
মশিউর রহমান সেলিম, লাকসাম, কুমিল্লা : কুমিল্লার লাকসাম, বরুড়া, লালমাই, নাঙ্গলকোট ও মনোহরগঞ্জ উপজেলা বন বিভাগ কর্তৃপক্ষের পকেট বানিজ্য ও নানা ভ্রান্তনীতির শিকার হয়ে গত ১০ বছরে বিভিন্ন সড়কে কাটা পড়েছে পরিবেশ বান্ধব হরেক রকম গাছ।
স্থানীয় একাদিক সূত্র জানায়, ওই দপ্তর কর্মকর্তাদের দায়িত্বহীনতা আর অবহেলাসহ নানা ভাবে মরে দাঁড়িয়ে থাকা গাছগুলো এবং গাছের গোড়াগুলো দেখলে বুঝা যায় ওই বিভাগের অস্তিত্ব আজ বড় ঝুঁকিতে পড়ে নিজেরাই যেন নানা রোগে আক্রান্ত। তবে এলাকার পরিবেশের পরম বন্ধু গাছগুলোকে হত্যার দায় নিতে নারাজ সংশ্লিষ্টরা। ওদের কর্মকান্ডে দায়িত্বহীনতায় যেন নোংরা রাজনীতির চেয়ে আরো নোংরা। ওই বিভাগের নানা সংকট উত্তোরনের চাইতে দায়িত্বে থাকা ওইসব কর্মকর্তারা বেশী ব্যাস্ত সময় পার করছেন অপ্রাশংগিক কাজে। বিশেষ করে গত ২ বছর জেলা দক্ষিনাঞ্চলের বন বিভাগের দায়িত্বে থাকা জোনাল মোয়াজ্জেম হোসেন শিপন যোগদানের পর থেকে এ অঞ্চলের বন বিভাগ অস্তিত্ব হারাতে বসেছে।
জেলার অপর একটি সূত্র জানায়, দক্ষিনাঞ্চলের ৩টি পৌর শহর ছাড়াও ৫টি উপজেলার সড়কগুলোতে পরিবেশের উন্নয়ন ও সামাজিক শোভা বর্ধনে ওইসব হরেক রকমের গাছ লাগানো হলেও স্থানীয় বন বিভাগ কর্তৃপক্ষের উদাসিনতা ও দায়িত্বহীনতায় অসংখ্য সমস্যা বিদ্যমান। পরিকল্পনাহীন সংস্কার কার্যক্রমের কারনে অনেকাংশে গাছগুলো মরছে। পাশাপাশি অসংখ্য জীবিত গাছগুলো পড়ছে মারাত্মক ঝুঁকিতে এমনকি এলাকার পরিবেশ রক্ষায় বৃক্ষ সৃজন যেন আজ মহাসংকটে।
এ ছাড়া এ অঞ্চলের হাটবাজারগুলোতে অসংখ্য করাত কল,ফার্নিচার শো-রুম ও কারখানা যত্রতত্র ভাবে গড়ে উঠে দাবড়িয়ে বেড়াচ্ছে। সরকারি রাজস্ব আয়ের স্বার্থে কারো যেন মাথা ব্যাথা নেই। বিভিন্ন সড়কে কারনে-অকারনে কাটা গাছ ও মরে যাওয়া গাছগুলো মাঝে মধ্যে উদ্ধার করলেও রাজস্বখাত কিন্তু অনুপস্থিত। সরকারি নার্সারীতে আজ জ্বলছে লাল বাতি। কারনে অকারনে গোপন টেন্ডারের মাধ্যমে বন বিভাগের গাছগুলো গোপনে বিক্রি করায় এ অঞ্চল থেকে হারিয়ে যাচ্ছে বন বিভাগের অস্তিত্ব। এছাড়া ওই সড়কগুলোতে পাহারাদার-রক্ষনাবেক্ষন কমিটির নামে সম্মানি ভাতা এবং চারা-গাছ-গাছড়া বিক্রির টাকা নিয়েও নাটকীয় বানিজ্যে অভিযোগ উঠেছে।
সূত্রগুলো আরও জানায়, লাকসাম-মুদাফরগঞ্জ সড়কের পৌরসভার মিশ্রি এলাকা, উপজেলার কান্দিরপাড় ইউনিয়নের অশ্বতলা, চুনাতি, মনোহরপুর, চাঁনগাঁও, লাকসাম-মনোহরগঞ্জ সড়ক, লাকসাম সোনাইমুড়ি সড়ক, লাকসাম নাঙ্গলকোট সড়ক, লাকসাম চৌদ্দগ্রাম সড়ক, রাজাপুর- বাংলাইশ সড়ক, চিতোষী-বেরনাইয়া সড়ক, নাঙ্গলকোটের দৌলখাঁড় সড়ক, বাঙ্গড্ডা-মাহিনীসড়ক, রায়কোট উত্তর থেকে ঢালুয়া সড়ক, মিয়ারবাজার-ঢালুয়া সড়ক, নাঙ্গলকোট-মক্রবপুর সড়ক, কান্দিরপাড় ইউপির নোয়াপাড়া বাজারসহ উপজেলাগুলোর বিভিন্ন এলাকায় সড়কের দু’পাশে শতশত বিভিন্ন ধরনের গাছ মূমূর্ষ অবস্থায় কঙ্কালের মতো দাঁড়িয়ে রয়েছে। এগুলোর কোনটিতে ঘুণে ধরেছে, আর কোনটিতে বাসা বেধেছে কাঠ পোকায়। ওই মরা গাছগুলো ভেঙ্গে পড়ে যে কোন মুহূর্তে বড়ধরনের দূর্ঘটনার শংকা জনমনে।বিশেষ করে গোপন টেন্ডারের মাধ্যমে গাছগুলো বিক্রি করায় গাছের গোড়াগুলো স্বাক্ষ্য দিচ্ছে বন বিভাগের নানান কীর্তি।
এ ব্যাপারে জেলা-উপজেলা বন বিভাগের একাধিক কর্মকর্তার মুঠোফোনে বার বার চেষ্টা করেও কোন বক্তব্য দেয়া সম্ভব হয়নি।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: