মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি : পদ্মা নদীর ভাঙনে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের প্রায় সাড়ে চার কিলোমিটার এলাকার কয়েকশ একর ফসলি জমি, ঘরসহ অনেক স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
ঝিটকা-গোপীনাথপুর-বাল্লা-পাটুরিয়া সড়ক এবং হোগলাকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ও ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে।
কাঞ্জনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী বনি ইসলাম রূপক বলেন, আমার ইউনিয়নে কয়েক বছরের অব্যাহত ভাঙনে ১৩টি মৌজার ১২টিই পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে। এখন শুধু গৌড়বোরদিয়া মৌজা অবশিষ্ট রয়েছে।
তিনি আরও জানান, গত দুই বছরে পদ্মার ভাঙনে শত শত বিঘা জমি ও কয়েকশ বাড়ি পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে। গত বছর কুশিয়ারচর ও মালুচি এলাকায় শতাধিক বাড়ি ভেঙে গেছে। এবার কোর্টকান্দি সবচেয়ে বেশি ভাঙছে।
কোর্টকান্দি গ্রামের এক বাসিন্দা জানান, এর আগে আরও চারবার গাঙ্গের ভাঙনে ঘরবাড়ি হারায়ে এই গ্রামে আইসি। আর কয়দিনই বাঁচপো? মরার আগে এই বাড়িডাও মনে হচ্ছে আর থাকবার পারুম না। সরকার যদি এই ভাঙন ঠেকানোর ব্যবস্থা করত, তাইলে আর ভাঙত না।
কোর্টকান্দি গ্রামের জবেদা বেগম (৫০) বলেন, এর আগে একবার বাড়ি ভাঙছে। ভাঙার পর বাড়ি করছি তাও ভাইঙ্গা যাইতেছে। আমরা গরিব, ছেলে রিকশা চালায়। এবার ভাঙলে যামু কই। সরকার যেন ভাঙা ফিরাইতে ব্যবস্থা নেয়।
একই গ্রামের জরিনা বেগম (৩৮) বলেন, এর আগে তিন ভাঙা দিছে। মাইনষে থাকতে দিছে, সে জায়গাও ভাইঙ্গা যাইতেছে। স্বামী নাই, মেয়ে নিয়া থাহুম কই?
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমাকে বিষয়টি অবগত করেছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করব।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাইনুদ্দিন বলেন, পদ্মায় পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হরিরামপুর উপজেলার কাঞ্চনপুর ও গোপীনাথপুরে ভাঙন দেখা দিয়েছে। হরিরামপুরে ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নিতে বরাদ্দের জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে বুধবার মিটিংও চলছে। অনুমোদন পেলেই কাজ শুরু করতে পারব বলে জানান তিনি।
ঢাকানিউজ২৪.কম / সাকিব আহমেদ/কেএন
আপনার মতামত লিখুন: