নিজস্ব প্রতিবেদক : জামালপুরে জেল কারাগারে বন্দি আসামিদের মধ্যে হঠাৎ উত্তেজনা ও বিদ্রোহ দেখা দিলে কারারক্ষীরা ফাঁকা গুলি করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। গতকাল থেকে সেনাবাহিনী কারাগারের চারদিক ঘিরে রেখেছে। পরিস্থিতি এখন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
এ সময় বিক্ষুব্ধ বন্দিরা বিক্ষোভ, অগ্নিসংযোগ করে বের হওয়া চেষ্টা করেন। এ ঘটনায় ছয়জন কারাবন্দি নিহত ও জেলার, কারারক্ষী ও বন্দিসহ ১৯ জন আহত হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলার আবু ফাতাহ।
শুক্রবার (০৯ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে জেলা কারাগারের প্রধান গেইটে গণমাধ্যম কর্মীদের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। এ ঘটনায় জামালপুর সদর উপজেলার আরমান, শ্যামল, জসিম, রাহাত, ফজলে রাব্বি বাবু, রায়হান নামে ৬ জন কয়েদি নিহত হয়েছে। এছাড়া ১৯ জন কয়েদি ও কারারক্ষী আহত হয়েছে।
কারা কর্তৃপক্ষ জানান, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গ্রেপ্তার শিক্ষার্থী ও রাজনৈতিক মামলার বন্দি আসামিরা গত কয়েকদিনে কারাগার থেকে মুক্ত হয়েছে। অন্য মামলার আসামিরা কারাগারে বন্দি রয়েছে। সেই বন্দি আসামিরা দুইভাগে বিভক্ত হয়। তাদের একটি পক্ষ মুক্তির জন্য বিদ্রোহ করে এবং অপর পক্ষকে মারাধর করেন। পরে ওই বিদ্রোহী গ্রুপ দায়িত্বরত কারারক্ষীদের হাত-পা বাঁধে এবং জিম্মি করে। পরে বিদ্রোহীরা প্রথম গেইট দিয়ে জেলার কক্ষে ঢুকে তাঁকে প্রধান গেইট খুলে দিতে বলেন। তখন তিনি গেইট খুলে দিতে অস্বীকৃতি জানালে বিদ্রোহীরা তাঁর উপর আক্রমন এবং মারধর করে। পরে বন্দিদের একটি পক্ষ ও কারারক্ষীদের সহায়তায় তিনি বের হয়ে আসে। এ সময় বিদ্রোহীরা জেলারের কক্ষ, হাসপাতাল ও বান্দিদের সাতটি সেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে কারারক্ষীরা ফাঁকা গুলি ছুঁড়তে থাকে। পরে পিরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করতে কারারক্ষীদের পাশাপাশি অন্যান্য আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কারাগারে অবস্থান নেন। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রয়েছে বলে জানা যায়। এ ঘটনায় আহতদের মধ্যে একজনের অবস্থা সঙ্কাটাপন্ন হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্য আহতরা জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা কারাগারের জেলার আবু ফাতাহ বলেন, ‘দুপরে বন্দিদের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়। তারা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে মারামারি শুরু করে। এ সময় তারা আমাকে ও কারারক্ষীদের উপর চড়াও হয়ে আক্রমন করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করতে শতাধিক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়া হয়। পরিস্থিতি এখন সম্পূর্ন নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। এ ঘটনায় ৬ জন বন্দি নিহত হয়েছে এবং আমি, কারারক্ষী ও বন্দিসহ ১৯ জন হয়।’
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: