• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৫ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

কিশোরগঞ্জের কালনী ও মেঘনা নদী থেকে বালি উওোলনে বাঁধ হুমকির মুখে


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: রবিবার, ০৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, ০২:১৪ পিএম
নদী থেকে বালি উওোলনে
বাঁধ হুমকির মুখে

বিজয়কর রতন, মিঠামইন (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ কিশোরগঞ্জের অষ্ট্রগ্রাম উপজেলার আব্দুল্লাহ পুর ইউনিয়নের দক্ষিণে কালনী ও মেঘনা নদী থেকে দীর্ঘ ১ বছর যাবৎ ড্রেজারে বালি উওোলনে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৮ কিলোমিটার ফসল রক্ষা বাঁধের ২ কিলোমিটার বাঁধ নদী গর্ভে বিলীন। অন্যদিকে পশ্চিম তীরে ৫শত একর বোরো জমি নদীতে বিলীন হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গিয়াছে। এব্যাপারে নদীর পশ্চিম তীরের ১০টি সেচ স্কীমের ম্যানেজারগণ জেলা প্রশাসক বরাবর অবৈধ বালি উওোলন ও ফসলী জমির ক্ষতি বন্ধের বিরুদ্ধে  অভিযোগ দায়ের করেছেন গত ১লা সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার। অভিযোগকারী স্কীম ম্যানেজারগন হলেন, হারিছ মিয়া, জিল্লু মিয়া, মিলন মিয়া,  আলামিন মিয়া, সুলতান মিয়া, মতিন ভুইয়া, আমিরচান, জলু মিয়া, সলিম হাজী সহ বিএডিসির সেচ স্কীম ও  রয়েছে। তারা জানান, দীর্ঘ ১ বছর যাবৎ ২টি ড্রেজারে দিন রাত অবৈধ ভাবে কালনী ও মেঘনার সংযোগ স্থল থেকে বালি উওোলন করে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য করে আসছে তারা। প্রতিদিন ড্রেজার মালিকগণ কমপক্ষে ১০টি বোলগেট ভর্তি করে এ বালি দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে বিক্রি করছে।

এব্যাপারে তারা দীর্ঘ দিন যাবৎ স্থানীয় ভাবে অভিযোগ করে আসছে। কিন্তু প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। নদীর পশ্চিম তীরে মিঠামইন উপজেলার অংশে ১০টি সেচ স্কীম রয়েছে এসকল স্কীমের আওতায় প্রায় ৫ হাজার একর জমি রয়েছে। ইতি মধ্যে ৫ শতাধিক একর জমি বালি উওোলনের কারণে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে পড়েছে। নদীর পশ্চিম তীরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ফসল রক্ষা বাঁধ রয়েছে। বাঁধ খানী মিঠামইনের কাদিরখলা থেকে নদীর তীর ঘেসে অষ্ট্রগ্রামের কলমা পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার বাঁধের প্রায় ২ কিলোমিটার বাঁধ ইতি মধ্যে ভেঙ্গে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে পড়েছে।

অষ্ট্রগ্রাম উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা (এস,ও) মোঃ সেলিমের সাথে কথা বললে তিনি জানান, বালি উওোলনের বিষয়টি মৌখিক ভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে অবহিত করেছেন।
পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়ন সোসাইটির চেয়ারম্যান মোঃ হোসাইনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এব্যাপারে জাতীয় নদী রক্ষা কমিটির নিকট ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন। তিনি আরও বলেন,বালি বিক্রির সাথে যারা জড়িত তারা হল মাফিয়া। এব্যাপারে বালি উওোলন বন্ধ সহ বালি বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে পরিবেশ রক্ষার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

বিভিন্ন সুত্র থেকে জানা যায়, বালি উওোলনকারী ড্রেজার এম,বি সজিব রুহান ড্রেজিং প্রকল্পের নেপথ্যে রয়েছে ঠিকাদার নুরুল ইসলাম সরকার ও তার সহযোগী শামছুউদ্দিন মিয়া। তারা দুজনের বাড়ী অষ্টগ্রাম উপজেলার আব্দুল্লাহ পুর গ্রামে। ঠিকাদার নুরুল ইসলাম সরকার বর্তমানে বি-বাড়িয়ায় বসবাস করছেন। সেখান থেকে তার ভাগিনা সোহেলকে দিয়ে বালিউত্তোলনের কাজ পরিচালনা করছেন।

এব্যাপারে নুরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে (০১৭১০-৪০০৩৫৮)। সোহেল নামে আব্দুল্লাহপুর গ্রামের একজন বালির ব্যাবসার ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছেন বলে ড্রেজারে থাকা শ্রমিকরা ও জানান। সরজমিনে নদীতে ড্রেজারে থাকা লোকজনের সাথে বালি ক্রয়ের কথা বলে কৌশলে ছবি তোলা হয়।

তারা ছবি তুলতে নিষেধ করেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে আব্দুল্লাহ গ্রামের কয়েকজন গ্রাম বাসী জানান, এসকল ড্রেজারে বালি উত্তোলন করার পিছনে প্রতিমাসে একলক্ষ টাকা তাদের ব্যায় করতে হয়। টাকাটা বিভিন্ন জায়গায় চলে যায়। শুধু মাত্র ইউএনও আসার খবর দেওয়ার জন্য প্রতিমাসে ১০ হাজার টাকা অষ্টগ্রাম উপজেলা সদরে দিতে হয়। ইউএনও আসার খবর পেলেই ড্রেজার নিয়ে তারা পালিয়ে যায়। তারা আরও জানান, শস্যের মধ্যে ভুত রয়েছে। প্রশাসনের একটি অংশ গোপনে তাদের সহযোগিতা করছে।

অষ্ট্রগ্রাম উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ হারুন অর রশিদের সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি জানান, ১ মাস পূর্বে সংবাদ পেয়ে ঘটনা স্থলে যান।কিন্তু ঘটনা স্থলে তিনি কোনো ড্রেজার পাননি। বর্তমানে যদি বালি উওোলন করে থাকে তবে বিষয়টি সরজমিনে তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কিশোরগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মতিউর রহমানের সাথে ৩রা সেপ্টেম্বর শনিবার সকালে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে, তিনি বলেন,বালি উওোলনের ফলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ফসল রক্ষা বাঁধের ক্ষতি হলে অষ্ট্রগ্রাম উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবিহত করবেন। তিনি যদি কোনো ব্যাবস্থা না নেন, তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন বলে তিনি জানান।

 

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image