• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ; ২৮ মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

জলবায়ু সম্মেলনে উন্নয়নশীল দেশসমূহের প্রত্যাশা


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: সোমবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, ০২:১৩ পিএম
জলবায়ু সম্মেলনে
উন্নয়নশীল দেশসমূহের প্রত্যাশা

মোতাহার হোসেন
করোনা ধকল কাটিয়ে না ওঠতেই শুরু হওয়া রাশিয়া- ইউক্রেন যুদ্ধ নতুন করে বিশ্ববাসিকে চরম অনিশ্চয়তা ও অর্থনৈতিক সংকটে ফেলছে। এই দ্বৈত সংকটের মধ্যে লোহিত সাগরের সিনাই উপদ্বীপের দক্ষিণ প্রান্তে মিসরের পর্যটন-নগরী শার্ম আল-শেখে ২৭তম বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন (কপ-২৭) শেষ হয়েছে। শক্তিশালী কথামালা, নিঃশব্দ প্রতিবাদ ও সামান্য নগদ পাওয়া নিয়ে আলোচনা, তবে লস এন্ড ডেমেজ চিহ্নিত করতে ফান্ড গঠন এবং অধিক বিপদাপন্ন উন্নয়নশীল দেশসমূহের জন্য ২৩০ বিলিয়ন ডলার প্রদানের অঙ্গীর আপতত প্রাপ্তি হচ্ছে দৃশ্যমান অগ্রগতি।

কিন্তু কার্বন নি:সরনের হাত থেকে ধরিত্রী ও মানুষ রক্ষার কার্যকর পদক্ষেপ এখনো সুদূর পরাহত।  বিশ্বের ১৯৬টি দেশের অন্তত ৫০ হাজার প্রতিনিধি জলবায়ু সংকট থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে ৬ নভেম্বর থেকে জড়ো হয়েছেন নয়নাভিরাম শার্ম আল-শেখে। এই সম্মেলন বিশ্বকে জলবায়ু সংকট উত্তরণে আশার বাণী শোনাতে এবারও যথারীতি ব্যর্থ হয়েছেন বিশ্ব নেতৃবৃন্দ। 

বাস্তবতা হচ্ছে, ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা, জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয় নির্বাহের চাপ ও অর্থনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে জলবায়ু সম্মেলন মানুষকে আশ^স্থ করতে পারেনি। কারণ সম্মেলনে আলোচনায় বিশ্বের তাপমাত্রা এই শতাব্দীর মধ্যে যাতে আরও দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াস না বাড়ে, অর্থায়ন, অভিযোজন তহবিল, অপূরণীয় ক্ষয়ক্ষতি তহবিল, বিশ্বব্যাংক সংস্কার ও আফ্রিকার গ্যাস উত্তোলন ওঠে আসে। এসব ব্যাপারে চূড়ান্ত আলোর ঝলকানি দেখা যায়নি। বিশেষ করে মানবজাতিকে জ্বলন্ত ধরিত্রী থেকে পরিত্রাণে পথ দেখাতে পারেনি ।

তাই জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিঘাত গোটা পৃথিবীকেই যে সংকটের মধ্যে নিপতিত হতে হচ্ছে তা সন্দেহ নেই। গত বছর স্কটল্যান্ডের গ্রাসগোতে অনুষ্ঠিত কপ-২৬ থেকে বৈশ্বিক তাপমাত্রাকে প্রাক্-শিল্পস্তরের চেয়ে দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখায় সম্মতি এসেছিল। তবে মাত্র ২৪টি দেশ কার্বন নিঃসরণ সংক্রান্ত নতুন জাতীয় পরিকল্পনা জমা দেয়। জমা দেয়া পরিকল্পনা অনুযায়ী, তাপমাত্রা প্রায় শূন্য দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমিয়ে আনবে। কার্বন নিঃসরণ কমানোর এ পর্যন্ত দেওয়া প্রতিশ্রæতি লক্ষ্যপূরণের জন্য যথেষ্ট নয়। বিপর্যয়কর আড়াই ডিগ্রি সেলসিয়াস বৈশ্বিক উষ্ণায়নের দিকে এগুচ্ছে পৃথিবী।

বৈশ্বিক গ্যাস সরবরাহের সংকটের প্রতিক্রিয়া হিসেবে নতুন বেশ কিছু গ্যাস প্রকল্পের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। ঘোষিত এসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বর্তমানে নিঃসরিত কার্বনের সঙ্গে তা আরও প্রায় ১০ শতাংশ যোগ করবে। নতুন তথ্য অনুসারে, বিশ্বজুড়ে এলএনজির অতিরিক্ত সরবরাহ হবে। এই দশকের শেষ নাগাদ প্রায় ৫০০ মেগাটন এলএনজি উৎপাদন হতে পারে, যা রাশিয়া থেকে ইউরোপে আমদানি করা সরবরাহের প্রায় পাঁচ গুণ এবং রাশিয়ার মোট গ্যাস রপ্তানির প্রায় দ্বিগুণ। গ্যাস উত্তোলনের এই বৈশ্বিক উন্মাদনা জলবায়ু বিপর্যয়কে ত্বরান্বিত করবে। বৈশ্বিকভাবে গ্যাসের দাম এখন ঊর্ধ্বমুখী। ফলে গ্যাসের মজুতসম্পন্ন আফ্রিকার দেশগুলোর দিকে বিনিয়োগকারীদের চোখ পড়েছে। কিন্তু তেল ও গ্যাস উত্তোলনের ফলে ওই মহাদেশের সাধারণ মানুষের উপকৃত হওয়ার সম্ভাবনা কম। বহুজাতিক কোম্পানিগুলো লাভবান হলেও জলবায়ু সংকটের কারণে দরিদ্ররা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

আফ্রিকা নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ এখনো অনেক পিছিয়ে। গত বছর আফ্রিকায় বায়ু, সৌর বা অন্যান্য নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ-উৎপাদন প্রকল্পগুলোর জন্য আশাতীত বিনিয়োগ হচ্ছেনা। কারণ ধনী বিশ্বই জলবায়ু সংকট সৃষ্টি করেছে। কিন্তু তুলনায় খুব কম মাত্রায় কার্বন নিঃসরণ করা দরিদ্র বিশ্ব অত্যাধিক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সম্মেলনে উপস্থাপিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উন্নয়নশীল দেশগুলোয় জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ২০৩০ সালের মধ্যে বছরে প্রায় ২ ট্রিলিয়ন ডলারের প্রয়োজন হবে। দরিদ্র দেশগুলোকে গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমাতে এবং চরম আবহাওয়ার প্রভাবগুলোর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে সাহায্য করার জন্য ২০২০ থেকে বছরে ১০০ বিলিয়ন দেয়ার অঙ্গীকার করা হলেও তার সিকি ভাগ দেয়া হয়েছে। ধনী দেশগুলো তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করছেনা।

জলবায়ু অর্থায়নে উন্নত বিশ্ব যে অর্থ দেয়, তার বেশিরভাগই মধ্যম আয়ের দেশগুলোর নিঃসরণ কমানোর প্রকল্পে ব্যয় হয়। ফলে সবচেয়ে কম কার্বন নিঃসরণকারী দরিদ্র দেশগুলো সবচেয়ে কম সহায়তা পেয়েছে। অথচ এসব দেশের সহায়তার বেশি প্রয়োজন। বিশেষ করে বনায়ন, বন্যা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা তৈরি করা এবং আগাম সতর্কতার ব্যবস্থা স্থাপন করা। বর্তমানে এসব খাতে তথা অভিযোজনের জন্য জলবায়ু অর্থায়নের মাত্র এক-পঞ্চমাংশ দেয়া হচ্ছে। কিন্তু অভিযোজনের জন্য অর্থায়ন দ্বিগুণ করার লক্ষ্য এ বছরও পূরণ হয়নি। অর্থছাড়ে ঘড়িমসিতে আগামী কয়েক দশকে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতিতে আক্রান্ত দেশগুলো বড়ো আকারের বিপর্যয়ের মুখে পতিত হবে। সংকট প্রলম্বিত হলে জলবায়ু বিশৃঙ্খলাও অনিবার্য্য হয়ে ওঠতে পারে।

জলবায়ু সংকটের কারণে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলো একটি সমাধান সামনে নিয়ে এসেছে। তারা বলছে, যারা মূলত এই সংকট সৃষ্টি করেছে, তাদের তৈরি অপূরণীয় ক্ষয়ক্ষতির জন্য একটি তহবিল গঠন করতে হবে, নাম ‘অপূরণীয় ক্ষয়ক্ষতি অর্থায়ন তহবিল’।  জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ দেশ ভানুয়াতু ১৯৯১ সালে প্রথমে এ ধরনের আর্থিক সহায়তার প্রস্তাব করেছিল। কিন্তু তা বছরের পর বছর টেকনিক্যাল আলোচনায় আটকা থেকে যায়। অবশেষে অপূরণীয় ক্ষয়ক্ষতি,এর অর্থায়নের বিষয়টি অনিবার্য হয়ে উঠছে।

আবার উন্নত বিশ্ব বলছেন,খাদ্য, জ্বালানি ও জীবনযাত্রার সংকটের মধ্যে এ ধরনের অর্থায়ন অসম্ভব। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় কাজ করা গ্রুপ দ্য লস অ্যান্ড ড্যামেজ কোলাবোরেশনের’ এক প্রতিবেদনে বলেছে, ২০২২ সালের প্রথমার্ধে মাত্র ছয়টি জীবাশ্ম জ্বালানি কোম্পানি উন্নয়নশীল দেশগুলোতে জলবায়ু-সম্পর্কিত ইভেন্টগুলোর খরচ বহন করার নামে যথেষ্ট অর্থ উপার্জন করেছে। অন্য এক হিসাবে, তেল কোম্পানিগুলো প্রতিদিন ১ বিলিয়ন ডলার লাভ করে। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস লস অ্যান্ড ড্যামেজ বা জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দুর্যোগ থেকে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি বাবদ অর্থ দেয়ার জন্য জীবাশ্ম জ্বালানির বড়ো কোম্পানিগুলোর ওপর ‘উইন্ডফল ট্যাক্স’ আরোপের আহবান জানিয়েছে।

এবারের সম্মেলনে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বিনিয়োগ বাড়াতে যুক্তরাষ্ট্র নতুন কার্বন ট্রেডিং স্কিম চালুর প্রস্তাব করেছে। সমালোচকেরা জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় এ পরিকল্পনার কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। যুক্তরাষ্ট্রের জলবায়ুদূত জন কেরি বলেছেন, উন্নয়নশীল দেশগুলোর নেতারা পর্যাপ্ত অর্থ সংগ্রহের জন্য সংগ্রাম করছেন। জন কেরি বলেন, নতুন উদ্যোগটি নবায়নযোগ্য জ্বালানির সক্ষমতা রূপান্তরে প্রয়োজনীয় ট্রিলিয়ন ডলার বিনিয়োগে সহায়তা করবে। বিপজ্জনক বৈশ্বিক উষ্ণায়ন এড়াতে আন্তর্জাতিক এনার্জি সংস্থার মতে, ২০৩০ সালের মধ্যে ক্লিন এনার্জি বা পরিবেশ বান্ধব জ্বালানিতে বার্ষিক বিনিয়োগ ৪ ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি হতে হবে। কার্বন বাজার (কার্বন নিঃসরণ কমানোর একটি টুল) ঐতিহাসিকভাবে জলবায়ুর লক্ষ্য পূরণে স্বার্থক হয়নি। জন কেরি স্বীকার করেছেন, ‘অতীতের ভুলগুলো’ কার্বন বাজারের সুনামকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। কিন্তু তিনি প্রতিশ্রæতি দিয়েছেন, শক্তিশালী সুরক্ষা নিশ্চিত করে শুধু ‘উচ্চ মানের’ ক্রেডিট ব্যবহার করা হবে।

যুক্তরাষ্ট্র জলবায়ু অর্থায়নে তার দায়বদ্ধতা পূরণে বারবার ব্যর্থ হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এখনো গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ডের অর্থ পাওনা রয়েছে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বক্তৃতায় অপূরণীয় ক্ষয়ক্ষতি বিষয়ের কোনো উল্লেখ নেই। তবে মিথেন গ্যাস কমানোর পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। মিথেন গ্যাস বায়ুমন্ডলে কার্বন ডাই-অক্সাইডের মতো দীর্ঘস্থায়ী না হলেও নিঃসরিত হওয়ার পর ২০ বছরে গড়ে ৮০ গুণ বেশি তাপ আটকে রাখে। বার্লিনভিত্তিক সংস্থা ক্লাইমেট অ্যানালিটিকসের মতে, যুক্তরাষ্ট্রে অনুমোদিত নতুন গ্যাস প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে ২০৩০ সালের মধ্যে মিথেন নির্গমন ৫০০ শতাংশ বাড়তে পারে। চীনের জলবায়ু বিষয়ক দূত শি ঝেনহুয়া যুক্তরাষ্ট্রের দূত জন কেরির সঙ্গে আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রকে ‘বাধাগুলো দূর করার’ আহবান জানান। তাঁর ভাষায়, যুক্তরাষ্ট্র দরজা বন্ধ করে দিয়েছে এবং চীন এটি খোলার চেষ্টা করছে।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনকে একটি অভিন্ন কৌশল বাস্তবায়নের প্রচেষ্টায় যোগ দেয়ার আহবান জানিয়েছেন। তাঁর ভাষায়,‘সহযোগিতা বা ধ্বংস’ কিংবা ‘জলবায়ু সংহতি চুক্তি বা জলবায়ু আত্মহত্যা’ যেকোনো একটিকে বেছে নিতে হবে। অবশ্য জলবায়ু সংকট নিরসনে বিশ্ব নেতারা যখন দ্বিধাভিবক্ত এবং জল বায়ু অর্থায়নে অনীহা দেখিয়ে আসছেন ঠিক সে সময় এবারের কপে বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়িত একটি প্রকল্প ‘বৈশ্বিক স্বীকৃতি’ অর্জন করেছে। পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটির জুরাছড়ির প্রত্যন্ত পাঁচ গ্রামের নারীদের অর্জনের কথা সেখানে শুনেছে সারাবিশ্ব। সম্মেলনে জলবায়ু অভিযোজনে অবদানের জন্য আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল সেন্টার অন অ্যাডাপটেশনের (জিসিএ) ‘লোকাল অ্যাডাপটেশন চ্যাম্পিয়নস অ্যাওয়ার্ড’  পেয়েছে পার্বত্য জেলা পরিষদ। ১৭০টি দেশের মধ্যে থেকে ৪টি দেশের ৪ প্রকল্পকে এবার বেছে নিয়েছে জিসিএ। এর মধ্যে রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক নেতৃত্ব’ ক্যাটাগরিতে বড়ো পুরস্কার অর্জন করে।
এ প্রকল্প নেয়ার ক্ষেত্রে বিবেচ্য ছিল, স্বল্প খরচে পানি উত্তোলন করতে হবে। বিদ্যুতের জন্য অপেক্ষা না করে সৌরবিদ্যুতে উপর নির্ভর করে করা হয় নলক‚প স্থাপন।

নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসার, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় একটি কার্যকর উপায় হিসেবে বিবেচিত হয়। জিসিএর স্বীকৃতি অর্জনে নতুন করে জলবায়ু মোকাবিলায় বাংলাদেশের সক্ষমতা, নিজস্ব প্রযুক্তি, মেধা, অর্থ দিয়ে অদূর ভবিষ্যতে দেশ, মানুষকে এগিয়ে যেতে সহায়ক হবে এটাই প্রত্যাশা। পাশাপাশি জলবায়ু ঝুকি নিরসনে বৈশ্বিকভাবে প্রযুক্তি ও অর্থসহায়তার প্রত্যাশা করছি।

লেখক: সাংবাদিক,সাধারণ সম্পাদক-বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরাম

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image