নিউজ ডেস্ক : এবার স্থানীয় সরকারের আওয়ামী লীগের সাজানো সাম্রাজ্যও তছনছ হয়ে গেছে। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গতকাল সোমবার প্রায় সব পর্যায়ের শীর্ষ ১ হাজার ৮৭৭ জনপ্রতিনিধিকে একযোগে বরখাস্ত করা হয়েছে। দেশের ইতিহাসে এ ঘটনা নজিরবিহীন। দ্রুততার সঙ্গে আইন সংশোধন করে সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার মেয়র, উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে অপসারণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে স্থানীয় সরকার বিভাগ। তবে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। মেয়ররা বাদ পড়লেও পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর এবং জেলা পরিষদের সদস্যরা যথারীতি দায়িত্ব পালন করে যাবেন। এরই মধ্যে স্থানীয় সরকারের শীর্ষ পদগুলোতে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
সিটি করপোরেশনের মেয়রদের বরখাস্ত করে প্রশাসক বসানো হয়েছে । পৌরসভা, উপজেলা পরিষদে নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা পরিষদে জেলা প্রশাসককে (ডিসি) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। একমাত্র জেলা পরিষদ ছাড়া বাকি তিন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত। অবশ্য যেসব নির্বাচনে তারা বিজয়ী হয়েছিলেন, সেসব ভোটের স্বচ্ছতা ও ভোটার অংশগ্রহণ নিয়ে রয়েছে নানা প্রশ্ন।
এসব জনপ্রতিনিধির হাতেগোনা কয়েকজন ছাড়া সবাই আওয়ামী লীগের নেতা ও অনুসারী। এ তিনটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সিটি করপোরেশনগুলোর বেশির ভাগের মেয়াদ আগামী ছয় থেকে সাত মাসের মধ্যে শেষ হবে। পৌরসভার মেয়াদও আগামী বছরের প্রথমার্ধে শেষ হওয়ার কথা ছিল। শুধু ৪৯৪ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন কয়েক মাস আগে শেষ হয়।
সিটি করপোরেশনের প্রশাসকের দায়িত্ব পেলেন :
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. মহ. শের আলী, ঢাকা উত্তর সিটিতে স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মাহমুদুল হাসান, নারায়ণগঞ্জ সিটিতে স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এ এইচ এম কামরুজ্জামান এবং কুমিল্লা সিটিতে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির মহাপরিচালক সাইফ উদ্দিন আহমেদ প্রশাসকের দায়িত্ব পেয়েছেন। অন্য সিটি করপোরেশনে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কমিশনারদের প্রশাসকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার ভাষ্য
স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ বলেন, জেলা ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনের মেয়রদের অপসারণ করা হলেও কাউন্সিলর ও ইউনিয়ন পরিষদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। প্রশাসক থাকলে কাউন্সিলররা দায়িত্ব পালন করবেন কি করবেন না, সেটা এখন তাদের ব্যাপার। মূল কথা হচ্ছে, মেয়র ও চেয়ারম্যানের জায়গায় প্রশাসক দায়িত্ব পালন করবেন। আমরা ধারাবাহিকভাবে কাজ করব। এখানে মারমার কাটকাটের কোনো বিষয় নেই। এটি স্থানীয় সরকারকে পরিচ্ছন্ন করার একটি প্রচেষ্টা।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: