• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ; ২৯ মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

নির্ঘুম রাত কাটিয়েছে উপকূলবাসী


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, ০৭:৪১ এএম
সেন্টমার্টিন দ্বীপের চারপাশের ঘরগুলোতে

নিউজ ডেস্ক:    ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে বৃধি পেয়েছে জোয়ারের পানি। এতে কক্সবাজারের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে উপকূলের নিচু এলাকার বসতঘরে পানি ঢুকেছে। কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের তৎপরতায় আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে উপকূল ও নিম্নাঞ্চলের লাখো মানুষ। সেখানে অনেকটা নির্ঘুম রাত কাটছে উপকূলবাসীর। সোমবার (২৪ অক্টোবর) রাত ৮ টার পর থেকে নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকে পড়ে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

এদিকে সেন্টমার্টিন দ্বীপের চারপাশের ঘরগুলোতে কয়েক ফুট পর্যন্ত পানি ঢুকেছে বলে জানিয়েছেন সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান। তিনি জানান, জোয়ারের সময় পানি বাড়লেও তা শুধু নিম্নাঞ্চলে প্রবেশ করেছে। আমরা লোকজনকে সরিয়ে দ্রুত আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে এসেছি। সরকারি দুটি আশ্রয় কেন্দ্রসহ বেসরকারি ভবন, ডাকবাংলো, সরকারি অফিসকে আশ্রয় কেন্দ্র করা হয়েছে। তবে এখন বাতাসের গতিবেগ কমে এসেছে। জোয়ারের পানিও নামতে শুরু করেছে।

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, রাতে কক্সবাজার থেকে ২৪০ কিলোমিটার দূরে ঘূর্ণিঝড়টি অবস্থান করছে। সোমবার রাতের শেষ প্রহর বা মঙ্গলবার ভোরবেলায় কক্সবাজারসহ উপকূলে আঘাত হানতে পারে। কক্সবাজারে ৭নম্বর বিপদ সংকেত বলবৎ রয়েছে।

জেলা প্রশাসন সুত্র জানায়, কক্সবাজারের মহেশখালী, কুতুবদিয়া ও টেকনাফ, পেকুয়া, কক্সবাজার সদরের পোকখালী, চৌফলদন্ডীর উপকূলীয় এলাকার লাখো মানুষ ঝুঁকির মুখে রয়েছে। তাদের মধ্যে অতি ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে লোকজনকে ইতিমধ্যে সরিয়ে আনার হয়েছে। সোমবার দুপুর হতে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া শুরু হয়। এ পর্যন্ত প্রায় ৩০-৩৫ হাজার মানুষ ও ৩ হাজার গৃহপালিত পশু আশ্রয় কেন্দ্রে আনা হয়েছে। শহরের সমিতি পাড়া, কুতুবদিয়া পাড়া ও নাজিরারটেক এলাকা থেকে আশ্রয় কেন্দ্রে লোকজন সরিয়ে এনেছে কক্সবাজার পৌরসভা। দীর্ঘদিন পর অজানা শঙ্কায় হাজারো মানুষ ছুটছে আশ্রয় কেন্দ্রে। তবে, যানবাহন সংকটে আশ্রয় কেন্দ্রে আসতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।

কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, কক্সবাজার পৌরসভার ১৫টি আশ্রয় কেন্দ্রে মানুষকে যানবাহন করে আনা হচ্ছে। সবার জন্য খাবারসহ নানা প্রয়োজনীয় সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং মোকাবিলায় মাঠে নেমেছে পৌর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ। নেতাকর্মীরা বিভিন্ন টিমে ভাগ হয়ে কাজ দূর্গতদের আশ্রয় কেন্দ্রে আসতে সহযোগিতা দিচ্ছে।

মহেখালী উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, মাতারবাড়ি, ধলঘাটা ও কুতুবজোমসহ মহেশখালীতে অন্তত ৩০টি গ্রামের মানুষ ঝুঁকির মুখে রয়েছে। বিকেলের পর থেকে তাদের সরিয়ে আনার কাজ শুরু হয়। ইতিমধ্যে অনেককে আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া হয়েছে।

কুতুবদিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপংকর তঞ্চঙ্গ্যা জানান, কুতুবদিয়া ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে সাত থেকে আট হাজার মানুষ। তাদের সরিয়ে নিতে বিকাল থেকে কাজ শুরু করে জনপ্রতিনিধিরা। সন্ধ্যার আগেই ঝুঁকিপূর্ণ সব লোকজনকে সরিয়ে আনা হয়।  

এদিকে, টেকনাফের উপকূলেও বাড়ন্ত জোয়ারের পানি লোকালয়ে ঢুকেছে। ফলে আতংকিত লোকজন আশ্রয় কেন্দ্রে ছুটছে। বিদ্যুৎ না থাকায় অনেকের মুঠোফোনে চার্জ নেই। ফলে বিপদেও কোন রকম যোগাযোগ করতে পারছেনা।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. এরফানুল হক চৌধুরী জানান, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েক ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে সেন্টমার্টিনসহ কিছু নিচু এলাকায় পানি ঢুকেছে। তবে এ পর্যন্ত প্রাণহানি বা বড় ধরনের দূর্যোগ বা দূর্ঘটনা ঘটেনি।

জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং মোকাবিলায় সকল প্রস্তুতি নেয়া আছে। প্রস্তুত রয়েছে ৫৭৬টি আশ্রয় কেন্দ্র। মজুত আছে ১০ লাখ টাকা, ৩০০ মেট্টিক টন চাল, ২০০ বান্ডিল ঢেউটিন ও পর্যাপ্ত শুকনো খাবার। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় কাজ করছে ১০ হাজার সিপিপির স্বেচ্ছাসেবক ও ১০৮টি মেডিকেল টিম।

ঢাকানিউজ২৪.কম /

আরো পড়ুন

banner image
banner image