নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নতুন ভবনের মর্গে মরদেহ আটকে রেখে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ অনুযায়ী, মর্গের ক্লিনার মো. খোকন মৃতের স্বজনদের কাছ থেকে দশ হাজার টাকা দাবি করছেন। এই অভিযোগ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মেডিকেল টিম ও মৃতদের স্বজনেরা।
গতকাল শুক্রবার (৯ আগস্ট) রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মাহিন সরকার এবং মেডিকেল টিমের সদস্য নাহিদা বুশরা অভিযোগ করেন, মর্গের ক্লিনার খোকন মৃতদের পরিবারের কাছ থেকে মৃত্যু সনদে 'পুলিশ কেস' উল্লেখ করে জনপ্রতি ১০ হাজার টাকা দাবি করেন। অভিযোগকারী স্বজনদের দাবি, ঘুষ না দিলে মর্গের ক্লিনার খোকন সংশ্লিষ্ট থানায় অনুমোদন নিয়ে আসার কথা বলে হয়রানি করেন। তবে, ক্লিনার খোকন এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
মৃতের আত্মীয় মো. ফারুক বলেন, 'গত বৃহস্পতিবার মিরপুরের বাসিন্দা শাহজালাল দেয়াল থেকে পড়ে মাথায় আঘাত পান। পরদিন রাতে ঢামেকের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃতের মরদেহ নিতে গেলে মর্গের ক্লিনার খোকন ১০ হাজার টাকা দাবি করেন। পরে এক চিকিৎসকের মাধ্যমে যোগাযোগ করলে তিনি আট হাজার টাকায় রাজি হন।'
আরেক ঘটনায়, গত ৫ আগস্ট যশোরে আন্দোলনের সময় একটি ভবনে আগুন দিলে সাকিব (১৭) নামে এক শিক্ষার্থী দগ্ধ হন এবং পরবর্তীতে ঢামেকের বার্ন ইউনিটে মারা যান। সাকিবের বাবা আলাউদ্দিনের অভিযোগ, মরদেহ হস্তান্তরের জন্য খোকন তার কাছেও ১০ হাজার টাকা দাবি করেন, কিন্তু তিনি তা দিতে অস্বীকৃতি জানান।
মরদেহের স্বজনেরা জানান, কোনো কারণ ছাড়াই মৃত্যু সনদে 'পুলিশ কেস' উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মাহিন সরকার জানান, তারা বিষয়টি হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আসাদুজ্জামানকে অবহিত করেন। পরিচালকের নির্দেশে সহকারী পরিচালক আব্দুর রহমান ঘটনাস্থলে আসেন এবং জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের অভিযোগ শুনছেন, তবে লিখিত অভিযোগ পাননি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে অভিযুক্ত খোকন ও মর্গের সর্দারকে আটক করে আনসারের হেফাজতে দেন। অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে হাসপাতালের বিভাগীয় নিয়ম এবং দেশের বিদ্যমান আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকানিউজ২৪.কম / জেডএস/সানি
আপনার মতামত লিখুন: