
মহিনুল ইসলাম সুজন, নীলফামারী প্রতিনিধি: নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় জাহানারা বেগম (৭০) হত্যা মামলার চার বছর পর রহস্য উন্মোচন করেছে রংপুর পিবিআই পুলিশ।এ ঘটনায় হত্যার শিকার মায়ের ঘাতক ছেলে আব্দুর রহিমকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পরে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়।এর আগে ২০১৯ সালের ২০ এপ্রিল তার মেয়ে নাজমা বেগম বাদি হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। আদালত ও পিবিআই পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৮/০৮/২০১৮ ইং তারিখে নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার রুপাহারা গ্রামের মৃত আতাউর রহমান আতা মিয়ার স্ত্রী জাহানারা বেগমকে ঘরের মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পান তার মেয়ে নাজমা বেগম। পরে তিনি প্রথমে তাকে ডিমলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরবর্তীতে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল রংপুরে ভর্তি করান। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৪/০৮/২০১৮ইং তারিখ জাহানারা বেগম মৃত্যুবরন করেন। প্রথমে একটি অপমৃত্যু মামলা এবং পরবর্তীকে হত্যা মামলা রুজু হয়। পুলিশ হেড কোয়ার্টারসের নির্দেশে মামলাটি পিবিআই রংপুরে হস্তান্তর করা হয়।পিবিআই হেড কোয়ার্টার্সের নির্দেশে পুলিশ পরিদর্শক যতীন্দ্রনাথ শর্মা, পিবিআই রংপুর মামলাটি তদন্ত শুরু করেন।
মামলাটি তদন্তকালে পিবিআই পুলিশ জানতে পারে জাহানারা বেগম(৭০) তার নিজ নামীয় ৩৭ শতক জমির মধ্যে তাকে ভরন পোষন দেয়ার শর্তে ১৭ শতক জমি ছেলে তারা মিয়া এবং ২০ শতক জমি আঃ রহিমকে লিখে দেন। কিন্তু আঃ রহিম মায়ের কাছ থেকে ভরণপোষনের কথা বলে কৌশলে জমি লিখে নিলেও মাকে ভরণপোষন দিতেন না। এ নিয়ে মা জাহানারা বেগম ও ছেলে আঃ রহিমের মধ্যে প্রায় ঝগড়া লেগে থাকত।
ঘটনার দিন ১৮/০৮/২০১৮ তারিখ রাতে মা জাহানারা বেগম জানতে পারেন যে, তার দেওয়া ২০ শতক জমি আঃ রহিম বিক্রি করবেন।এই নিয়ে মা জাহানারা বেগম আঃ রহিমকে জমি বিক্রি করতে নিষেধ করিলে মা ছেলের মধ্যে তর্ক বিতর্ক শুরু হয়। তর্ক বিতর্কের মধ্যে আঃ রহিম পাশে থাকা কাঠের ফালি দিয়ে জাহানারা বেগমের মাথায় সজোরে আঘাত করেন।জাহানারা বেগমের মৃত্যুর পর আঃ রহিম পলাতক থাকলে হত্যার রহস্য উন্মোচনে পুলিশকে বেগ পেতে হয়।অবশেষে হত্যার ০৪ বছর পর গত সোমবার অতিরিক্ত মহা-পুলিশ পরিদর্শক ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) প্রধান বনজ কুমার মজুমদারের নির্দেশনায় রংপুর পিবিআই পুলিশের পুলিশ সুপার এবিএম জাকির হোসেন (পিপিএম) পিবিআই রংপুরের তত্ত্বাবধানে তথ্য প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা যতীন্দ্রনাথ শর্মার নেতৃত্বে পিবিআই রংপুরের একটি আভিযানিক দল আসামী আব্দুর রহিমকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আব্দুর রহিম মাকে হত্যার কথা স্বীকার করেন।আব্দুর রহিমকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
পিবিআই রংপুরের পুলিশ সুপার এবিএম জাকির হোসেন বলেন,পিবিআই সত্যকে উদঘাটনে সর্বদা অবিচল। ছেলে কৃর্তক মাকে হত্যার মতো ন্যাক্কার জনক ঘটনার সত্য উদঘাটন করতে পেরেছি।দ্রুত পুলিশ প্রতিবেদন আদালতে প্রেরণ করা হবে।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: