নিউজ ডেস্ক : বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ জন্মলগ্ন থেকেই জনভীতিতে ভোগে । তিনি বলেছেন, সারাদেশে শামীম ওসমান, গোলন্দাজ, তাহের এবং হাজী মকবুলসহ অসংখ্য গডফাদার সৃষ্টি করে আওয়ামী লীগ এদেশের মানুষের ওপর হত্যা, নির্যাতন অব্যাহত রেখেছিল। এই নারায়ণগঞ্জেই ১৯৯৬ সালে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়ার লংমার্চে বাধা প্রদান করা হয়েছিল। সেই সময় ঢাকার মেয়র ও এমপি সাদেক হোসেন খোকা ও ছাত্রদলের তৎকালীন সভাপতি শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর মাথায় পুলিশ গুলি চলিয়েছিল। গত ১৫ বছরেও আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মীদের আওয়ামী সন্ত্রাসী ও পুলিশ গুম, খুন ও নির্যাতন করেছে।
রোববার বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় বিএনপির ৪ হাজার ৮১ জনের নামে এবং অজ্ঞাত ২০ হাজার জন নেতাকর্মীকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবৈধ, অনির্বাচিত ও ফ্যাসিবাদি সরকারের পুলিশের গুলিতে গত ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া যুবদল নেতা শাওনকে হত্যা ও সারাদেশে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে আওয়ামী সন্ত্রাসী বাহিনী ও পুলিশ বিনা উস্কানিতে হামলার প্রতিবাদে সারাদেশে গতকাল বিএনপি আয়োজিত প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ও অবৈধ সরকারের পুলিশ বাহিনী গতকালও ঠাকুরগাঁও জেলার রুহিয়া উপজেলা, কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়াসহ বেশ কয়েকটি জেলায় নারকিয় তাণ্ডব চালিয়েছে।
ঠাকুরগাঁও জেলার রুহিয়া উপজেলায় পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসী হামলায় প্রায় ২৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলায় পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলায় প্রায় শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছে। পুলিশের গুলিতে আহত দুই জনের অবস্থা সংকটাপন্ন। এ ছাড়া গত ২২ আগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিএনপির কর্মসূচিতে নিহত, আহত, গ্রেপ্তার ও ভাঙচুর করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী সারাদেশে নিহত ৩ জন, আহত হয়েছেন ২ হাজার জনের অধিক নেতাকর্মী, গ্রেপ্তার ২০০ জনের অধিক নেতাকর্মী, নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়েছে প্রায় ৪০৮১ জনের বিরুদ্ধে, সারাদেশে অজ্ঞাত আসামি প্রায় ২০ হাজার, সারাদেশে ১৪৪ ধারা জারি ২০ থেকে ২৫টি স্থানে এবং বাড়িঘরে ও ব্যাসায়িক প্রতিষ্ঠানে হামলা প্রায় ৫০টি স্থানে।’
গ্রেপ্তার ও হত্যার প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সারাদেশে কর্তৃত্ববাদী গণবিরোধী, ফ্যাসিষ্ট সরকার বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের এবং সাধারণ মানুষদের হত্যা, আহত, গ্রেপ্তার করে যে অপতৎপরতা অব্যাহত রেখেছে তা বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছি। হত্যাকারী এবং হামলাকরীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার নেতাকর্মীদের মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ফিরে আসার জন্যও সরকারকে আহ্বান জনাচ্ছি।’
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে কোনো দলের সদস্য হিসাবে কাজ না করে দেশের সংবিধান রক্ষা এবং জনগণের জান-মালের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিরপেক্ষভাবে পালন করার আহ্বান জানিয়ে ফখরুল বলেন, ‘সরকার যদি এই অশুভ তৎপরতা বন্ধ না করে তাহলে জনগণের যে ঐক্যের আন্দোলন শুরু হয়েছে তা ক্রমান্বয়ে গণবিস্ফোরণে পরিণত হবে এবং গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করে এই সকল অপকর্মের সাথে যারা জড়িত তাদের বিচার করা হবে।’
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন