়ে চাল, ডাল, মসল্লা, চাউলের গুড়া ও শীতের পিঠাসহ নানাহ উপকরণ ছাটাই এবং সু-স্বাদু খাবার তৈরিতে অন্য কোন বাহন ছিলো না। তবে বর্তমান প্রযুক্তির যুগে বিভিন্ন ধরনের আধৃুনিক যন্ত্রপাতি আবিস্কারের ফলে হারিয়ে গেছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্য গাছের ঢেঁকির ছাঁটাই কাজ। 

সূত্রগুলো আরও জানায়, বর্তমানে নতুন নতুন প্রযুক্তির দৌরাত্বে এ অঞ্চল থেকে গাছের ঢেঁকি এখন হারিয়ে গেছে। অথচ সংসার জীবনে কিংবা সু-স্বাদু খাবার তৈরিতে গ্রামীন জনপদে ঢেঁকিই ছিলো একমাত্র বাহন। বিশেষ করে অগ্রহায়ন, পৌষ, মাঘ ও বৈশাখ-জৈষ্ঠ্য মাসে এলাকার প্রতিটি পরিবারে ছিলো উৎসবের আমেজ। চারিদিকে ঢেঁকির ধুব-ধাপ শব্দ পাওয়া যেতো। চাউলের গুড়া দিয়ে বিভিন্ন রকম সু-স্বাদু খাবার বানিয়ে ছেলে-মেয়ের শ^শুর বাড়ী কিংবা স্বজনদের বাড়ীতে পাঠাতো। 

উপজেলাগুলোর শীতের পিঠা বিক্রেতাদের একাধিক সূত্র জানায়, শীতকালে হাট-বাজারের অলিগলি জুড়ে ঢেঁকি দিয়ে ছাঁটাই করা চাউলের গুড়ার মিশ্রনে তৈরি শীতের নানা রকম পিঠার পসরা সাজাতাম। তখনকার সময়  ক্রেতাদের চাহিদাও ছিলো এবং বিক্রিও হতো। এছাড়া নবান্ন উৎসব, বিয়ে, নববর্ষ, ঈদ ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে গাছে তৈরি ঢেঁকি দিয়ে ছাঁটাই করে নানাহ সু-স্বাদু খাবারের উপকরণ তৈরি করা হতো। বর্তমান প্রযুক্তির কাছে হার মেনে ঢেঁকি দিয়ে ছাঁটাইয়ের কাজ যেনো শুধুই স্মৃতি। ২/৪ গ্রাম ঘুরলেও বর্তমানে গাছের ঢেঁকি এখন নিঁখোজের তালিকায়।

গ্রামবাংলার চিরায়ত ঐতিহ্য গাছের ঢেঁকি নতুন প্রজন্মের কাছে একটাই শব্দ সেটা হলো ঢেঁকির ইতিহাস। গ্রামবাংলার এ ঢেঁকিকে ঘিরে কবি-সাহিত্যিকরা রচনা করেছেন হাজারো কবিতা, নাটক ও পালা গান। গাছের ঢেঁকির ব্যবহার বাড়াতে বন বিভাগ, খাদ্য ও পরিবেশ দপ্তর আন্তরিক হলে গ্রামবাংলার শতবছরের পুরনো ঐতিহ্য ঢেঁকির ব্যবহার আবারও চালু হবে এটাই সকলের প্রত্যাশা। 

এ ব্যাপারে জেলা-উপজেলা বনবিভাগসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের একাধিক কর্মকর্তাদের মুঠোফোনে বার বার চেষ্টা করেও তাদের কোন বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। 

ঢাকানিউজ২৪.কম /

আরো পড়ুন

banner image
banner image