• ঢাকা
  • শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২০ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনির্ভরশীল নেতৃত্বের ছায়ায় 


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: সোমবার, ২০ মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১১:০৫ এএম
অনির্ভরশীল নেতৃত্বের ছায়ায় 
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ২০২৪ সালের নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প ফের ক্ষমতায় আসতে পারেন এবং আরেক দফা দেশটির গণতন্ত্র এবং বিশ্বরাজনীতিতে বিদ্যমান ভূমিকা হুমকিতে পড়তে পারে বলে ওয়াশিংটনের মিত্রদের মধ্যে উৎকণ্ঠা কাজ করছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, বিশ্ববাসী ততই দেশটির অভ্যন্তরীণ ও পররাষ্ট্রনীতির আরেকটি বড় পরিবর্তনের আশঙ্কায় দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।

রাশিয়া ও চীনের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের গৃহীত নীতি সমর্থনে অধিকাংশ দেশরই উদাসীনতা আছে। গত দুই-তিন দশকে মার্কিন প্রশাসন যেভাবে অভ্যন্তরীণ ও পররাষ্ট্রনীতিতে অদলবদল করেছে, আগামী প্রশাসনও যে বিদ্যমান নীতি থেকে উল্টো পথে হাঁটবে না, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। 

বুশ প্রশাসনের 'সাম্রাজ্যবাদী নীতি' থেকে ওবামার 'প্রায়োগিক বাস্তবতার নীতি, ট্রাম্পের আমেরিকা ফার্স্ট শীর্ষক জাতীয়তাবাদ’ থেকে সবশেষ বাইডেনের ‘আমেরিকার স্বমূর্তিতে ফিরে আসার নীতি’ মূলত যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বের পরিবর্তনশীল নীতিকেই তুলে ধরে। 

যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনের নীতিতে স্থিতিশীলতা বিশ্বের জন্যই জরুরি। মস্কো ও বেইজিংয়ে কে ক্ষমতায় বসতে যাচ্ছে, সেটা নিয়ে বিশ্বনেতাদের উৎকণ্ঠায় না থাকলেও তেমন কিছু হবে না, তবে যুক্তরাষ্ট্রে আগামী নির্বাচনে কে প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন, সে বিষয়ে বাস্তব কারণেই সবার ব্যাপক আগ্রহ থাকে। 

যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের মনোনয়ন পাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিস্যান্টিস। এরই মধ্যে ট্রাম্প আগামী নির্বাচনে লড়বেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। আর ডিস্যান্টিস আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই প্রার্থিতার কথা ঘোষণা করবেন বলে মনে করা হচ্ছে। 

অপরদিকে ডেমোক্র্যাটিক দল থেকে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নির্বাচনে দাঁড়াবেন বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচন করার সময় তার বয়স হবে ৮২ বছর। ফলে বয়সের কারণে তিনি নির্বাচন করতে পারবেন কি না, তা নিয়ে কেউ কেউ সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। 

বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত ইস্যু বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়াবে। 

বাইডেন এখন পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট পদ এবং অর্থনীতি ভালোই সামলাচ্ছেন। তবে উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও সম্ভাব্য মন্দা আগামী নির্বাচনে তার সম্ভাবনা নড়বড়ে করে দিতে পারে। এ ছাড়া সম্প্রতি মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে দেশটির সিলভারগেট ক্যাপিটাল, সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক ও সিগনেচার ব্যাংকের মতো কয়েকটি বড় আর্থিক প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হয়ে পড়েছে।  

২০০৮ সালের বৈশ্বিক আর্থিক মন্দার পর এই ঘটনাকেই অভিহিত করা হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক ধস হিসেবে। ফলে বাইডেন প্রশাসন কীভাবে এই পরিস্থিতি সামাল দেন সে দিকেও অনেকের নজর থাকবে। 

ট্রাম্পের কারণে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর ওপর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব অনেক কমে গিয়েছিল, বিপরীতে বাইডেন ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের পর ন্যাটোকে পুনরুজ্জীবিত করতে সফল হয়েছেন। তবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ব্যয়বহুল প্রক্সিযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রকে জড়ানোর বিষয়টি না বাইডেন বা যুক্তরাষ্ট্র কারো জন্যই সুখকর হবে বলে মনে হয় না। 

এদিকে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দলীয় মনোনয়ন পেতে রিপাবলিকান দলের নীতিনির্ধারক ও দলের সদস্যদের মন জয়ে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। দলের ভেতরে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে থাকা নিজের সাবেক মন্ত্রিসভার সদস্য ও প্রেসিডেন্ট প্রার্থী নিকি হ্যালি, মাইক পেন্স ও মাইক পম্পেওকে ঠেকাতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন তিনি। 

২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসতে পারেননি। প্রথম মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর দল নিরেপক্ষ ভোটারসহ সংখ্যাগরিষ্ঠ মার্কিনিদের আস্থা হারিয়েছিলেন তিনি। 

২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটাল হিলের ঘটনার পর ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ভোট দেয়া মার্কিনিরা আরও নিশ্চিত হন তাদের সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল। এর পর থেকে ট্রাম্প একাধিক মামলার মুখোমুখি হয়েছেন, যার মধ্যে কিছু মামলা তার প্রেসিডেন্ট প্রার্থিতাকেও বিপদে ফেলতে পারে।

এদিকে রিপাবলিকান দলে রন ডিস্যান্টিসকে ট্রাম্পের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী বলে মনে করা হচ্ছে। ফ্লোরিডার দুইবারের গভর্নর নির্বাচিত হওয়া এই নেতা ট্রাম্প ও বাইডেন দুজনকেই চ্যালেঞ্জ জানাতে পারবেন বলে মনে করা হচ্ছে। ট্রাম্পের মতো তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি, আর্থিক ও রাজনৈতিক কেলেঙ্কারির অভিযোগ নেই। 

তিনি সোজাসাপ্টা কথা বলেন এবং ট্রাম্পের মতো মিথ্যা বলেন না। তবে তিনি ট্রাম্পের মতোই কঠোর রক্ষণশীলতা প্রচার এবং ‘জনগণের’ নামে দেশব্যাপী উদারপন্থিদের বিরুদ্ধে ‘সাংস্কৃতিক যুদ্ধ’ চালানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। 

ট্রাম্প যে নির্বাচন থেকে পিছু হটবেন এমন কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। বরং দলীয় মনোনয়নে রনের সঙ্গে মুখোমুখি হওয়ার জন্য তিনি প্রস্তুতি নিচ্ছেন। রিপাবলিকানদের এই ধরনের কার্যকলাপ স্বাভাবিকভাবেই বাইডেন শিবিরের জন্য উপকারী হতে পারে। 

এই পরিস্থিতিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হলে বাইডেনের নীতিকে বিদায় দিয়ে তিনি আবার তার ‘মেক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন’ নীতিতে ফিরে যাবেন। আর ডিস্যান্টিস ক্ষমতায় আসলেও ট্রাম্পের সেই ‘মেক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন’ নীতি ফিরবে, তবে তা ট্রাম্পসুলভ নাটকের মধ্য দিয়ে নয়।  

সত্য হলো তারা দুজনই ‘পপুলিস্ট জাতীয়তাবাদী নেতা’ এবং দুজনই বৈশ্বিক গণতন্ত্রের সামনের সারিতে থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্ব দেয়ার বিরুদ্ধে থাকা লোক। তাদের যেকোনো একজন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় বসলে ইউক্রেন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা গুটিয়ে আনার সম্ভাবনা বেশি।  

অপরদিকে বাইডেন ফের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে আমেরিকার গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকতে পারে। সেই সঙ্গে রাশিয়া ও চীনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের লড়াই আরও জোরদার হতে পারে। 

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image