• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ; ২৮ মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস, ফাগুনে আগুন


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৪ ফেরুয়ারী, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ০৪:৩০ পিএম
ছাত্র জনতার মিছিল
ছাত্র জনতার মিছিল পুলিশি বাধার মুখে।

মোহাম্মদ রুবেল

আজি দখিন-দুয়ার খোলা, / এসো হে, এসো হে, এসো হে আমার বসন্ত এসো। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এভাবেই বসন্তকে স্বাগত জানিয়েছিলেন। সেই কালের পরিক্রমায় আজ পহেলা ফাগুন। রঙে রাঙানো বসন্ত। আহা! কী আনন্দ আকাশে-বাতাসে। অথচ ১৯৮৩ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ ফেব্রুয়ারি আজকের এইদিনে ফাগুনে আগুন, প্রতিবাদী ছাত্র সমাজের বুকের রক্তে কৃষ্ণচূড়া ফুলগুলির মতো ঢাকার কালো রাজপথকে রক্তিম করে তুলেছিল। পুলিশের গুলিতে ঝড়ে ছিলো দিপালী সাহা, জাফর, জয়নাল, মোজাম্মেল, আইয়ূব কাঞ্চনসহ নাম না জানা অসংখ্য তাজা প্রাণ। সেই থেকে আজকের এই দিনটিকে স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস পালন শুরু হয়।

সেই সময় এদেশের ছাত্র সমাজ জাতির কাঁধে চেপে বসা সামরিক শাসকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের এক ইতিহাস সৃষ্টি করেছিল, বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছিল। আজ সেই দিনে উড়ে এসে জুড়ে বসা বিশ্ব ভালোবাসা দিবস নিয়ে মেতে আছে তরুণসমাজ। তথাকথিত এ দিবস পালনের চাপে ভুলতে বসেছে কলঙ্কময় সেই দিনের কথা। আবার অনেকে সেই দিনের ইতিহাসও জানেনা।  

আসুন এবার অনেকের না জানা সেই সৈরাচার প্রতিরোধ দিবস সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক কিছু তথ্য-

স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস :

১৯৮২ খ্রিষ্টাব্দে শিক্ষামন্ত্রী ড.মজিদ খান তৎকালীন সামরিক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ সরকারের আমলে একটি শিক্ষানীতি প্রণয়ন করেন। ঘোষীত নীতিতে ছিলো বাণিজ্যিকীকরণ ও ধর্মীয় প্রতিফলন। এরই প্রতিবাদে জ্বলছে উঠে ছাত্র সমাজ। তারই প্রেক্ষিতে ওই বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে একমত হয় সকল ছাত্র সংগঠন গুলো। পরবর্তীতে সেই শিক্ষানীতির বিরোধীতা করে একটি অবৈতনিক বৈষম্যহীন শিক্ষানীতির দাবিতে রাজপথে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা।

তারই ধারাবাহিকতায় শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে ১৯৮৩ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ শিক্ষার্থীদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচী অনুযায়ী প্রতিবাদি সমাবেশ ঢাকে। সমাবেশও চলছিল। সমাবেশ শেষে সচিবালয়ে স্মারকলিপিও দেওয়ার কথা ছিল। অথচ তার আগেই পুলিশ কোনো রকম উসকানি ছাড়াই ছাত্রদের ওপর হামলা করে বসে। প্রথমে টিয়ারগ্যাস আর জল কামান ছোড়ে। ছাত্ররাও হাতের কাছে যা ছিল তাই দিয়ে পাল্টা আক্রমণ করে। এক পর্যায়ে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করলে ছাত্ররা ব্যারিকেড ভেঙে যাবার চেষ্টা করে। তখন পুলিশ ছাত্রদের ওপর বেয়নেট চার্জ করে এবং গুলি চালায়। এতে অনেক মানুষ মারা যায়। ঠিক তখন থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারি দিনটিকে ‘স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস’ হিসেবে পালন শুরু হয়।

ধারণা করা হয় প্রায় ৫০ জনের বেশি মানুষ সেদিন মারা যায়। পুলিশ সবগুলো লাশ গুম করে ফেলে। সেদিনের পর জাফর, কাঞ্চন, দিপালী সাহা নামের একটি ছোট বাচ্চাসহ অনেকে নিখোঁজ হয়ে যায়। তাদের স্বজনরা অনেক খোঁজাখুঁজি করেও আর কোনো খোঁজ পাননি। এর মধ্যে দুজনের মৃতদেহ পাওয়া যায়। জয়নাল নামের একজনের মৃতদেহ শিক্ষার্থীরা ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষনা করে। পরে জয়নাল ছাড়াও মোজাম্মেল আইয়ুব নামের আরেকজনের মৃতদেহ পাওয়া যায়। কিছুদিন পর সরকার একটি ঘোষণা দিয়ে শিক্ষানীতিটি স্থগিত করে।

ঢাকানিউজ২৪.কম / এম আর

আরো পড়ুন

banner image
banner image