• ঢাকা
  • রবিবার, ২১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ০৬ অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটিতে হামলা ও অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে সমাবেশ


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ০৮:৪০ পিএম
দীপায়ন খীসার সমাবেশ সঞ্চলনা করেন
শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে সমাবেশ

সমর ঘোষ, বিশেষ প্রতিবদেক:  খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটিতে পাহাড়ীদের উপর গুলিবর্ষণ, হত্যা, ঘরবাড়ি, দোকানপাট, ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলা ও অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলন এর উদ্যোগে  রবিবার, শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে সমাবেশের আয়োজন করা হয়। 

পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম সমন্বয়কারী জাকির হোসেন এর সভাপতিত্বে  সমাবেশে লিখিত বক্তব্য পেশ করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম সমন্বয়কারী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. খায়রুল ইসলাম চৌধুরী। সমাবেশে সংহতি বক্তব্য রাখেন সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের কার্যকরী সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, বাংলাদেশ জাসদ এর সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সাংসদ নাজমুল হক প্রধান, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) এর সহকারী সাধারণ সম্পাদক খায়রুজ্জামান লিপন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম প্রমুখ।মানবাধিকার কর্মী দীপায়ন খীসার সমাবেশ সঞ্চলনা করেন ।

অধ্যাপক খায়রুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, পার্বত্য সমস্যার দ্রুত সমাধান ও পাহাড়ীদের শান্তিপূর্ণ নিরাপদ বসবাসের পরিবেশ সৃষ্টির জোড় দাবী জানান। সেই ১৯৭৬ সাল থেকেই পাহাড়ে যেভাবে সমস্যাগুলো বাড়িয়ে তোলা হয়েছে তাতে ক্রমশ পাহাড়ীদের অধিকারকে সংকুচিত করা হয়েছে। ১৯৯৭ সালে রাষ্ট্রের সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়৷আমরা আশা করেছিলাম পার্বত্য সমস্যার সমাধান হবে। কিন্তু চুক্তি সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন না হওয়ায় সেই সমস্যা আজো সমাধান হয়নি৷ কাজেই অবিলম্বে তা বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন করতেই হবে৷  

অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, অনেকেই বলে থাকেন পাহাড়ের আদিবাসীরা বিচ্ছিন্নতাবাদী। আপনারা অনেকেই দেখেছেন পাহাড়ে গত দশ বছর আগেও সেভাবে নেটওয়ার্ক ছিল না৷  পাহাড়ের সমস্যাকে নিরাপত্তার চশমায় না দেখে পাহাড়ীদের চশমা দিয়ে দেখতে হবে। পাহাড়ের সমস্যা সমাধানের জন্য পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের কোনো বিকল্প নেই৷ 

নাজমুল হক প্রধান বলেন, আমাদের একটা সংসদীয় ককাস ছিল। উক্ত সংসদীয় ককাসে পার্বত্য চু্ক্তি বাস্তবায়নের জন্য বার বার বলা হয়েছিলো। কিন্তু পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন করা হয়নি। পাহাড়ী জনগোষ্ঠীদের বিচ্ছিন্নতাবাদী, সন্ত্রাসী বানিয়ে তাদের উপর দমন পীড়ন করা হয়েছে। দমন পীড়ন করে সমস্যার সমাধান হবে না। তাদের সাথে আলোচনা করতে হবে। সরকারকে চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য সকল ধরণের উদ্যোগ নিয়ে পাহাড়ে শান্তি ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানাচ্ছি। 

বাসদের কেন্দ্রীয় নেতা খালেকুজ্জামান লিপন বলেন, দেশে আর মৃত্যুর মিছিল দেখতে চাই না। মব জাস্টিসের নামে আইনের লঙ্ঘন করা বন্ধ করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিকভাবে ফিরিয়ে আনতে হবে। 

বাংলাদেশ কমিউনিষ্ট পার্টির সভাপতি শাহ আলম বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম দীর্ঘদিন অশান্ত ছিলো।  একটি মোটর সাইকেল চোরের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা তৈরী করা হয়েছে।  আমাদের বুঝা উচিত একজন বাঙালী যেমন চাকমা না তেমনি একজন চাকমাও বাঙালী হতে পারেনা। কিন্তু একজন চাকমা, একজন মারমা একজন বাঙালী সবাই মিলে বাংলাদেশী হতে পারি। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির বাস্তবায়ন না হওয়া, ভূমি সমস্যার সমাধান না হওয়ার কারণে সেখানে  সমস্যাগুলো সৃষ্টি হচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের চারপাশে যে ভূরাজনৈতিক টানাপোড়েন হচ্ছে, সে বিষয়টি বিবেচনায় চুক্তির বাস্তবায়ন করা সময়ের দাবী।

তিনি সম্প্রতি ঘটে যাওয়া সকল ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায়  আনার আহ্বান জানান। 

পার্বত্য চুক্তির বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ন সমন্বয়কারী জাকির হোসেন বলেন, বাংলাদেশে যে বিশাল পরিবর্তন হয়েছে তার মাধ্যমে দেশ নতুন করে গঠন হতে হবে। নতুন বাংলাদেশের সূচনায় স্বাস্থ্য, শিক্ষা, প্রভৃতি বিষয়গুলো দ্রুত ঠিক করতে হবে। 

সমাবেশ থেকে নিম্নোক্ত দাবী জানানো হয়

১। অনতিবিলম্বে সংঘটিত ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং অতি দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে ।
২। মানবাধিকার কর্মী ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও দীঘিনালা হামলার জন্য একটা স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করতে হবে।
৩। খাগড়াছড়ি সদর, দিঘীনালা ও রাঙ্গামাটিতে সহিংসতার শিকার পাহাড়ি অধিবাসীসহ তিন পার্বত্যজেলার জুম্ম জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
৪। গুলিতে নিহত হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারবর্গকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ এবং আহতদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৫। জুম্ম জনগোষ্ঠীর ক্ষতিগ্রস্থ বৌদ্ধ বিহার পুনঃনির্মাণ ও দোকানপাট ও বাড়িঘরের মালিকদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
সহ আট দফা দাবী সমাবেশে পেশ করা হয় ।

ঢাকানিউজ২৪.কম / এইচ

আরো পড়ুন

banner image
banner image