নিউজ ডেস্ক : অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টারা বঙ্গভবনের দরবার হলে শপথ নিয়েছেন। প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে প্রথমে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন। এরপর বাকি ১৬ উপদেষ্টার মধ্যে ১৩ জন শপথ পাঠ করেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাত ৯টা ২৭ মিনিটে তারা শপথ নেন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সদস্যরা বৃহস্পতিবার রাত ৮টায়
শপথগ্রহণের কথা থাকলেও তা পিছিয়ে দেওয়া হয়।
ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায়, সুপ্রদীপ চাকমা ঢাকার বাইরে থাকায় আজকে শপথ নিতে পারেননি বলে শপথ অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন মন্ত্রীপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন।
অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন :
১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ, ২. ড. আসিফ নজরুল, ৩. আদিলুর রহমান খান, ৪. হাসান আরিফ, ৫. তৌহিদ হোসেন, ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান, ৭. মো. নাহিদ ইসলাম, ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন, ১০. ফরিদা আখতার, ১১. আ.ফ.ম খালিদ হাসান, ১২. নূর জাহান বেগম, ১৩. শারমিন মুরশিদ।
এর আগে শান্তিতে নোবেলবিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ গ্রহণ করতে বঙ্গভবনে প্রবেশ করেন।
রাত ৮ টা ২৮ মিনিটে তিনি তার গাড়ি বহর নিয়ে বঙ্গভবনে প্রবেশ করেন। এর আগে বিএনপির নেতৃবৃন্দ, ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার এবং আমন্ত্রিত অতিথিরা বঙ্গভবনে প্রবেশ করেন।
দুপুর ২টা ১১ মিনিটে ড. ইউনূসকে বহনকারী ফ্লাইটটি হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এ সময় বিমানবন্দরে ড. ইউনূসকে স্বাগত জানান সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানসহ তিন বাহিনীর প্রধান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা, নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী, ব্রতীর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন মুরশিদ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।
বিমানবন্দরে ড. ইউনূস বলেন, গত কয়েকদিনে দেশের মধ্যে সহিংসতা হয়েছে সেগুলো ষড়যন্ত্র। এটাকে রোধ করতে হবে। তাদের লাঠিপেটা করলে হবে না। সহিংসতাকারীদের আইনের হাতে তুলে দিতে হবে। কোনো প্রকার প্রতিহিংসামূলক কাজ করা যাবে না।
নতুন বিজয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ নতুন বিজয় দিবস শুরু করল উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, নতুন বিজয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ নতুন বিজয় দিবস শুরু করল। আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। যারা এটি করেছে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা, তারা (সমন্বয়করা) দেশকে রক্ষা করেছে।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, দেশবাসী কাছে আমার ওপরে বিশ্বাস রাখেন, ভরসা রাখেন, দেশে কারও ওপর কোনো হামলা হবে না। তাহলে আমি আপনাদের সঙ্গে থাকব না।
তিনি বলেন, যেজন্য আন্দোলন হয়েছে সেটার ফলাফল যেন ব্যর্থ না হয়। পুনর্জন্মে যে বাংলাদেশ পেলাম সে বাংলাদেশ যেন পূর্ণতা পায়। যে বিপ্লবের মাধ্যমে বাংলাদেশ আজ নতুন করে বিজয় পেল তা যেন পূর্ণতা পায়।
এ সময় কান্নাজড়িত কণ্ঠে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আজকে আমার আবু সাঈদের কথা মনে পড়ছে। যে আবু সাঈদের কথা দেশের প্রতিটি মানুষের মনে গেঁথে আছে। এ ঘটনার মধ্য দিয়ে দেশে দ্বিতীয় স্বাধীনতা এসেছে। এসময় তিনি তরুণ সমাজকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, তরুণ সমাজ যেন নিজেদের মতো করে দেশটা সাজাতে পারে।
এর আগে, ১৯৯৬ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বিচারপতি হাবিবুর রহমান এবং ২০০১ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা লতিফুর রহমান তাদের দায়িত্বের দিনগুলো রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যুমনাতেই ছিলেন।
২০০৮ সালে এক-এগারোর পট পরিবর্তনের পর সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ফখরুদ্দীন আহমেদ যমুনায় ছিলেন।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: