কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ:- কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার গুণধর ইউনিয়নের সুলতাননগর গ্রামের পূর্বপাড়ায় নরসুন্দা নদীর তীরে ও ডোবার পাড়’ কবরস্থান থেকে গত ২৭ মে (শুক্রবার) মতিউর রহমান নামে এক হোটেল কর্মচারীর খন্ডিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। দ্বিখন্ডিত লাশ পাওয়ার পর পিবিআইয়ের ক্রাইমসিন ইউনিট ঘটনাস্থল পর্রিদশন করে এবং ছায়া তদন্ত অব্যাহত রাখে। তদন্তে বেরিয়ে আসে এই হত্যাকাণ্ড কে ঘটিয়েছিল।
পিবিআই পুলিশ সুপার মোঃ শাহাদাত হোসেন (পিপিএম) এর তত্ত্বাবধানে পিবিআই কিশোরগঞ্জ টিম নেত্রকোণা জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলার জিমটি বাজার এলাকা থেকে (9 জুন) দিবাগত রাতে গ্রেফতার করে মোঃ হারিছ মিয়াকে (৫০)। গ্রেফতারকৃত হারিছ মিয়া করিমগঞ্জ উপজেলার সুলতান নগর এলাকার মৃত আঃ হাফিজের পুত্র। গ্রেফতারের পর আসামি মোঃ হারিছ মিয়া প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মতিউর রহমানকে (৫৫) হত্যা করেছে বলে স্বীকার করে। পিবিআই জানায়, আসামি হারিছ মিয়ার মরিচখালী বাজারে ভাতের হোটেলে কমর্চারী হিসেবে কাজ করত মতিউর রহমান।
মতিউর রহমান হোটেলের কমর্চারী হইলেও তাদের মধ্যে বন্ধুত্বর্পূণ সর্ম্পক ছিল। ৫ থেকে ৬ বছর পূর্বে মতি মিয়ার স্ত্রী মারা যায়।
এরপর হতে মতিউর দিনে হোটেলে কাজ করে রাতে আসামি হারিছ মিয়ার সাথেই তার হোটেল ঘরে ঘুমাতো। গত ফাল্গুন মাসের ১৩ তারিখে মতি মিয়া তার ছোট মেয়ের সংসারে ফার্ণিচার কিনে দেওয়ার কথা বলে হারিছের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা ধার নেয়।
হত্যাকাণ্ডের ৩ থেকে ৪ দিন আগে তার বড় মেয়ের জামাইকে বিদেশ পাঠানোর কথা বলে আবারও হারিছের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা ধার নেয়। মতিউর পঞ্চাশ হাজার টাকা নিয়া সিলেট যায় এবং সিলেট থেকে ফেরার পর ঘটনার দিন সকালে টাকা হারিয়ে ফেলেছে বলে হারিছকে জানিয়ে বাড়ীতে চলে যায়। হারিছ মিয়ার বিধবা বোন রেজিয়াকে মতিউর বিবাহের প্রতিশ্রুতি দেওয়া সত্বেও বিয়ে না করে অন্যত্র বিয়ে করে। এতে হারিছ চরমভাবে ক্ষুব্ধ হয় এবং তাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে।
ঘটনার দিন দুপুরে মতিউর মরিচখালী বাজারে এসে হারিছ মিয়ার সাথে বসে চা-পান খেয়ে তার শ্বশুর বাড়ি গাঙ্গাটিয়া চলে যায়। রাতে মতিউর মরিচখালী বাজারে আসামি হারিছ মিয়ার দোকানে আসলে তাকে পরিকল্পিতভাবে কোকের সাথে ঘুমের ঔষধ মিশিয়ে খাওয়ায় হারিছ। মতিউর ঘুমিয়ে গেলে রাত দুইটার দিকে ধারালো দা দিয়া নৃশংসভাবে কুপিয়ে দেহকে দ্বিখন্ডিত করে হত্যা করে।
পরে দ্বিখন্ডিত লাশের একটি অংশ সুলতান নগর ছলেমন্নেছার কবরের পাশে রেখে আসে এবং অপর অংশটি কাঁথা দিয়া মুড়িয়ে বস্তাবন্দী করে নদীতে ফেলে দেয়।
পিবিআই পুলিশ সুপার মোঃ শাহাদাত হোসেন (পিপিএম) জানান, এ ঘটনায় নিহত মতিউর রহমানের পুত্র রমজান আলী বাদী হয়ে করিমগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। গ্রেফতারকৃত আসামি হারিছ কিশোরগঞ্জের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাদ্দাম হোসেনের নিকট বৃহস্পতিবার (৯ জুন) ১৬৪ ধারায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে মর্মে জবানবন্দি প্রদান করে। বিজ্ঞ আদালত হারিছকে কারাগারে প্রেরণ করে।
ঢাকানিউজ২৪.কম / বিজয়কর রতন/কেএন
আপনার মতামত লিখুন: