• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৩ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

শ্রীমঙ্গলে হরিণ জবাইয়ের ঘটনায় বনবিভাগের জিডি  


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: শনিবার, ২৫ ফেরুয়ারী, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ০১:৪৪ পিএম
শ্রীমঙ্গলে হরিণ জবাইয়ের ঘটনা
লাউয়াছড়া বনের ভিতরে

মো: জহিরুল ইসলাম, স্টাফ রিপোর্টার   মৌলভীবাজার : মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের একটি আহত  মায়া হরিণের জবাইয়ের ঘটনায় শ্রীমঙ্গল জিআরপি রেলওয়ে থানায় বনবিভাগের সাধারণ ডায়েরী।  

সিলেট থেকে ছেড়ে আসা  ঢাকাগামী কালনি ট্রেন থেকে  লাউয়াছড়া বনের জবাই কৃত মায়া হরিন উদ্ধার করা হয় গত বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারী) সকাল ১০ টার দিকে । পুলিশ আসামী পেয়েও ছেড়ে দেয়।  

একাধিক সূত্র নিশ্চিত করে বনবিভাগ ও রেলওয়ে পুলিশের দাবি এটি মায়া হরিণ এবং একমাত্র লাউয়াছড়া বনেই এই হরিণ বসবাস করছে ।

সেদিন বুধবার সকাল প্রায় ১০ টার দিকে যাত্রীবাহি কালনীর চালক কারোও অনুমতি না নিয়ে লাউয়াছড়া বনের ভিতরে ৬ মিনিট  ট্রেন দাঁড় করিয়ে রাখেন  চালন।  ট্রেন চালক ও ট্রেনে ফায়ারম্যান সহ ট্রেনের কজন স্টাফ  মিলে আহত মায়া হরিণটি কে জবাই করে ঢাকার নেওয়ার উদ্দেশ্যে বগিতে তুলে।  খবর পেয়ে রেলওয়ে জিআরপি থানা পুলিশ এটি উদ্ধার করে।  

ট্রেনের বগিতে মায়া হরিণটি কিভাবে চলন্ত ট্রেনে আসলো এ ঘটনায়  নিয়ে নানামুখি প্রশ্ন দেখা দেয়।

গত বুধবার থেকে দুই দিনের অনুসন্ধান করে জানা যায়, কালনী ট্রেনের চালক লাউয়াছড়া বনের ভেতর ট্রেন থামিয়ে হরিণটি জবাই করেন। এবং সেই সময় কোন অনুমোতি ছাড়া তিনি ৬ মিনিট হরিন জবাই করার জন্য ট্রেনটি লাউয়াছড়া বনের ভেতর দাড় করিয়ে রাখেন। এই কালনী ট্রেনের একাধিক যাত্রী এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

প্রত্যক্ষ  ঐ  ট্রেনের যাত্রী সন্তুশ দাস বলেন, আমি ট্রেনে কুলাউড়া থেকে শ্রীমঙ্গলের উদ্দেশে ট্রেনে উঠি ।লাউয়াছড়া বনে  ঢুকার কিছুক্ষণ পর আমি ওয়াস রুমে যাই, তো হঠাৎ করে দেখি ট্রেন থেমে গেছে। আমি সাথে সাথে  ওয়াস রুম থেকে বের হই, তারপরে শুনি যে একটা হরিণের জন্য ট্রেন থেমেছে।  পরে দেখলাম হরিণ আহত হইছে, এর জন্য জবাই করছে ট্রেনের ফায়ারম্যান সহ স্টাফরা । জবাই অবস্থায় নিয়া আসতে দেখছি। অনেকে ভিডিও করছে। এর পর ট্রেন ছেড়ে দেয়।

সেদিনের হরিণ জবাই করে ট্রেনের তুলা কয়েকটি ছবি  সংগ্রহ করা হয়।  সেই ছবিতে দেখা যায় দাঁড়িওয়ালা এক ব্যাক্তির হাতে জবাই করার দেশীয় অস্ত্র হাতে ট্রেনের ফায়ারম্যান সহ ট্রেনের স্টাফরা। আরেকটা ছবিতে মোটা করে একব্যাক্তি  তবে তিনি চালক নিজেই কিনা তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি তবে অনেক মাধ্যমে চালক বলে দাবী করা হয়েছে।

এই ট্রেনের আরেক যাত্রী কমলগঞ্জের সুমন আহমদ জানান, ট্রেনটি লাউয়াছড়া বনের ভেতর আসতেই থেমে যায় এবং ৬/৭ মিনিট পর একটি হরিন নিয়ে এসে আবার ট্রেন ছাড়ে।

এব্যাপারে ভানুগাছ রেলওয়ে স্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার তার রেকর্ড বুক থেকে জানান ভানুগাছ থেকে ৮.২৮ এ ট্রেনটি ছেড়ে আসে এবং ৮.৫৪ তে  শ্রীমঙ্গল স্টেশনে পৌছায়/ সাধারণ সময়ে ২০ মিনিট লাগলেও এই দিন লাগে ২৬ মিনিট।সেদিন  কালনী ট্রেনটি শ্রীমঙ্গলে দেরি করে পৌছে।  

ট্রেনের গায়ে লেগে হরিনটি আহত হয় পরে জবাই করে ট্রেনে তুলা হয়। বনবিভাগের একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমাদের শতভাগ ধারণা যে চালক ট্রেন থামিয়েছেন এবং জবাই করে তা ট্রেনে তুলা হয়। কারণ ট্রেন না থামালে তা কোন ভাবেই ট্রেনে তুলা সম্ভব নয়। 

ময়নাতদন্তে জানা যায় হরিনটি জবাই করে হত্যা করা হয়েছে যদিও এর গায়ে পশমে চামড়ায়  আঘাত ছিল। তবে শরীরের ভিতরে কোন গুরুত্ব প্যাকচার নাই।  

শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা কর্ণ চন্দ্র মল্লিক বলেন, আমরা পোস্ট মর্টেম করে বুঝতে পেরেছি প্রাণীটিকে ধারলো কোন জিনিস দিয়ে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। 

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) শ্যামল কুমার মিত্র জানান, ঢাকাগামী কালনি ট্রেন থেকে হরিনের মৃতদেহ উদ্ধার করে শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে থানা পুলিশ। পরে তারা আমাদের জানায়।  আমার ধারণা চলন্ত রেলের আঘাতে হরিণটি আহত হয় এবং পরে তারা জবাই করে।   

শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাফিউল ইসলাম পাটোয়ারী জানান, আমার ধারণা ট্রেনের আঘাতে আহত হয় এবং পরে তা ট্রেনে তুলা হয় । কিভাবে তুলা হয়েছে তা তদন্ত ছাড়া বলা যাবে না ।

শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশন শাখাওয়াত হোসেন জানান, আমাদের অনুমতি ছাড়া ট্রেন রাস্তাতে দাঁড় করায় চালক,  কারোও অনুমতি ছাড়া ট্রেন দাঁড় করানোর এখতিয়ার নেই। যান্ত্রিকক্রুটি ছাড়া রাস্তাতে দাঁড় করাতে পারবে না। হরিণ জবাই ঘটনা আমরা জানি না চালক গার্ড আমাদের কিছু বলেনি।পরে লোকমুখে শোনেছি জিআরপি থানা পুলিশ ট্রেনের বগি থেকে একটি জবাই কৃত মায়া হরিণ উদ্ধার করেছে।  

তবে এই বিষয়ে শ্রীমঙ্গল  রেলওয়ে জিআরপি থানাতে লাউয়াছড়া ফরেস্টার  বিট  কর্মকর্তা মো: আনিসুজ্জামান  একটি লিখিত অজ্ঞাত নামা  দায় সাড়া গত ২৩ ফেব্রুয়ারী একটি লিখিত সাধারণ ডায়েরী করেন। জিডি নাম্বার ৬৭৭  অভিযোগ দায়ের করেছে। 

রেলওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ  কর্মকর্তা শাফিউল ইসলাম পাটোয়ারী জানান, এখানে অনেক প্রশ্ন সামনে আসছে  সঠিক কিছু বলা যাচ্ছেনা তদন্ত ছাড়া। তবে হরিণটি লাউয়াছড়ার এবং সেখান থেকেই ট্রেনে উঠানো হয়েছে।

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image