বিশেষ প্রতিবেদক: বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে ১২৬২ জন শহীদ পুলিশ সদস্যের তালিকা স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিল পত্রে উল্লেখ পাওয়া যায়। স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশেও আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ, সন্ত্রাস দমন, মাদক অভিযান সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পুলিশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। পুলিশের কতিপয় ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তার দলীয়করণের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের কাছে পুলিশের ভাব-মূর্তি ব্যপক ভাবে ক্ষুন্ন হয়েছে। যার ফলে গত ০৫/০৮/২০২৪ খ্রিঃ তারিখ গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করার পর থেকে সারা দেশের পুলিশ সদস্যদের উপর এবং পুলিশের প্রতিষ্ঠান সমূহের উপর নির্বিচারে হামলা চালানো হয়েছে। এতে অসংখ্য পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছে এবং প্রায় ৪৫০ টি থানা ও ৭০ টির মত পুলিশ স্থাপনায় অগ্নি সংযোগ, ভাংচুর, লুটপাট চালানো হয়েছে। এমত পরিস্থিতিতে পুলিশ সদস্যদের নিরাপত্তার স্বার্থে বাংলাদেশ পুলিশের "অধস্থন কর্মচারী সংগঠন" দেশব্যাপী অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি ঘোষনা করছে।
পুলিশকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করিয়া আপনারা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলেন। অথচ আমাদের কথা একবারও ভাবলেন না। আপনাদের বিবেকহীন সিদ্ধান্তের জন্য গোটা পুলিশ বাহিনী আজ জনগণের কাছে ভিলেনে পরিণত হয়েছে।
আপনাদের কথার বাহিরে গেলে চাকরি খেয়ে ফেলতেন, বদলি করে দিতেন.... কত কি!!!
কে আগে ডিআইজি হবেন, কে আগে আইজিপি হবেন, সরকারকে খুশি করার জন্য পুরো পুলিশ বাহিনীকে গোলাম বানিয়ে রেখেছিলেন।
বিশ্বাস করেন, আমরা যারা জুনিয়র পুলিশ অফিসার আমাদের আসলে করার কিছু নেই। আমরা তো চাকর। একবার যে হাতি সার্কাসে পোষ মানে, সে হাতি তার স্বাধীনতা হারিয়ে ফেলে। তার কাজ শুধু খেলা দেখানো।
আমি জানি, পুলিশের উপর আপনাদের অনেক ক্ষোভ, যদি পারেন সেই ক্ষোভ হারুন/ বিপ্লব/ বেনজিরদের উপর খাটান। দয়া করে পুলিশের জুনিয়র কর্মকর্তাদের উপর আপনাদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটাবেন না।
ঘোষনাক্রমে অধস্থন কর্মচারী সংগঠন,বাংলাদেশ পুলিশ।এছাড়াও আরও বিভিন্ন পুলিশের সদস্যরা ফেসবুক পোস্টে নিচের দাবি সমূহ পেশ করেছেন।
১০ দফা দাবি সমূহ --
১: ব্রিটিশ আমলের পিআরবি দিয়ে পুলিশ চালানো যাবে না। ২০২৪ সালে সময় উপযোগী বাংলাদেশ পুলিশ প্রবিধান করতে হবে
২: অবৈধ আদেশ অমান্য করলে যেনো উর্ধ্বতন ক্ষতি করতে না পারে, মামলা নিয়ে এসপি অফিস, সার্কেল অফিসের হয়রানি বন্ধ করা সহ পিআরবি সংস্কার।
৩: বিভিন্ন বিল যেমন পিডি বিল, টিএ বিল, নির্বাচন বিল, সোর্স মানি, তদন্ত ব্যয় বিল ইত্যাদি বিল যথাযথভাবে বুঝিয়ে দেওয়া।
৪: আন্তর্জাতিক শ্রম আইন অনুযায়ী কর্মঘণ্টা ৮ ঘন্টা চাই। আট ঘন্টার অতিরিক্ত প্রতিটি মিনিটের জন্য ওভারটাইম বেতনের সাথে যোগ করতে হবে। ছুটির দিন যেমন শুক্র, শনি, ঈদ, পুজা আমরা ছুটি ভোগ করতে পারি না তাই এই দিনগুলো পার্ট টাইম বিবেচনা করে অতিরিক্ত বেতন যোগ করা।
অথবা অন্যান্য সরকারি চাকরিজীবীদের মতো ছুটির দিনগুলো হিসাব করে তাদের সাথে না হলেও পরে হিসাব করে সেই অনুপাতে ছুটি দিতে হবে।
৫: গ্রেড অনুযায়ী rank badge সমন্বয় করা, উন্নত রেশন।
৬: নিয়ম অনুযায়ী বিসিএস ক্যাডারের নিয়োগ ও ইন্সপেক্টরের প্রমোশনের সংখ্যার অনুপাত সঠিক রাখা।
৭: কনস্টেবল থেকে ইন্সপেক্টর পর্যন্ত নিয়োগ বদলি পদোন্নতি পানিশমেন্ট সবগুলো পুলিশের ঊর্ধ্বে থানা কর্তৃপক্ষের হাতে থাকা চলবে না তৃতীয় কোন নিরপেক্ষ রাজনৈতিক প্রভাব মুক্ত কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে করতে হবে। ৮: কোন সদস্যকে অহেতুক দুই বছরের আগে কোন স্থান থেকে বদলি করে হয়রানি করা যাবে না।
৯: পুলিশ সদস্যের বদলির আবেদন ফরওয়ার্ড ছুটির আবেদন এসপি বা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মর্জির অনুযায়ী না হয়ে নির্দিষ্ট নীতিমালা অনুযায়ী হতে হবে।
১০: মামলা তদন্তের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক তদবির থেকে মুক্ত করতে হবে এবং অহেতুক পুলিশকে রাজনৈতিক ডিউটিতে এনগেজ না করে পুলিশকে মামলা তদন্ত করার জন্য যথেষ্ট সুযোগ দিতে হবে।
ঢাকানিউজ২৪.কম / এইচ/জেড এস
আপনার মতামত লিখুন: