মিঠামইন, কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি : কোরবানির ঈদের আর মাত্র ৬ দিন। মিঠামইনে মঙ্গলবার ৫ই জুলাই কোরবানি ঈদের পশু বেছাকেনার শেষ হাট। ঈদের পূর্বে বিশেষ কোনো পশুর হাট বসবে কিনা এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি জানিয়েছেন ইজারাদার গণ। সম্প্রতি বন্যার কারণে হাওরের ইটনায় মিঠামইন ও অষ্ট্রগ্রাম উপজেলায় বিভিন্ন গ্রামের পানি বন্দি মানুষ বন্যার সময় গবাদিপশু, ছাগল, ভেড়া পানির দামে বিক্রি করে ফেলেছে।
এক শ্রেণির গরু ব্যবসায়ীরা বন্যার সময় প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ইঞ্জিন চালিত ট্রলার নিয়ে গ্রামে গ্রামে গিয়ে পানি বন্দি অসহায় কৃষকদের নিকট থেকে খুব কম মূল্যে গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া কিনে নিয়ে যায়। এসকল বেপারীরা কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে বাজারে চড়ামূল্যে এসকল গবাদিপশু বিক্রি করছে।
যাদের কোরবানি দেওয়ার মত সামর্থ্য রয়েছে তারা বাধ্য হয়ে চড়ামূল্যে কোরবানি পশু ক্রয় করছে। গরু মহিষের পাশাপাশি ছাগল ভেড়ার আমদানিও প্রচুর কিন্তু বিক্রেতারা দাম হাঁকছেন চড়ামূল্যে। যারা বন্যার মধ্যে খুব কষ্ট করে গবাদিপশুদের আগলে রেখেছেন তারা এখন কিছুটা দাম পাচ্ছেন।
এরপরও গবাদিপশুর লালনপালনে সময় মত বন্যার কারণে খাবার দিতে না পারায় অনেক পশুর আকার ছোট হয়ে আসছে বাজারে এসকল পশুর চাহিদা কম কৃষকরা জানান, বন্যার সময় সঠিক ভাবে পশুর খাবার জোগার করতে ব্যর্থ হয়েছেন। কারণ খড়ের গাদা পানিতে তলিয়ে রয়েছে। খাবার সংগ্রহ করা খুব কঠিন উঁচু জায়গা না থাকায় পানির উপরেই খুব কষ্ট করে এদের লালন পালন করতে হয়েছে।
মিঠামইন বাজারের পশুর হাটের ক্রেতা নাজমুল মিয়া জানান, তার বাড়ি হবিগঞ্জ জেলার লাখাই গ্রামে তিনি কোরবানির জন্য ৪ টি গরু কিনেছেন ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা।বন্যা না থাকলে ৪ টি গরুর মূল্য হত আড়াই লক্ষ টাকা। যেসকল গরু বন্যার কারণে বিক্রি করে ফেলেছে ঐ সকল ক্রেতারা বাজারে এখন চড়ামূল্যে গরু বিক্রি করছে। নান্দাইল এলাকার বেপারী সুন্দর আলী জানান, ভারতীয় গরুর আমদানী না হওয়ার কারণে গরুর মূল্য চড়া।
এছাড়াও বন্যার কারণে হাওরের অনেক এলাকায় কৃষকরা তাদের গবাদিপশু বিক্রি করে ফেলেছে। এবছর গরুর সংখ্যা কম থাকায় মূল্য একটু বেশি। উপজেলার হেমন্তগঞ্জের রাজা মিয়া জানান, বন্যার পানিতে ঘর বাড়ির সাথে গোয়ালগরু পানির তলে গেছে, গরুর বন পানির তলে পঁচতাছে নিজে না খাইয়া হাওর থাইক্কা কচুরিপানা আইন্না গরুর যতন করছি কোরবানির সময় বেচবার লাগি।আজ মঙ্গলবার গরুডা মিঠামইন বাজারে আনছি ৬৫ হাজার টেহা পাইছি। দাম ভালা হইছে।
অপর কৃষক অষ্ট্রগ্রামের কলিমপুর নতুন হাটির তিনি বলেন ১০ টা গরু বেইচ্ছা দিছি, কম দামে বন্যার লাগি খাওন দিতাম পারছি না।
অহন ২ গরু দাম দিয়া ১ গরু কিনছি ৪ জনে মিল্লা কোরবানির লাগি।কি করুম গরুর খাওন দিতাম পারছি না। বেইচ্ছা দিছি পানির দামে।গরু পালমু, না খাইয়া বাচুম হেই সময় হেই চিন্তা করছি। এমন অনেক কৃষক রয়েছে। যারা বন্যার সময় গরু বিক্রি করছে। তারা এখন বাজারে এসে গরু দাম শুনে মাথা চাপড়াচ্ছেন কেহ কেহ গরু না কিনে ছাগল বেড়া কিনে নিচ্ছেন।
ক্রেতারা জানান, ঈদের আগে যদি বাজার না পায় এর জন্য চড়ামূল্যেই গরু কিনতে হচ্ছে। মিঠামইন থানার ওসি কলিন্দ্র নাথ গোলদার জানান, পশুর হাটে পুলিশের কড়া নজরদারি রয়েছে।
পকেট মার ও জাল নোট চক্রের নিকট থেকে সাবধান থাকার পরামর্শ দেন ক্রেতাদের।তিনি পুলিশের সাহায্য নেওয়ার জন্য সকলকে আহ্বান জানান। টাকা পয়সা নিজ নিজ দায়িত্বে সাবধানে রাখবেন।কোনো সন্দেহ ভাজনকে পুলিশের হাতে ধরিয়ে দিবেন।
ঢাকানিউজ২৪.কম / বিজয়কর রতন/কেএন
আপনার মতামত লিখুন: