
ডেস্ক রিপোর্টার: একজন বাঙালি লেখক, ঔপন্যাসিক, ও গল্পকার। 'অপরাজেয় কথাশিল্পী' হিসেবে খ্যাতি তার। দক্ষিণ এশিয়ার বাংলা ভাষার জনপ্রিয় লেখক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। ১৮৭৬ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর পশ্চিম বঙ্গের হুগলি জেলার একটি ছোট গ্রাম দেবেন্দ্রপুরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। বাবা মতিলাল চট্টোপাধ্যায়ের কাছ থেকেই সাহিত্যে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন ছোট্ট শরৎ।
পল্লী সমাজ, চরিত্রহীন, দেবদাস, নিষ্কৃতি, দত্তা, শ্রীকান্ত, গৃহদাহ, শেষ প্রশ্ন এবং শেষের পরিচয় বিখ্যাত এসব উপন্যাস এসছে শরৎ'র কালির আচড়ে। উপন্যাসের পাশাপাশি নাটকও লিখেছেন তিনি। ষোড়শী, রমা, বিরাজ বউ ও বিজয়া নাটকগুলিও হৃদয়ে গেঁথে থাকার মতো। এই সাহিত্যাকর্মগুলি শুধু বইয়ের পাতাতেই সীমাবদ্ধ ছিল না। এ পর্যন্ত প্রায় ৫০টি চলচ্চিত্র তৈরী হয়েছে সেসব সাহিত্যকর্ম নিয়ে। তার মধ্যে 'দেবদাস' উপন্যাসটি বাংলা, হিন্দি এবং তেলুগু ভাষায় আট বার তৈরি হয়।
সহজ-সরল লেখনী আর গাড়ো অনুভূতির আড়ালে শরৎ তুলে ধরেছেন সমাজের নানা অসংগতি এবং অবহেলিত মানুষের কথা। শিশুকাল থেকেই তিনি দেখেছেন দারিদ্র্যের কালো রূপ। তাই তার লেখনীতে দরিদ্র মানুষের জীবন-সংগ্রাম সব সময়েই স্থান পেত। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে অপ্রতিদ্বন্দ্বী জনপ্রিয়তা ছিল তার। কেউ কেউ বলেন, রবিঠাকুরের থেকেও জনপ্রিয় ছিলেন তিনি।
শিক্ষাজীবন ছিল অনেক সংগ্রামের। টিউশন করে চালাতেন নিজের পড়ার খরচ। পরীক্ষার ফি জোগাড় করতে না-পারার জন্য এফ এ পরীক্ষায় বসতে পারেননি তিনি। পরে কলেজ জীবন শেষে নেমেছেন ভাগ্য অন্বেষণে। সে সময় কিছুদিনের জন্য সন্যাসী জীবনও কাটিয়েছেন এই লেখক। তবে সেখান থেকে ফিরেই মাসে ত্রিশ টাকা বেতনের একটি চাকরি পান। নানা সময়ে ছোট খাটো চাকরি আর লেখালেখির মধ্যেই কেটেছে তার জীবন।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯২৩ সালে জগত্তারিণী স্বর্ণপদক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৩৬ সালে 'ডিলিট' উপাধি পান তিনি । ১৯৩৮ সালে ১৬ জানুয়ারি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন এই মহান লেখক।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: