সাকিব আহমেদ, মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি : মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে ছাত্রীর সাথে অশ্লীল আচরণসহ অফিসের দালালি, চাঁদাবাজি, স্কুল ফাঁকি ও বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, আন্ধারমানিক মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে ১৪'ই সেপ্টেম্বর ২০২২ সচিব (প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়), মহাপরিচালক (প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর), উপপরিচালক (প্রাথমিক শিক্ষা), জেলা প্রশাসক (মানিকগঞ্জ), জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (মানিকগঞ্জ), উপজেলা শিক্ষা অফিসার (হরিরামপুর) বরাবর বিদ্যালয়ের বেশ কিছু ছাত্রীদের অভিভাবকেরা শিক্ষক আবুল কালাম আজাদের অশ্লীল আচরণ কে কেন্দ্র করে অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, আন্ধারমানিক মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ দীর্ঘদিন যাবৎ ছাত্রীদের সাথে অশালীন আচরণ করে আসছেন। ইতিপূর্বে তার বিরুদ্ধে ছাত্রীর সাথে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ উঠলেও তা ধামাচাপা পড়ে যায়। বিধায় তিনি আবার পূর্বের ন্যায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। ভুক্তভোগী মেয়েরা স্কুল থেকে বাড়িতে এসে প্রতিনিয়তই ওই শিক্ষকের আচরণ সম্পর্কে অভিভাবকদের বলে। ভুক্তভোগীরা মান সম্মানের ভয়ে কারো কাছে বলতে পারে না বলে অভিযোগ করেন তারা।
২৭'অক্টোবর ২০২০ সালে অভিযুক্ত এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে দানিস্তপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আশরাফুল ইসলাম অফিসের দালালি, চাঁদাবাজি, স্কুল ফাকি ও বিভিন্ন অনিয়মের কথা উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী (প্রাথমিক ও গণ শিক্ষা মন্ত্রণালয়), সচিব (প্রাথমিক ও গণ শিক্ষা মন্ত্রণালয়), মহা পরিচালক (প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর), জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ( মানিকগঞ্জ), উপজেলা শিক্ষা অফিসার (হরিরামপুর, মানিকগঞ্জ) বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এই অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রধান শিক্ষককে তোয়াক্কা না করে তার অনুমতি ব্যতিত বিদ্যালয়ের শ্রেণির কাজ ফাঁকি দিয়ে অফিসে ঘুরে বেড়ায় এবং উপজেলা শিক্ষা অফিসারের তাবিলদারী করে। তিনি শিক্ষা অফিসারের এজেন্ট হিসাবে কাজ করে। তাই শিক্ষা অফিসার অফিসিয়াল সকল কাজের দালালী করার সুযোগ তাকে দেয়। শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার প্রধান শিক্ষককে না জানিয়ে যখন তখন তাকে বিদ্যালয় থেকে ফোন করে নিয়ে আসে। প্রধান শিক্ষক এ নিয়ে জানতে চাইলেও কোন লাভ হয় না ।
২৭'অক্টবর ২০২১ সালে হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা শিক্ষা অফিসার এবং জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (মানিকগঞ্জ) বরাবর উক্ত বিদ্যালয়ের পরিচালক পরিষদের অভিভাবক সদস্য এনামুল হক শাহীন ছাত্রীর সাথে অশ্লীল আচরণ কে কেন্দ্র করে অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত শিক্ষকের নোংরামীর স্বীকার হয়েছিল উক্ত বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী । সে এই নাবালিকা মেয়ের সাথে অশালীন আচরণ করে এবং তার স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়। এই শিক্ষক এর চরিত্রহীনতার কারণে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের এই বিদ্যালয়ে পড়াতে অনীহা প্রকাশ করেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আন্ধারমানিক মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবুল কালাম আজাদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। আমাদের সংগঠন নিয়ে তাদের সাথে আমার ঝামেলা। তাই তারা আমাকে নিয়ে মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগে যাদের নাম ব্যবহার করা হয়েছে তারা কেউ এই অভিযোগের বিষয়ে জানে না।
আন্ধারমানিক মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক মেহেদী হাসান বলেন, এ বিষয়ে আমার জানা নেই। কেও সরাসরি আমার কাছে অভিযোগ করেনি তাই আমি কিছু বলতে পারছি না।
এ বিষয়ে হরিরামপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মাইনুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করেছি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, এ স্কুলের বিভিন্ন জন বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ দিচ্ছে। এ নিয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার কাজ করছেন।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: