• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ; ৩০ মে, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

ইউপি নির্বাচনে অস্থির কেন্দুয়া আ'লীগের রাজনীতি


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২১ অক্টোবর, ২০২১ খ্রিস্টাব্দ, ১০:৫৬ এএম
ইউপি নির্বাচনে দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দকে মনোনয়ন দেয়া

মো. নজরুল ইসলাম, ব্যুরো প্রধান ময়মনসিংহ: আ'লীগের আদর্শিক রাজনীতি হচ্ছে প্রবীণ, ত্যাগী, দুঃসময়ের কান্ডারী নেত্রীবৃন্দকে মূল্যায়ন করে যুবসমাজের সাথে সমন্বয় সাধন করে রাজনৈতিক কর্মকান্ডকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।

কিন্তু বর্তমানে কেন্দুয়াতে আওয়ামী লীগের আদর্শিক রাজনীতি অনেকটা অনুপস্থিত। আসন্ন কেন্দুয়ার পার্শ্ববর্তী আটপাড়া উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ত্যাগী নেতাদের অবমূল্যায়ন করায় আওয়ামী লীগের তৃনমুল নেতা-কর্মী বিক্ষুব্ধ হয়েছে। গ্রুপিং রাজনীতির কারণে কেন্দুয়াতে দলের ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে অন্য জনপ্রিয় নেতাদের ইউপি নির্বাচনের মনোনয়ন দেয়ার জন্য দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ উঠে পড়ে লেগেছে।

আ'লীগের একাধিক নেতৃবৃন্দ জানান, নেতৃবৃন্দের প্রত্যাশা আটপাড়া উপজেলার মতো কেন্দুয়া উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বানিজ্য হবে না। কেন্দুয়ার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ইউনিয়নের প্রার্থীদের মূল্যায়ন পর্ব।

কেন্দুয়া ১৪নং মোজাফফরপুর ইউনিয়নে আ'লীগের সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য প্রার্থী হলে কেন্দুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান ১৪নং মোজাফফরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর চৌধুরী যিনি সাবেক এমএনএ হাদিস চৌধুরীর পুত্র। কিন্তু তাকে হেনস্তা করার জন্য একজন জনৈক কেন্দ্রীয় নেতার সহায়তায় হেনস্থা করা হচ্ছে। এছাড়া তারই চাচাতো ভাই মাহমুদ চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মোজাফফরপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে উৎসাহিত করা হচ্ছে যা একটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে অনেকে বলেছেন।

১১ নং চিরাং ইউনিয়নটি রাজনৈতিক ও ভৌগোলিক বিবেচনায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইউনিয়ন কেননা এই ইউনিয়নটি কেন্দুয়া পৌরসভাকে ঘিরে রেখেছে। এই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রার্থী হলেন সাবেক চেয়ারম্যান সালমা আক্তার, বর্তমান প্যানেল চেয়ারম্যান-২ নেত্রকোনা জেলা পরিষদ। কিন্তু তিনি আগামী কেন্দুয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী তাই তিনি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আর অংশগ্রহণ করবেন না বলে জানিয়েছেন। তার শূন্যতা পূরন করা খুবই কঠিন। এই ইউনিয়নে বর্তমানে তিনজন ব্যক্তি আ'লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন। এরমধ্যে সামসু মহাজন, সভাপতি চিরাং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ অন্যতম।

তিনি নেত্রকোনা -৩ আসনের এমপি অসীম কুমার উকিলের সহধর্মিনী অপু উকিল, সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী যুব মহিলালীগ এর আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত।  এরপর আছেন এনামুল কবীর খান, সাধারণ সম্পাদক চিরাং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ। তিনি নেত্রকোনা-৩ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী সামসুল কবির খানের ভাগ্নে। তিনি বর্তমান ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের কাছে  তেমন গ্রহনযোগ্য নন। তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবে আছেন মোস্তাফিজুর রহমান বিপুল যিনি একাধারে সাংগঠনিক সম্পাদক, কেন্দুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ এবং আহবায়ক কেন্দুয়া উপজেলা যুবলীগ।

৭নং মাস্কা ইউনিয়নে  গত ২০/৯/২০২১ ইং তারিখে ৭নং মাস্কা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে মাস্কা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের তৃণমূল আওয়ামী কর্মীদের ভোটে প্রার্থী বাছাই অনুষ্ঠানে গনতন্ত্রকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কেন্দুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোর পূর্বক একজনের নাম পাঠিয়েছেন। তিনি হচ্ছেন কেন্দুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল কাদির ভূঞা যিনি কেন্দুয়া উপজেলা আওয়ামী সভাপতি নির্বাচিত হয়ে পূর্নাঙ্গ কমিটিতে নিজের মেয়েকে (সম্পূর্ন অরাজনৈতিক ব্যক্তি) মহিলা বিষয়ক সম্পাদক পদে বসিয়ে নিজের গ্রহনযোগ্যতা অনেকটা হারিয়েছেন।

তিনি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তেমন জনপ্রিয় প্রার্থী নন। আর এতে মাস্কা ইউনিয়নের সর্বাধিক জনপ্রিয় প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক কেন্দুয়া উপজেলা ছাত্রলীগ আব্দুস সালাম বাঙালীর সমর্থকেরা প্রতিবাদ মিছিল করে। এরপর প্রার্থীর লিস্টে পরবর্তীতে তিনজনের নাম পাঠানো হয়েছে বলে গুঞ্জন রয়েছে। উক্ত ইউনিয়নের আব্দুস সালাম বাঙালীকে মনোনয়ন দেয়া না হলে আওয়ামী লীগের ভরাডুবির আশংকা রয়েছে।

১০ নং কান্দিউড়া ইউনিয়নে হেভিওয়েট প্রার্থীর সংখ্যা বেশি। তবে মূলত লড়াই জমবে চারজন প্রার্থীর মধ্যে, এর মধ্যে তিনজন মনোনয়ন চাইবেন। আনোয়ারুল হক কনক, ১০ নং কান্দিউড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও সাংগঠনিক সম্পাদক কেন্দুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ। তিনি এই ইউনিয়নের একজন জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য প্রার্থী। জয়ী হবার সামর্থ্য তার আছে। তাছাড়া তিনি কেন্দুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের আত্মীয়।

আবুল কালাম আজাদ ১০ নং কান্দিউড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং সাবেক চেয়ারম্যান ১০নং কান্দিউড়া ইউনিয়ন । তিনি এই ইউনিয়নের একজন অ জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্ব এবং তিনিও কেন্দুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের আত্মীয়। নির্বাচনে জয়ী হওয়ার ক্ষেত্রে তিনি অনেকটা  গ্রহণযোগ্য।

তাপস ব্যানার্জী সাধারণ সম্পাদক ১০নং কান্দিউড়া ইউনিয়ন আওয়ামিলীগ ও জেলা যুবলীগের সদস্য। তিনি মূলত তৃণমূল রাজনীতির সাথে কোনদিনই জড়িত ছিলেন না, তার প্রধান যোগ্যতা হলো তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্যের সর্বাধিক আস্থাশীল ব্যক্তি হলেও জনগনের কাছে তেমন  গ্রহণযোগ্যতা নেই। ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হবার পর তিনি বর্তমান চেয়ারম্যানকে (বিএনপি সমর্থিত) জিম্মি করে সব কাজই নিয়ন্ত্রণ করছেন এতে জনগণও তার প্রতি ক্ষিপ্ত। তাই আবুল কালাম আজাদ মনোনয়ন না পেলে নৌকার বিজয় কষ্টসাধ্য হতে পারে।

৫নং গন্ডা ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যানের বিভিন্ন অপকর্মের জন্য এই ইউনিয়নে প্রার্থীর সংখ্যা অনেক বেশী। সবাই মূলত বর্তমান চেয়ারম্যান বিরোধী। সাজেদুল ইসলাম সঞ্জু, বর্তমান চেয়ারম্যান ও সভাপতি গন্ডা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ এবং স্থানীয় এমপির আস্থাভাজন ব্যক্তি। তিনি  নানা কর্মকান্ডের কারণে তার বিরুদ্ধে নানা সমালোচনা রয়েছে।

গত ২৩.১.২১ তারিখে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সম্ভাব্য  চেয়ারম্যান প্রার্থীদের হুমকি প্রদান করেন যার প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।  সম্প্রতি তার গ্রামের একজন সিনিয়র নাগরিক (ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি) কে মিথ্যা হত্যা মামলায় জড়িত করেছেন বলে শোনা যায়। এর সাথে সাথে তিনি ইউনিয়নের ত্যাগী ও প্রবীন আওয়ামী নেতাদের সরিয়ে বিএনপির মনোভাবাপন্ন ব্যক্তিদের নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছেন বলে নাম নেতৃবৃন্দ জানান।  তিনি মনোনয়ন পেলে বাকী সব প্রার্থী মিলে একজন বিদ্রোহী প্রার্থী দিবেন বলে শুনা যাচ্ছে।

ঢাকানিউজ২৪.কম / মো. নজরুল ইসলাম

আরো পড়ুন

Something went wrong!