• ঢাকা
  • শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২০ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

করফাঁকি, অর্থ পাচার ও জামাতা প্রশ্নে মন্তব্য করেননি ড. কামাল


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ০৩ নভেম্বর, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, ০৪:২৩ পিএম
করফাঁকি, অর্থ পাচার ও জামাতা প্রশ্নে বিরক্তি প্রকাশ
গণফোরামের একাংশের সভাপতি ও বিশিষ্ট আইনজীবী ড. কামাল হোসেন

ডেস্ক রিপোর্টার : গণফোরামের একাংশের সভাপতি ও বিশিষ্ট আইনজীবী ড. কামাল হোসেন করফাঁকি, অর্থ পাচার ও নিজ জামাতা ডেভিড বার্গম্যানের মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থানের বিষয়ে প্রশ্নে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন।

বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের আয়োজনে ৫০তম সংবিধান দিবস অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের সম্মুখীন হন তিনি।

এ সময় করফাঁকি ও অর্থ পাচার নিয়ে প্রশ্ন করলে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি ড. কামাল।

তিনি বলেন, এ বিষয়ে কোনো কথা বলব না।

জামাতা ডেভিড বার্গম্যানের মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে লেখালিখি এবং মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অবস্থান প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে বিরক্তি প্রকাশ করে ড. কামাল হোসেন বলেন, 'আমি প্রশ্ন বুঝি না।'

বর্তমান সরকারের অধীন নির্বাচনে যাওয়া প্রশ্নে তিনি বলেন, এটা অবস্থার ওপর নির্ভর করবে, পার্টির সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে।

পরে ড. কামাল সাংবাদিকদের এড়িয়ে দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন।

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ১৩১ নম্বর গ্যালারিতে সংবিধান দিবস পালন উপলক্ষে  আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন ড. কামাল হোসেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তিনি।

পাহাড়ে অস্থিরতায় সংবিধানের কোনো সংকট রয়েছে কি-না, এক শিক্ষার্থীর এমন প্রশ্নে ড. কামাল হোসেন বলেন, 'এটা আসলে সাংবিধানিক সংকট নয়, বরং রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছার অভাব।’

ড. কামাল হোসেন ও তার মেয়ে কর ফাঁকির মামলা নিয়ে নতুন করে হোঁচট খেতে যাচ্ছেন। সম্প্রতি তাদের বিদেশে আইনি সেবার আয় নিয়ে তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে দেখা যায়, বিদেশে কাজ করে পাওয়া ২ লাখ ১৬ হাজার ৭১৮ মার্কিন ডলার আয় দেখানো হয়নি তার আয়কর রিটার্ন প্রতিবেদনে বা হাইকোর্টে দাখিল করা প্রতিবেদনে।

ড. কামালের ২০১৯ সালে লাভ করা আন্তর্জাতিক সালিশবিষয়ক অ্যাওয়ার্ডের তথ্য থেকে এই অপ্রকাশিত আয়ের বিষয়টি সামনে আসে।

ঢাকা কর অঞ্চল ৮-এর একজন করদাতা ড. কামাল হোসেন। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে প্রখ্যাত এ আইনজীবীর আয়ের অঙ্ক দাঁড়ায় ২০ কোটি ১১ লাখ টাকায়। অথচ নিজের আয়কর রিটার্নে ১৯ কোটিই কম দেখিয়ে মাত্র ১ কোটি ৪ লাখ ৩ হাজার ৪৯৫ টাকা আয়কর রিটার্ন হিসেবে দাখিল করেন। সম্পদের তুলনায় আয়কর বিবরণীর এত বিশাল ফারাক রাজস্ব আদায়কারী সংস্থা এনবিআরের কাছে প্রশ্নের জন্ম দেয়।

এনবিআরের হিসাব অনুযায়ী ড. কামাল হোসেনের সম্পদ ও আয়ের বিপরীতে অন্ততপক্ষে করের অঙ্ক হওয়ার কথা ৬ কোটি ৯ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। সেই সঙ্গে আগের অপরিশোধিত করের জন্য বিলম্ব মাশুলসহ আরও ৮৭ লাখ ৩৫ হাজার টাকা।

রাজস্ব আদায়কারী সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, বিভিন্ন করবর্ষে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় দুটি, সিটি সেন্টারে দুটি; যার একটি ফরেন কারেন্সি অ্যাকাউন্ট এবং আইএফআইসি ব্যাংকের একটিসহ মোট পাঁচটি অ্যাকাউন্টে জমা টাকার ওপর কর পরিশোধ করলেও স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের মতিঝিল শাখায়  ড. কামাল হোসেন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস নামে থাকা অ্যাকাউন্টটির কথা আয়কর বিবরণীতেই গোপন করেছেন। অথচ অ্যাকাউন্টটিতে ২০১২ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত জমা হয়েছে ৫৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা। শুধু ২০১৭ সালে এক বছরে জমা হয়েছে ১১ কোটি ১২ লাখ টাকা। 'ল ফার্মে' ৫০ শতাংশ শেয়ারের মালিক ড. কামাল এবং ২০ শতাংশ তার মেয়ের।

এমন অবস্থায় এনবিআরের পক্ষ থেকে ড. কামাল হোসেনকে আয়কর পরিশোধের জন্য চিঠি দেয়া হয়। রাজস্ব বোর্ডের ডেপুটি কমিশনারও আদেশ দেন কর পরিশোধের। তবে আয়করের টাকা না দিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে উল্টো সংশ্লিষ্ট যুগ্ম কমিশনারের কাছে আপিল করেন ড. কামাল হোসেন।

২০২০ সালের ২৫ জুন খারিজ হয়ে যায় ড. কামাল হোসেনের সেই আপিল। জানানো হয়, আয়কর পরিশোধ করতেই হবে তাকে। কিন্তু এবারও নারাজ ড. কামাল। কর আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল করেন যুগ্ম কমিশনারের আদেশের বিরুদ্ধে। সবশেষ ট্রাইব্যুনালও ড. কামালকে কর পরিশোধ করতে হবে বলে সাফ জানায়। এরপরই কর পরিশোধের বদলে ট্রাইব্যুনালের বিরুদ্ধেই হাইকোর্টে রিট করেন জ্যেষ্ঠ এ আইনজীবী।

এর আগে ২০১৮ সালের ১৯ নভেম্বর ড. কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে আয়কর ফাঁকির অভিযোগ আমলে নিয়ে তা খতিয়ে দেখতে এনবিআরকে চিঠি দেয় দুর্নীতি দমন কমিশন।

চিঠিতে দুদক জানায়, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে অ্যাকাউন্টের অর্থ আয়কর নথিতে দেখাননি ড. কামাল। গত ৯ ডিসেম্বর সংবাদ সম্মেলন করে গণমাধ্যমকর্মীদের বিষয়টি জানান এনবিআর চেয়ারম্যান।

গত ২১ জুন ফাঁকি দেয়া করের মধ্যে উচ্চ আদালতের নির্দেশে ৮৩ লাখ টাকা জমা দিতে বাধ্য হন ড. কামাল। তার আয়কর ফাঁকি দেয়ার মামলাটি বর্তমানে হাইকোর্টে শুনানির অপেক্ষায়। এরইমধ্যে কর গোয়েন্দাদের হাতে এসেছে সিনিয়র এই আইনজীবীর ২ লাখ ১৬ হাজার ৭১৮ মার্কিন ডলারের নতুন তথ্য। যা কিনা তার আয়কর রিটার্ন  বা হাইকোর্ট নথিতে উল্লেখ নেই। অথচ ইউনাইটেড রিপাবলিক অব তানজানিয়া ও স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক হংকংয়ের মধ্যকার সালিশ নিষ্পত্তিতে বিপুল এই অর্থ আয় করেছেন ড. কামাল হোসেন।

এর আগে সরকারের কাছ থেকে লিজ নেয়া প্লটের ওপর নির্মিত বাড়ি শর্ত ভেঙে ভাড়া দেন তার দুই মেয়ে, যা তদন্ত করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)।

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image