
জহিরুল ইসলাম সানি:
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের পরিচ্ছন্নতা-কর্মী পদে লিখিত পরীক্ষার ফলাফল বাতিল, বাস্তব অভিজ্ঞতার নিরীক্ষে মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে এবং জাত-হরিজন সনদপ্তর যাচাই-বাছাই করে ৮০% কোটা নিশ্চিত করে নিয়োগ প্রদানের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (০৭ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনে এ দাবি তোলে 'বাংলাদেশ হরিজন ঐক্য পরিষদ'।
এ সময় সংগঠনের মহাসচিব নির্মল চন্দ্র দাস বলেন, আমরা এ দেশের নাগরিক হয়েও নাগরিক সম-অধিকার থেকে বঞ্চিত। বাংলাদেশের প্রায় ১৫ লক্ষ হরিজন জনগোষ্ঠীর বাস। বংশ পরম্পরায় এ পেশার কাজে যুক্ত থাকার কারণে আজ প্রতিটি জায়গায় তাদের প্রতি বৈষম্য করা হয়। এই পেশার কাজ এতটা গুরুত্বপূর্ণ যে, এই মানুষগুলো না থাকলে পরিবেশ, স্বাস্থ্য ও জীবন যাত্রা অনেকটাই অচল হয়ে পড়তো। নাগরিক সভ্যতার শুরু থেকে নগরের সূচিতা আনার পবিত্র দায়িত্ব আমরাই পালন করছি। অথচ বেঁচে থাকার জন্য ন্যূনতম অধিকার থেকে আমরাই বঞ্চিত।
তিনি বলেন, কৃতজ্ঞতার সাথে বলতে হয় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাহসী কন্যা বিশ্বনেত্রী শেখ হাসিনা এসজিডি বাস্তবায়নে ক্ষুধা মুক্ত দারিদ্র্যমুক্ত ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে সকল নাগরিকের জন্য কাজ করতে এই অনগ্রসর পিছিয়ে পড়া হরিজন জনগোষ্ঠীর প্রতি সু-দৃষ্টি দেন, তিনি এই জনমানুষের জন্য তাদের পেশাকে সম্মান দিয়ে বেঁচে থাকার জন্য পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদের প্রতিটি নিয়োগে জাত-হরিজনদের ৮০% কোটা সংরক্ষণের নির্দেশনা করিলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করেন যার বিজ্ঞপ্তি নং- (০৫.০০.০০০০.১৭০.২২.০৩৪.১২-৩১৬ তারিখ ১০ই অক্টোবর ২০১২ খ্রীঃ)।
তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আদেশকে অবজ্ঞা করে কিছু কিছু নিয়োগ প্রতিষ্ঠান পরিচ্ছন্ন কর্মী পদের দুর্নীতি করে হরিজনদের নিয়োগ বঞ্চিত করেছে। ইতোমধ্যে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর ৬৩ জন পরিচ্ছন্নকর্মী নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে, যা গত ২১ জানুয়ারি ২০২৩ খ্রীঃ লিখিত পরীক্ষা গ্রহণ করে। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ ছিল পরিচ্ছন্নকর্মী পদের প্রার্থীকে অষ্টম শ্রেণী পাস হতে হবে। জাত-হরিজনদের মধ্যে শিক্ষার অভাব থাকা সত্ত্বেও যারা অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে তাদের মধ্যে শত শত বেকার হরিজন আবেদন করে লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে।
পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রশ্নপত্র পাইয়া হরিজন শিক্ষার্থীরা হতাশার সময় কাটায়। এমন প্রশ্ন করা হয় যা বিসিএস এর সমতুল্য, এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার ক্ষমতা অষ্টম শ্রেণী পাস করা ২০-২৫ বছর পূর্বে পড়ুয়া হরিজনদের মধ্যেও ছিল না। এছাড়াও পরীক্ষার স্বাক্ষর পীঠে অন্যান্য কোটা থাকলেও হরিজন কোটা ছিল না। এই নিয়োগে ৬৩ জন নিয়োগ দেয়া হবে বলে লিখিত পরীক্ষায় কৃতকার্য দেখানো হয়েছে ৬৫ জনকে কিন্তু জাত-হরিজন পরীক্ষায় কৃতকার্য হয়েছে মাত্র ৪ জন। এটা নিয়োগ নয় শুভংকরের ফাঁকি।
নির্মল চন্দ্র দাস বলেন, তাই আমাদের এই লিখিত পরীক্ষা বাতিল করে, পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদে নিয়োগে লিখিত পরীক্ষা শিথিল করে, জাত-হরিজন কোটা নিশ্চিত করে যাচাই-বাছাই করে নিয়োগের দিতে দাবী জানাচ্ছি।
উক্ত মানববন্ধনে সংগঠনটি সহ-সভাপতি লেবু লাল বাসফোর সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: