• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৫ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

কিশোরগঞ্জের হাওর যেন মৎস্য ভান্ডার


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৯ জুলাই, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, ১২:৫৫ পিএম
হাওর যেন মৎস্য ভান্ডার
হাওরে মৎস্য

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি: দেশের অন্যতম মৎস্য ভান্ডার কিশোরগঞ্জের হাওর। প্রচুর জলাশয় থাকার ফলে অনেক মাছ উৎপন্ন হয়। প্রচুর শামুক ঝিনুকও উৎপন্ন হয় হাওরাঞ্চলে। যা প্রকৃতির অমূল্য সম্পদ। ঝড় নাই বৃষ্টি নাই জীবনের মায়া উপেক্ষা করে জীবিকা নির্বাহের তাগিদে জেলেরা বেরিয়ে পড়ে মৎস্য শিকারে। কেউবা ডিঙি নৌকা নিয়ে কেউ ইঞ্জিনচালিত ট্রলার নিয়ে। ভয় নেই ভীতি নেই তাদের শুধু একটা চিন্তা মাছ শিকার।

অতিবৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে অনেক সময় হাওরের কাঁচা ও আধা পাকা বোরো ধান তলিয়ে যায়। তখন ধান পচে পানি দূষিত হয়ে পড়লে সাধারণ কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সে সময় হাওরের মাছসহ অন্যান্য জলজ প্রাণী মারা যায়। মড়ক ঠেকাতে কার্যকরী পদক্ষেপ না নিলে মৎস্যসম্পদ রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়ে।

কিশোরগঞ্জ মৎস্য অফিস সূত্র জানায়, জেলায় মৎস্যজীবীর সংখ্যা ৮৩ হাজার ১৫১ জন। মৎস্য সমবায় সমিতি রয়েছে ৩৭৯টি। মাছের আড়ত ৩৫১টি। সরকারি ও বেসরকারি হিসেবে পুকুর-দিঘী রয়েছে ৩৩ হাজার ৫২৮টি। ৪৫০.৭২ হেক্টর আয়তনের খাল রয়েছে ১৪৭টি, ২৬টি নদী, ৩৪৭টি বিল, ৫৪টি হাওর রয়েছে কিশোরগঞ্জে। বিল নার্সারীর সংখ্যা ২২টি। অভয়াশ্রম রয়েছে ১১টি।

গত অর্থবছরে কিশোরগঞ্জে শুকটি উৎপাদন হয়েছে ১ হাজার ৫৭০.৮৪ মেট্রিক টন। বার্ষিক মৎস্য উৎপাদন হয়েছে ৮২ হাজার ২৮৩.৫০ মেট্রিক টন, যা চাহিদার চেয়ে ১৫ হাজার ৯৫৫ মেট্রিক টন বেশি। গুণগত পোনার প্রাপ্যতার অভাব, উত্তম মাছ চাষ অনুশীলন বা ব্যবস্থাপনা না করা, বাণিজ্যিক খামারের সংখ্যা কম, অপরিকল্পিত বাঁধ তৈরি, নির্বিচারে মৎস্য আহরণ, মৎস্য সংরক্ষণ আইন মেনে না চলা, অপর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ, মৎস্য আইন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে মৎস্য কর্মকর্তাদের প্রশাসনিক ক্ষমতা না থাকায় উৎপাদনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয় বলে জানা গেছে। হাওরে কর্মরত বেসরকারি সংস্থা ও তীরবর্তী মানুষের দাবি, হাওরে মাছের উৎপাদন বাড়াতে মৎস্য অভয়াশ্রমের সংখ্যা আরও বাড়ানো প্রয়োজন। তাতে হাওর তীরের মানুষের জীবনমানের উন্নয়নের পাশাপাশি গোটা দেশের মানুষের মাছের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রফতানি করা সম্ভব হবে হাওরের মাছ।

তবে তার আগে হাওর খেকো অসাধুচক্রের হাত থেকে মুক্ত করতে হবে। মৎস্যসম্পদ উন্নয়নের জন্য প্রকৃত জেলেদের মধ্যে জলমহাল ইজারা দিতে হবে। মৎস্য সমবায় সমিতিগুলোতে প্রতীকী নাম ব্যবহার করে এক শ্রেণির অসাধু লোক জলমহাল ইজারা নিয়ে আড়ালে জলমহালের সুবিধা ভোগ করে। অর্থ প্রদান করে জলমহালের মালিক বনে যায়। এতে প্রকৃত জেলেরা লভ্যাংশ থেকে বঞ্চিত হন।

বৈশাখ মাস থেকে আষাঢ় মাস এই তিন মাস প্রতি বছর মাছ ধরা বন্ধ রাখতে পারলে অনেকাংশে মাছের বংশবিস্তার বৃদ্ধি পাবে। মৎস্য আইন আছে কিন্তু প্রয়োগ নেই, এটি জোরদার করতে হবে। এছাড়াও মুরগির বিষ্টা, গোবর ও কম্পোস্ট সার ব্যবহার করতে নিরুৎসাহিত করতে হবে মাছ উৎপাদনকারীদের।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রিপন কুমার পাল বলেন, কিশোরগঞ্জে মৎস্য উৎপাদন উদ্বৃত্ত থাকে। দেশের মৎস্য চাহিদা পূরণে কিশোরগঞ্জের ভূমিকা রয়েছে। প্রাকৃতিক মাছের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য মৎস্য আইন বান্তবায়ন করছি। অভায়াশ্রম স্থাপন করা জরুরি। সচেতনতা বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছি। জলমহাল প্রকৃত জেলেরা অর্থাৎ নিবন্ধিত জেলেরা পাচ্ছে কিনা তা আমরা নিশ্চিত করি।
 

ঢাকানিউজ২৪.কম / বিজয়কর রতন/কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image