
সাকিব আহমেদ, মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি : মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মেহেদী হাসান ও তার স্ত্রী সহকারী শিক্ষিকা শুভ্রা রায়ের বিরুদ্ধে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র আবরার ফুয়াদ সামিউলের উপর শারিরীক এবং মানসিক নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, আন্ধারমানিক মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মেহেদী হাসান ও তার স্ত্রী সহকারী শিক্ষিকা শুভ্রা রায়ের বিরুদ্ধে গত ১১ সেপ্টেম্বর' ২২ ভুক্তভোগী ছাত্রের মা পাপিয়া সুলতানা ও ভুক্তভোগী ছাত্র আবরার ফুয়াদ সামিউল এবং ১২ সেপ্টেম্বর'২২ উক্ত বিদ্যালয়ের পরিচালক পরিষদের অভিভাবক সদস্য ইমদাদুল হক জেলা প্রশাসক (মানিকগঞ্জ), জেলা শিক্ষা অফিসার (মানিকগঞ্জ), উপজেলা নির্বাহী অফিসার (হরিরামপুর), উপজেলা শিক্ষা অফিসার ( হরিরামপুর) বরাবর সামিউরের উপর শারিরীক এবং মানসিক নির্যাতন কে কেন্দ্র করে লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়,আন্ধারমানিক মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও তার স্ত্রী সহকারী শিক্ষিকা শুভ্রা রায় বিভিন্ন সময়ে আবরার ফুয়াদ সামিউলের উপর শারিরীক এবং মানসিক নির্যাতন চালায়। ভুক্তভোগী সামিউল টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয়ে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকায় ক্লাস পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেনি। তাই সে পরবর্তী সময়ে পরিক্ষা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে প্রধান শিক্ষক বরাবর দরখাস্ত নিয়ে যায়। প্রধান শিক্ষক দরখাস্ত ছুড়ে ফেলে দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে।
অভিযোগ সূত্রে আরও জানা গেছে, ৭'ই সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে প্রধান শিক্ষক মেহেদী হাসান এবং তার স্ত্রী শুভ্রা রায় অযথা সামিউলকে গালিগালাজ করে। পরবর্তীতে সে কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি চলে আসে এবং তার অভিভাবকদের সব কিছু বলে। অভিভাবকেরা তাকে সান্ত্বনা দিয়ে পরের দিনও বিদ্যালয়ে পাঠায়। পরের দিনও প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষিকা সামিউলের সাথে একই রকম আচরণ করে ও শারিরীকভাবে নির্যাতন করে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে আন্ধারমানিক মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক মেহেদী হাসান বলেন, " এ অভিযোগ সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং ভিত্তিহীন আবরার ফুয়াদ সামিউল ছাত্রের মা পাপিয়া সুলতানা দড়িকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। সে আমাকে এখান থেকে সরিয়ে আমার স্কুলে আসার পায়তারা করছে। অভিযোগ করার দিন সে তার স্কুলে না গিয়ে আমার স্কুলে এসে আমার স্কুলের অন্যান্য ছাত্রীদের নির্যাতন করেছে এই ভিডিও ফুটেজ আমার কাছে আছে।
পাপিয়ার ছোট বোন আমার স্কুলে কর্মরত আছে আমি পাপিয়ার বোন কে সবার সামনে জিজ্ঞাসা করেছি, তোমরা যে আমাদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিছো আমি এবং আমার স্ত্রী কি তোমার ভাগ্নে সামিউল কে নির্যাতন করেছি? এর উত্তরে পাপিয়ার ছোট বোন আমাকে বলেছে না স্যার আপনারা কোন নির্যাতন করেননি। সর্বপরি, পাপিয়া আমাকে ফাসানোর জন্য এমন মিথ্যা এবং বানোয়াট অভিযোগ করেছে" ।
প্রধান শিক্ষকের স্ত্রী সহকারী শিক্ষিকা শুভ্রা রায় বলেন, "আমি কখনও কোন ছাত্র-ছাত্রী কে নির্যাতন করি না। এ গুলো সম্পূর্ণ বানোয়াট অভিযোগ। আমাদের কে ফাসানোর জন্য এমন অভিযোগ করা হয়েছে"।
এ বিষয়ে হরিরামপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মাইনুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করেছি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: