
জলঢাকা, নীলফামারী প্রতিনিধি: দুদিন আগেও তিস্তা পারের মানুষ পানির জন্য করছিল হা-হা-কার। তিস্তার নদী গর্ভে ছিল ধুধু বালু চর এখানে আসলে মনে এযেন মধ্যপ্রচ্যর কোনো এক মরুভূমি। নদীতে পানি কম থাকায় আশঙ্কাজনক হারে কমে যাওয়ায় রংপুর অঞ্চলের ৪৯ হাজার হেক্টর জমি সেচ প্রকল্পের বাইরে রয়েছে। চলিত মৌসুমে দুদিন আগে পানি ছিল ১.৫-৩ হাজার কিউসেক পানি। অথচ শুষ্ক মৌসুমে বোরো সেচ প্রকল্পে ২০-২৫ হাজার কিউসেক পানির প্রয়োজন।
আকাশে জমলো কালো, মেঘ আসল পানি, সেই পানিতে ভাসছে তিস্তার চরে বুনানো সবুজ, সোনালী স্বপ্ন। ভারত একতরফা ভাবে দীর্ঘ ৫ মাস পানি নিয়ন্ত্রণ করার পরে হঠাৎ গজলডোবার পানি ছেড়ে দেওয়ায় বাংলাদেশ অংশে নদী অঞ্চলের নিম্নাঞ্চলের তলিয়ে যাচ্ছে পানিতে।সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ডিমলা উপজেলার তিস্তা ব্যারেজের উজানে কালিগঞ্জ, জুয়ারচর, কিছামত ছাতনাই, টাপুরচর, চরখড়িবাড়ী ও পূর্ব খড়িবাড়ীসহ প্রায় ১৫টি চরে গতকাল থেকে হঠাৎ পানি বৃদ্ধির ফলে নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করেছে। পানি আসার কারণে তলিয়ে গেছে ক্ষেতের গম, ভূট্টা, বাদাম, তিল, তিষিসহ অন্যান্য ফসল। ভাঙছে নদীর দুই তীর, ফলে আধাপাকা, অপরিপূর্ণ গম, পেঁয়াজ, তিল, তিষী ও ভূট্টাসহ রবি শস্য তুলে আনতে হচ্ছে কৃষককে।
মারুফা নামে এক নারী কৃষক জানান, কয়েক দিন আগে পানি লাগে তখন নদীতে পানি নাই। কয়েক দিন পরেই পেঁয়াজ তুলবো এখন দিলো পানি। একহাটু পানির তল থেকে পেঁয়াজ তুলতে হচ্ছে। বেশি ভাগ জমির পেঁয়াজ পানির তলে, যেগুলো হাতের নাগালে পাইলাম সেগুলো তুলে আনলাম। গম গুলো আধাপাকা কাটিলাম, এতে এবারে আবাদে লস,বীজের দামে উঠবে না।
গোলাম রব্বানী নামে এক কৃষক জানান, আড়াই বিঘা জমিতে পেঁয়াজ লাগিয়েছি তার মধ্যে ৬শতক জমির আবাদ তুলতে পেয়েছি। অপরিপূর্ণ গম কাটলাম, এবার অপরপিক্ক পেঁয়াজ তোলতে হচ্ছে। ২.৫ কেজি পেঁয়াজের বীজ নিছে ৯ হাজার টাকা, সার, পানি, শ্রম তো আছেই সবেই লস। এবার চাষাবাদ করে সেগুলো গোচ্ছা যাবে।
খতেজা বেগম নামের আরেক নারী কৃষক জানান, য্যাং করি পানি আইসেছে না তুলি কি করং, সবলায় তো গোচ্ছা গেইছে, এগিলা নিগি তো খাইবার পাইম, না হইলে তো সগেই যাইবে নদীত। কি করিম কয়দিন পানি নাই এলা পাই আইসেছে।টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ময়নুল হক জানান, গত কাল থেকে নদী পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, ফলে নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করছে। এতে কৃষকের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। এবিষয়ে কৃষি অধিদপ্তর ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে কথা বলেছি।উপজেলা কৃষি অফিসার সেকেন্দার আলীকে একাধিক বার মুঠোফোনে ফোন দিলে তিনি ফোন ধরেনি।
এবিষয়ে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা উদ দৌল্লা আশ্বাস্থ করেছেন যে প্রকৃতিক বিপর্যয় না ঘটলে দুই একদিনে মধ্যে পানি নেমে যাবে।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: