আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইউরোপে গ্যাস সরবরাহের মূল পাইপলাইন নর্ড স্ট্রিম এজি দিয়ে সোমবার সকাল থেকে আর গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে না। একারণে ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে রাশিয়া।
নর্ড স্ট্রিম এজির ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পাইপলাইনে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলছে। এই কাজ করতে সময় লাগবে ১০ দিন। যতদিন এই রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলবে, ততদিন এ পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে।
রুশ সংবাদমাধ্যম আরটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গ্যাস সরবরাহ বন্ধের আগে সব অংশীদারকে জানানো হয়েছে বলে দাবি করেছে নর্ড স্ট্রিম এজির ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ।
ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযানের প্রেক্ষাপটে রাশিয়ার ওপর একের পর এক অবরোধ আরোপের জবাবে প্রাকৃতিক গ্যাসকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে রাশিয়া।
রাশিয়ার গ্যাস সরবরাহ কমে যাওয়ায় চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো। সেখানে গ্যাসের দাম বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। সেই হাওয়া লেগেছে বিশ্বের অন্যান্য দেশেও।
রাশিয়ার গ্যাস উত্তোলন ও বিতরণকারী সরকারি কোম্পানি গ্যাজপ্রমের একটি প্রকল্প নর্ড স্ট্রিম এজি পাইপলাইন। এ পাইপলাইনের মাধ্যমে বাল্টিক সাগরের তলদেশ দিয়ে জার্মানিতে গ্যাস সরবরাহ করে রাশিয়া; পরে জার্মানির কাছ থেকে সেই গ্যাস ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন দেশে পাঠানো হয়। ২০০৫ সাল থেকে চালু হয় এই প্রকল্প।
গত মাসে রাশিয়া জার্মানিতে সরবরাহ করা গ্যাসের পরিমাণ ৬০ শতাংশ কমিয়ে দেয়। তখন বলা হয়, টারবাইনে সমস্যা থাকার কারণে গ্যাসের প্রবাহ কমে গেছে।
সে সময় গ্যাজপ্রম দাবি করে, টারবাইন মেরামতের জন্য কানাডার একটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে। কিন্তু সেই কোম্পানি ঠিক সময়ে টারবাইন মেরামত করতে পারেনি।
তবে সে সময়ই জার্মান অর্থনীতি মন্ত্রী রবার্ট হ্যাবেক দাবি করেছিলেন, এটি একটি ‘রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত’।
জার্মানির ফেডারেল নেটওয়ার্ক এজেন্সির প্রধান ক্লাউস ম্যুলার শঙ্কা প্রকাশ করে বলেছিলেন, এমন হতে পারে যে, রাশিয়া নর্ড স্ট্রিম-১ পাইপলাইন দিয়ে গ্যাসের সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ করে দিতে পারে।
সন্দেহ প্রকাশ করে তিনি বলেছিলেন, গ্যাস লাইনটিকে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের জন্য যে ১০ দিন সময় প্রয়োজন তা দীর্ঘায়িত করতে পারে রাশিয়া। আর তা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হতে পারে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এর পর থেকেই পশ্চিমাদের বাধা উপেক্ষা করে পূর্ব ইউরোপের দেশটিতে চলছে রুশ সেনাদের সামরিক অভিযান।
ইউক্রেনকে ‘অসামরিকায়ন’ ও ‘নাৎসিমুক্তকরণ’ এবং দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের রুশ ভাষাভাষী বাসিন্দাদের রক্ষা করার জন্যই এমন সামরিক পদক্ষেপ বলে দাবি করে আসছে রাশিয়া। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়, সম্পূর্ণ বিনা উসকানিতে রাশিয়া হামলা চালিয়েছে। দেশটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়ে আসছে।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: