নিউজ ডেস্ক : আদালত থেকে জঙ্গি ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনার প্রধান সমন্বয়ক ছিলেন মেহেদী হাসান অমি ওরফে রাফি বলেছেন, পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) প্রধান ও অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান। তিনি আনসার আল ইসলামের আসকারি শাখার সদস্যদের রিক্রুটের দায়িত্ব পালন করতেন। বরখাস্ত মেজর জিয়ার আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) রাজধানীতে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
সিটিটিসি প্রধান বলেন, সংগঠনের শীর্ষস্থানীয় নেতা ও গ্রেফতার আসামিদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার দায়িত্ব পালন করত রাফি। আদালত থেকে জঙ্গিদের ছিনিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা করে সংগঠনের শীর্ষ নেতারা। রাফি আদালতে হাজিরা দেয়ার সময় অন্যান্য আসামির সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং পরিকল্পনার বিষয়ে অন্যদের জানায়। এরপরই কাজে নামে তারা।
মো. আসাদুজ্জামান বলেন, গ্রেফতার রাফি ২০০৯ সাল থেকে ছিল হিজবুত তাহরীরের সদস্য ছিল। তবে ২০১৩ সালে সে আনসার আল ইসলামের সঙ্গে জড়িত হয়। একসময় সিলেট বিভাগের দাওয়াহ বিভাগের প্রধান হিসেবে নিয়োগ পায় রাফি।
এর আগে গত বুধবার (২৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম শাখা থেকে পাঠানো এক ক্ষুদে বার্তায় বলা হয়, আদালত প্রাঙ্গণে হামলা চালিয়ে জঙ্গি ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার নাম মেহেদী হাসান অমি ওরফে রাফি। এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হবে।
তার আগে গত রোববার (২০ নভেম্বর) ঢাকার নিম্ন আদালত থেকে পুলিশের চোখে স্প্রে করে প্রকাশক দীপন হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামিকে ছিনিয়ে নিয়ে যান জঙ্গিরা। সেদিন দুপুর ১২টার দিকে ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে।
পলাতক দুই আসামি হলেন- মইনুল হাসান শামীম ও আবু সিদ্দিক সোহেল। শামীমের বাড়ি সুনামগঞ্জের ছাতকের মাধবপুর গ্রামে। সোহেলের বাড়ি লালমনিরহাটের আদিতমারীর ভেটোশ্বর গ্রামে।
রোববার ঢাকার সন্ত্রাস দমন ট্রাইব্যুনালে মোহাম্মদপুর থানার একটি মামলায় তাদের হাজির করা হয়েছিল। হাজিরা শেষে হাজতখানায় নেয়ার পথে জঙ্গি ছিনতাইয়ের এ ঘটনা ঘটে। এরপর কোতোয়ালি থানায় কোর্ট পরিদর্শক জুলহাস বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয় আরও ৭-৮ জনকে।
মামলায় পালানোর সময় গ্রেফতার দুজনসহ দশজনের প্রত্যেকের ১০ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রোববার (২০ নভেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিন এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার আসামিরা হলো- শাহীন আলম ওরফে কামাল, শাহ আলম ওরফে সালাউদ্দিন, বি এম মজিবুর রহমান, সুমন হোসেন পাটোয়ারী, আরাফাত রহমান, খাইরুল ইসলাম ওরফে সিফাত, মোজাম্মেল হোসেন, শেখ আব্দুল্লাহ, আ. সবুর, রশিদুন্নবী ভূঁইয়া।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, দুটি মোটরসাইকেলে করে চারজন এসে আসামি ছিনিয়ে নেয়। নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের এ দুই সদস্য দীপন হত্যায় মৃতুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। লেখক অভিজিৎ রায় হত্যা মামলাতেও আবু সিদ্দিক সোহেলের ফাঁসির রায় হয়েছে।
এদিকে দুই জঙ্গিকে গ্রেফতারে রেড অ্যালার্ট জারি করেছে। রাজধানীর প্রতিটি থানা ও অন্যান্য ইউনিটকে চেকপোস্ট বসানোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এছাড়া সারা দেশের আদালতগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: