ডেস্ক রিপোর্টার : জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের চরম দারিদ্র্যবিষয়ক বিশেষ দূত অলিভিয়ার ডি শ্যুটার বলেছেন, বাংলাদেশের অগ্রগতি এখনও ভঙ্গুর। যারা দারিদ্রসীমা থেকে বের হয়েছে, তারা যে কোনো সময় আবার দরিদ্র হয়ে যেতে পারে। তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা এখনও এত মজবুত হয়নি। যে কোনো ধরনের বাড়তি অর্থনৈতিক চাপ তারা সামাল দিতে পারবে না।
অলিভিয়ার ডি শ্যুটার চরম দারিদ্র্য ও মানবাধিকার পরিস্থিতি দেখতে ১২ দিনের সফরে বাংলাদেশে এসেছেন। সফর শেষে তাঁর পর্যবেক্ষণ নিয়ে রাজধানীর একটি হোটেলে গতকাল সোমবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ঢাকার জাতিসংঘ কার্যালয়।
বাংলাদেশ সফরকালে ঢাকা, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও কক্সবাজারে শ্রমিক, কৃষক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, মানবাধিকারকর্মী এবং সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। ২০২৪ সালের জুনে বাংলাদেশ বিষয়ক সর্বশেষ প্রতিবেদন মানবাধিকার কাউন্সিলে পেশ করবেন এ দূত।
বাংলাদেশের উন্নয়নকে ভঙ্গুর বলার কারণ জানতে চাইলে অলিভিয়ার ডি শ্যুটার বলেন, অনেকে হয়তো দারিদ্র্যসীমার সামান্য ওপরে উঠেছে। তবে তাদের সেই পরিমাণ সম্পদ নেই। হঠাৎ কোনো বিপদ এলে তা মোকাবিলা করতে পারবে না। যদি ঘূর্ণিঝড়ে ফসলের ক্ষতি হয়, তা পূরণের অবস্থায় নেই অনেকের। এই হঠাৎ বিপদে তারা আবার দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে আসবে।
দারিদ্র্য নিয়ে বাংলাদেশের পরিসংখ্যান বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, বাংলাদেশের পরিসংখ্যান বিষয়ে আমার যথেষ্ট সম্মান রয়েছে। দারিদ্র্য নির্ণয়ে বাংলাদেশের শক্তিশালী পদ্ধতি রয়েছে। এখানে একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরতে চাই। সেটি হচ্ছে ২০০০ সালে অতিদারিদ্র্য ৩৪ দশমিক ৩ শতাংশ থেকে এখন তা ৫ দশমিক ৬ শতাংশে নেমে এসেছে, যা উল্লেখযোগ্য অর্জন। তবে বিশেষ দূত হিসেবে আমাকে চ্যালেঞ্জগুলোও দেখতে হয়। আমি বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোকে ভবিষ্যতে আয়-ব্যয় জরিপের ক্ষেত্রে পুষ্টি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ঘর ভাড়াও আমলে নিতে আহ্বান জানাই।
শ্রমিকদের দরিদ্র রেখে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ন্যায্যতা পায় না জানিয়ে বিশেষ দূত বলেন, স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) মর্যাদা থেকে প্রত্যাশিত স্তরে উন্নীত হওয়ার পর একটি অধিকারভিত্তিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে বাংলাদেশ সরকারকে সস্তা শ্রমের ওপর নির্ভরতা কমাতে হবে। মানুষকে দরিদ্র্যের মধ্যে রেখে একটি দেশ তার আপেক্ষিক সুফল বা উন্নয়ন ভোগ করতে পারে না।
মার্চ থেকে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি মাসিক ভাউচার ১২ ডলার থেকে কমিয়ে ১০ ডলার করতে হয়েছে। এটি আগামী জুনে আরও কমিয়ে ৮ ডলার করা হবে। রোহিঙ্গাদের কাজ করতে না দেওয়াকে মানবাধিকার লঙ্ঘন জানিয়ে কাজ করতে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: