
জাফর আলম, কক্সবাজার : বসন্তের ছোঁয়া লেগেছে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের নগরী কক্সবাজারে। প্রিয়জনের সঙ্গে প্রিয় কিছু মুহূর্ত কাটাতে সৈকতে ভিড় করেছেন অনেকে। বিশ্ব ভালোবাসা দিবসকে ঘিরে কক্সবাজার সৈকতে ঢল নেমেছে পর্যটকদের। বিশেষ দিবসগুলোতে পর্যটকের সংখ্যা বাড়ায় খুশি পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
বসন্তের আমেজ, অন্যদিকে শীতের বিদায়, ফাল্গুনের সূচনা।শীতের রুক্ষতাকে বিদায় জানিয়ে ফুলে ফুলে সেজে উঠতে ব্যস্ত প্রকৃতি। প্রকৃতিতে ফাল্গুনের হাওয়া, বাতাসে বসন্তের উন্মাদনা। ঋতুরাজকে স্বাগত জানাতে প্রকৃতি সেজেছে বর্ণিল সাজে। গাছে গাছে পলাশ আর শিমুলের মেলা। প্রকৃতিও আগুন রাঙা ভালোবাসার রঙে নিজেকে রাঙিয়ে নিয়েছে। সব মিলিয়ে প্রকৃতি জানান দিচ্ছে আজ পহেলা ফাল্গুন।একই দিনে বিশ্বজুড়ে উদযাপিত হচ্ছে ভালোবাসার দিন। ভালোবাসা দিবস আর বসন্তের রঙ তাই মিলেমিশে এক হচ্ছে ১৪ ফেব্রুয়ারি। ফাল্গুনের হাত ধরেই ঋতুরাজ বসন্তের আগমন। আর সেই সঙ্গে ঋতুরাজের হাত ধরে এবারও এলো ভালোবাসার এই বিশেষ দিনটি। একদিকে বাসন্তী রঙ, অন্যদিকে ভালোবাসার রঙের জোয়ারে প্রকৃতি একাকার।
ভালোবাসা দিবস আর প্রকৃতির পালাবদলের বসন্ত একইসঙ্গে দোলা দিয়ে যাচ্ছে। ফাগুনের আগুনে, মন রাঙিয়ে বাঙালি তার দীপ্ত চেতনায় উজ্জীবিত হচ্ছে সবাই। গত কয়েকবার ধরে ঋতুরাজের হাত ধরে আসছে ভালোবাসা দিন। মঙ্গলবার ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। যদিও ভালোবাসা ক্ষণিকের নয়, ভালোবাসা চিরন্তন। ভালোবাসা শুধু প্রেমিক-প্রেমিকার নয়- শুধু স্বামী-স্ত্রীর নয়, এই ভালোবাসা বয়সের ফ্রেমে বাঁধা নয়, এটা প্রসারিত হয় বন্ধু-বান্ধব, পরিচিতজনসহ সবার মাঝেই। ইংরেজি বর্ষপঞ্জির ১৪ ফেব্রুয়ারি দিনটি ভালোবাসা দিবস হিসেবে পরিচিত সারা বিশ্বে।
কক্সবাজার সৈকতে দিবসটি ঘিরে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে তরুণ প্রজন্মের।অন্যদিকে ফাগুনের আগুনে, মন রাঙিয়ে বাঙালি তার দীপ্ত চেতনায় উজ্জীবিত হওয়ার দিন আজ। বাসন্তী রঙের শাড়ি, কপালে টিপ, হাতে চুড়ি, পায়ে নূপুর, খোপায় ফুল অথবা রিং জড়িয়ে আজ বেরিয়ে পড়বেন তরুণীর দল। প্রকৃতির সঙ্গে নতুন সাজে সাজবেন তারাও।
তাদের উচ্ছ্বাস মনে করিয়ে দেয় কবির কবিতার লাইন ‘ফুল ফুটুক আর নাই ফুটুক, আজ বসন্ত’।তাই অগণিত পর্যটক দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে এসেছেন সৈকতের শহর কক্সবাজারে। সকাল থেকে সৈকতের ছয়টি পয়েন্ট পর্যটকদের পদচারণায় মুখর। শুধু সৈকত নয়, চার শতাধিক হোটেল মোটেল ও রিসোর্টে পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড় রয়েছে। পর্যটকদের সরব উপস্থিতিতে সৈকত শহর যেন উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছে।
কক্সবাজারে বেড়াতে আসা কাদের ও আশা দম্পতি বলেন, আজকের বিশেষ দিনে সময় কাটাতে সাগর পাড়ে চলে আসলাম। এখানে এসে খুব ভালো লাগছে। আর আমাদের সমুদ্রের উত্তাল ঢেউয়ের সঙ্গেও যেন চলছে ভালোবাসার মিতালি। ঢাকা মিরপুর থেকে আসা পর্যটক শাকিল ও জিয়ান বলেন, সময় কাটাতে কক্সবাজারে আসা। এখানে এসে খুব ভালো লাগছে।
এদিকে বিশ্ব ভালোবাসা দিবসকে ঘিরে কক্সবাজারের প্রায় চার'শ হোটেল-মোটেল ও গেস্ট হাউসে পড়েছে বাড়তি চাপ। সব হোটেলেই ৮০ ভাগেরও বেশি রুম আগে থেকেই বুকিং হয়ে গেছে। আবার কোনো কোনো হোটেলে বিশেষ এই দিন উপলক্ষে ৫০ শতাংশ ছাড়সহ পর্যটকদের জন্য রাখা হয়েছে নানা আয়োজন।
সৈকতের লাবণী পয়েন্টের হোটেল মিডিয়া ইন্টারন্যাশনালের জেনারেল ম্যানেজার রাকিব হাসান বলেন, এই দিনে পর্যটকদের জন্য ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। পাশাপাশি বাড়তি সেবা নিশ্চিত করার বিষয়টিও আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের ইন্সপেক্টর গাজী মিজান বলেন, ভালোবাসা দিবসে পর্যটকের আনাগোনা বেড়েছে। পুলিশের নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে হেল্প ডেস্ক স্থাপন করা হয়েছে। পর্যটকদের নিরাপত্তায় আমরা সব সময় তৎপর।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: