
সুমন দত্ত: রাজধানীতে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কারণে বছর জুড়ে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করলে কাটা পড়েছে বিটিসিএলের লাইন। এতে বিকল হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির শত শত ফোন। মাটির নিচের লাইন ওপর দিয়ে জোড়া লাগালে সংঘবদ্ধ চোর চক্রের কবলে পড়ে সেই লাইন। বাজারে কপার তারের চাহিদা থাকায় বিটিসিএলের ক্যাবল গলিয়ে উচ্চমূল্যে বিক্রি করেছে ওই গোষ্ঠী। চোর চক্রের সঙ্গে পেরে উঠছে না বিটিসিএল কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি এই তথ্য উঠে এসেছে বিটিসিএলের গ্রাহকদের অভিযোগের জবাব চাইতে গেলে।
একটা সময় ঢাকায় টেলিফোনের ক্যাবল সড়কের ওপরে বিদ্যুতের খাম্বার সঙ্গে লাগানো ছিল। তখন ছিল অ্যানালগ টেলিফোনের যুগ। টেলিফোন লাইন ডিজিটাল করার পর মাটির তল দিয়ে সংযোগ স্থাপন করা হয়। এতে বহুদিন রাজধানীবাসী নিরবচ্ছিন্ন টেলিফোন সংযোগ পেয়েছিল। ছিল না কোনো যান্ত্রিক ত্রুটি কিংবা ক্রস কানেকশনের ঝামেলা। এরপর সড়ক উন্নয়নের জন্য রাস্তা ভাঙ্গলে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানগুলো টেলিফোনের সংযোগ লাইন কেটে ফেলে। ভেঙ্গে পড়ে টেলিফোন সংযোগ নেটওয়ার্ক।
এভাবে ওয়াসা, সিটি কর্পোরেশন, ডিপিডিসি, তিতাস গ্যাস বিভিন্ন সংস্থা কারণে অকারণে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করলে কাটা পড়ে বিটিসিএলের লাইন। এতে বীতশ্রদ্ধ হয়ে বিটিসিএল কর্তৃপক্ষ সেই পুরানো স্টাইলে সড়কের ওপর দিয়ে তাদের সংযোগ ব্যবস্থা চালু করে। তাতে শান্তি এলো না। এবার সংঘবদ্ধ চোর চক্রের কবলে পড়ে বিটিসিএলের লাইন সংযোগ।
বিটিসিএলের টেলিফোন ক্যাবল কপার হওয়ার কারণে এগুলো চুরি যাচ্ছে। বাজার কপারের উচ্চমূল্য। চোর চক্র বিটিসিএলের বিভিন্ন স্থানের এসব ক্যাবল চুরি করে। এরপর তা গলিয়ে কেজি দরে চোর বাজারে বিক্রি করে। পুলিশের সাহায্য চেয়েও পাচ্ছে না কর্তৃপক্ষ। এদিকে বিটিসিএলের গ্রাহকরা দিনের পর দিন বিকল ফোন নিয়ে বাসায় বসে আছে। মাসে দিতে হচ্ছে ১৭৩ টাকা টেলিফোন চার্জ। বিটিসিএলের গুলিস্তান অফিসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
পুরান ঢাকার সূত্রাপুর থানার ঠাকুর দাস লেনের এক বাসিন্দা চয়ন বলেন, আগে তাদের লাইন খুব একটা বন্ধ হতো না। এখন টেলিফোন লাইন ঠিক করলে কয়েক মাস পর পর বিকল হয়ে যায়। শান্তি নগরের ইস্টার্ন পিসের বাসিন্দা আভা দাস বলেন, আমার টেলিফোন বহুদিন ধরে বিকল রয়েছে। অভিযোগ দেওয়ার পর ঠিক হলেও আবার বন্ধ হয়ে যায়। কেন বার বার এমন ঘটছে তা জানতে পারছেন না তিনি।
বিটিসিএল গুলিস্তান অফিসে খোঁজ নিয়ে আরো জানা যায় বিভিন্ন পত্রিকা অফিসের টেলিফোন ক্যাবল চুরি করে নিয়ে গেছে চোর চক্র। নয়াদিগন্ত, ইনকিলাব অফিসের ক্যাবল তার মধ্যে অন্যতম। এসব অফিসের লাইন ঠিক করতে বিটিসিএলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে নোটিশ প্রেরণ করেছে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা। কবে নাগাদ এসব লাইন ঠিক হবে তা বলতে পারেন না বিটিসিএল কর্তৃপক্ষ।
ঢাকানিউজ২৪.কম / এসডি
আপনার মতামত লিখুন: