• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ; ২৯ মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

ব্রাহ্মণবাড়িয়া হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শফিক এখন কোটিপতি


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৮ জুন, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, ০২:৪৪ পিএম
হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা
খন্দকার শফিকুর রহমান

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিঃ  খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা এ পাঁচটি মানুষের মৌলিক চাহিদা। একটা চাহিদার সাথে অন্যটা ওতপ্রোতভাবে জড়িত রয়েছে। কথায় আছে স্বাস্থ্য-ই সকল সুখের মূল। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য বিভাগটি পরিচ্ছন্ন ও দুর্নীতিমুক্ত রাখতে সরকার নানান পদক্ষেপ নিলেও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কারণে তার আদৌ  সদগতি দেখা যায়নি। যার অন্যতম কারণ শর্ষের ভিতরে ভূত ঢুকেছে। তেমনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের এক তথ্যানুসন্ধানে বের হয়ে এসেছে দুর্নীতির চিত্র। নাম তার শফিক, পুরো নাম খন্দকার শফিকুর রহমান।

তিনি ১৯৮৯ সনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিভিল সর্জন অফিসে হিসাব রক্ষক পদে চাকরিতে যোগ দেন। ২০১৮ সনে পদোন্নতি পেয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে যোগ দেন। দীর্ঘদিন সিভিল সার্জনের হিসাব রক্ষক পদে থেকে নিজস্ব বলয় তৈরি করে সিভিল সার্জন অফিসসহ বিভিন্ন ঠিকাদারদের নিয়ন্ত্রণ করতেন। ঠিকাদারদের কাজ পাইয়ে দিতে তাদের সাথে বেনামে অংশীদারী ব্যবসা শুরু করেন। দীর্ঘ বছর এ পদে থেকে এখন চারটি প্রতিষ্ঠানের মালিক। শহরে জায়গা ও একাধিক ফ্লাটের মালিক, ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় রয়েছে ফ্লাট সেখানে তার স্ত্রী সন্তান বসবাস করছে।

বিশ্বস্ত তথ্যানুসন্ধ্যানে জানা যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের জেলরোডে অবস্থিত সেন্ট্রাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতালে রয়েছে তার একাধিক শেয়ার যার মূল্য ৮০ লক্ষ টাকা, সেন্ট্রাাল সিটিস্ক্যান এন্ড ইমেজিং সেন্টারে রয়েছে ৪টি শেয়ার যার মূল্য ১৬ লক্ষ টাকা, সেন্ট্রাল এম আর আই এ রয়েছে ৫টি শেয়ার যার মূল্য ৪০ লক্ষ টাকা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে অদূরে অবস্থিত ঘাটুরা ইউনাইটেড কেয়ার ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল টেকনোলজি যার শেয়ার মূল্য ১৮ লক্ষ টাকা, মোন্সেফপাড়া রয়েছে ফ্লাট যার ক্রয় মূল্য ৬০ লক্ষ টাকা, ঢাকা বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ফ্লাট যার ক্রয় মূল্য ৮৫ লক্ষ টাকা।

এ আর এমন কিছু নয়!

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের একাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারী জানান, খন্দকার শফিকুর রহমান ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিভিল সার্জন অফিসে দীর্ঘবছর হিসাব রক্ষণ পদে বদলীবিহীন থাকায় সিভিল সার্জন অফিসে তার নিজস্ব বলয়ে রাজত্ব তৈরি করেছে। তার রাজত্বে সিভিল সার্জনও ধরাশায়ী থাকেন। যখন যে দল ক্ষমতায় আসে তখন সে দলের শীর্ষস্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিদের ছত্রছায়ায় থেকে তার দুর্নীতির আখড়া বানিয়েছে। তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলার সাহস করেনা।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা খন্দকার শফিকুর রহমান বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমি ২০১৬ সনে হজ্জ্ব করেছি। হজ্জ্ব করে আসার পর থেকে এই পর্যন্ত কারো কাছ থেকে এক কাপ চা-ও খাইনি। এখন আমি কোন প্রকার দুর্নীতির সাথে সম্পৃক্ত নই। প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পৃক্ত থাকার কথা বল্লে তিনি বলেন, এসব সম্পদ বেলজিয়াম প্রবাসী আমার শ্যালক আনোয়ার পারভেজের। আমি এগুলো শুধু দেখাশুনা করি। উল্লেখিত সম্পদের মালিকানা আপনার স্ত্রী মিন্নাত আরা সেহেলীর নামে দলীল করা হয়েছে এমন প্রমানাধী উল্লেখ করা হলে তিনি বলেন, আমার শ্যালক তার বোনের নামে দিয়েছে। আপনার শ্যালক তার সম্পদের মালিকানা আপনার শশুর শাশুড়ি বা তার স্ত্রীর নামেও দিতে পারতেন এমন প্রশ্নে তিনি নিশ্চুপ থাকেন। আপনি বিভিন্ন সময় অফিস থেকে অসময়ে বের হয়ে নিজের ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানে সময় ব্যয় করেন! তিনি বলেন, আমি আমার অফিসের স্যারের কাছ থেকে ছুটি নিয়ে আমার ব্যক্তিগত কাজে জড়িত হই।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক  ডা. মোহাম্মদ ওহীদুজ্জামান বলেন, আমি এখানে বদলি হয়ে আসার পর দেখেছি এখানে খুবই অনিয়ম ও উচ্ছৃঙ্খলতা। আমি গত এক বছরে এসব অনিয়ম ও উচ্ছৃঙ্খলতা নিয়ম ও শৃঙ্খলতায় এনেছি। আমার হাসপাতালে এখন অধিকাংশই নিয়মে চলে এসেছে। যথাসময়ে অফিসে প্রবেশ এবং যথাসময়ে অফিস থেকে বাহির হচ্ছে কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ। অফিসের কে বাহিরে কে কী করছে সেটা আমার দেখার এখতিয়ার নেই। তবে আমার হাসপাতাল বিষয়ক এমন অনিয়মের তথ্য থাকলে আপনারা প্রকাশ করুন আমি এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব।

ঢাকানিউজ২৪.কম / মনিরুজ্জামান মনির/কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image