• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ১৮ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

কক্সবাজারে উন্মুক্ত কারাগার নির্মাণ বন্ধের দাবি সবুজ আন্দোলনের


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: রবিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, ০৩:৫৬ পিএম
 উন্মুক্ত কারাগার নির্মাণ বন্ধের দাবি
সবুজ আন্দোলন

ডেস্ক রিপোর্টার : ১৮ সেপ্টেম্বর পরিবেশবাদী সংগঠন সবুজ আন্দোলন কক্সবাজারের উখিয়া ও রামুতে পাহাড়-টিলা-ঝর্ণা সমৃদ্ধ রক্ষিত বনভূমিতে উন্মুক্ত সড়ক ও কারাগার নির্মাণ প্রকল্পের কার্যক্রম বন্ধ করতে গণমাধ্যমে বিবৃতি প্রকাশ করেন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালনা পরিষদের চেয়ারম্যান বাপ্পি সরদার।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, যেখানে সারা বাংলাদেশে পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলায় জনসচেতনতা তৈরিতে সোচ্চার ভূমিকা পালন করছে সেখানে কক্সবাজারে পরিবেশ ধ্বংসের জন্য নতুন যে প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভুল সিদ্ধান্ত। এ ক্ষেত্রে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব এর দায় এড়াতে পারেন না। আমাদেরকে মনে রাখতে হবে রক্ষিত ও সংরক্ষিত বনভূমিতে গৃহীত ও আগামীতে কোন প্রকল্প নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হবে।

কক্সবাজারের গভীর বন অঞ্চল ধ্বংস করলে সরকারের  কারা অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী, বিভাগীয় কমিশনার, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক, বন সংরক্ষক চট্টগ্রাম, এলজিইডি কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উখিয়া ও রামু, সহকারী কমিশনার (ভূমি) উখিয়া ও রামু, পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজারের পরিচালক এবং কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তাদের এর দায়ভার নিতে হবে।

কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলার পাগলিরবিল মৌজার আরএস ৬০২ দাগসহ বিভিন্ন দাগের পাহাড়/টিলা শ্রেণীর ভূমিকে গেজেট নোটিফিকেশন মূলে ১৯৩৫ সালে রক্ষিত বনভূমি হিসেবে ঘোষণা করে সরকার। এরপর থেকে বন বিভাগ গেজেটভূক্ত বনভূমিতে বনায়ন ও ব্যবস্থাপনা করে আসছে। কিন্তু ভূমি মন্ত্রণালয় 'উন্মুক্ত কারাগার' নির্মাণে ১৬০ একর পাহাড় শ্রেণীর রক্ষিত বনভূমি কারা অধিদপ্তরের নামে বন্দোবস্ত প্রদান করে। কারা কর্তৃপক্ষ সেখানে সীমানা নির্ধারনে কাজ করছে।  অথচ এটি বৈলাম, গর্জন, জাম, তেলসুর, চাপালিশ, আকাশমণি, গামারি, আছারগোল, ডুমুর, মোস, কড়ই, বাটনা, ভাদি, বহেরা, বটসহ বিভিন্ন প্রজাতির ছোট বড় লক্ষাধিক গাছ সমৃদ্ধ এক বনাঞ্চল। এ ছাড়া এশিয়ান হাতি, অজগর, হরিণ, বানর, শিয়াল, সাপ, শজারু, শূকরসহ বিভিন্ন প্রজাতির বন্য প্রাণী ও পাখির আবাসস্থল। অপরদিকে কক্সবাজারের রামুতে সংরক্ষিত বনে শহীদ এটিএম জাফর আলম মাল্টিডিসিপ্লিন একাডেমি থেকে মেরিন ড্রাইভ পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। এটিও একটি সমৃদ্ধ বনাঞ্চল এবং সংরক্ষিত বনভূমি।

সবুজ আন্দোলনের চেয়ারম্যান আরও বলেন, পাহাড়-টিলা, ছড়া, বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্যে ভরপুর উক্ত বনভূমিতে 'উন্মুক্ত কারাগার' এবং রাস্তা নির্মিত হলে বনাঞ্চল বিলুপ্ত হবে। একইসাথে আশপাশের বিস্তীর্ণ বনাঞ্চলের জন্য ঝুঁকি এবং প্রাকৃতিক বাস্তুতন্ত্র বিপন্ন হবে।

প্রকৃতি রক্ষায় সংরক্ষিত ও রক্ষিত বনভূমিতে গৃহীত প্রকল্পের কার্যক্রম বন্ধ, উক্ত ভূমি কাউকে বন্দোবস্ত না দেয়া, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং সকল শ্রেণির বনভূমি সংরক্ষনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানানো হয়। ইতোমধ্যে 'উখিয়া-টেকনাফে এমনিতেই হাজার হাজার একর বনাঞ্চল রোহিঙ্গাদের কারণে ধ্বংস করা হয়েছে। তার উপর যাতায়াতের নামে সংরক্ষিত বনের বুক মধ্য দিয়ে রাস্তা তৈরি ও উন্মুক্ত কারাগার নির্মিত হলে নির্বিচারে বনাঞ্চল উজাড়, বনভূমি জবরদখল, হাতির বিচরণ ক্ষেত্র ও বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল ক্ষতিগ্রস্থ হওয়াসহ উক্ত এলাকার পরিবেশ ও প্রতিবেশ মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে।  যার কারণে রক্ষিত ও সংরক্ষিত বনভূমি সংরক্ষণে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হবে। আগামী ১ মাসের মধ্যে কার্যক্রম বন্ধ না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image