• ঢাকা
  • শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২০ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

বঙ্গবন্ধুর মৃত্যু বার্ষিকী পালন করতে গিয়ে গ্রেফতার কুলিয়ারচরের আসাদ মিয়া 


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: সোমবার, ১৫ আগষ্ট, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, ১২:৪০ পিএম
বঙ্গবন্ধুর বার্ষিকী পালন  গ্রেফতার হয়েছিলেন কুলিয়ারচরের আসাদ মিয়া
প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদ মিয়া

ভৈরব প্রতিনিধি, কিশোরগঞ্জ : ভৈরবে বঙ্গবন্ধুর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী পালন করতে গিয়ে সেদিন গ্রেফতার হয়েছিলো ২২জন। সেদিন মিলাদ দোয়া কোরআন খতম পড়ানো ছিল তাদের অপরাধ। স্মৃতিময় সেই দিনটি ছিল ১৯৭৬সালের ১৫ আগস্ট ভৈরব আশুরঞ্জন ছাত্রাবাসে আয়োজন করা হয় মিলাদ দোয়ার। 

স্থানীয় যুবলীগ, ছাত্রলীগের কয়েক নেতাকর্মী এই আয়োজনটি করেছিল।এ দিন বিকালে ৩টায় ছাত্রবাসে মৌলভীরা কোরআন খতম শুরু করে তার কিছুক্ষণের মধ্যে একদল পুলিশ এসে ছাত্রবাসটি ঘেরাও করে ফেলে। 

পরে, মিলাদ মাহফিলে নেতৃত্বদানকারী ২২জনকে বন্দুকের বাঁট দিয়ে পেটাতে লাগলো পুলিশের নিযার্তনে সেদিন অনেকেই রক্তাক্ত ও আহত হয়ে। পরে মৌলভীদের সহ ২২জনকে আটক করে ভৈরব থানায় নিয়ে যায় ১৯৭৬সালে ক্ষমতায় ছিল সামরিক সরকার। 

তখন সমারিক সরকারের নির্দেশে গ্রেফতার করা হয় বলে জানা যায়। সেদিন মুজিবসেনারা গ্রেফতার হয়েছিলেন তারা হলেন তৎকালীন থানা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা এড.ফখরুল আলম আক্কাছ,হাজী আসমত কলেজের তৎকালীন সাবেক ছাত্রনেতা সাবেক আনসার ভিডিপি'র সহকারী অ্যাডজুটান্ট (অব.)প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা মো.আসাদ মিয়া, সাংবাদিক আসাদুজ্জামান ফারুক রহুল আমিন,মাহবু্ব,মতিউর রহমান, মফিজুর রহমান, মোশারফ হোসেন(জজ মিয়া), জিল্লুর রহমান জিল্লু, আতাউর রহমান, আসাদুল হক শিশু, ফিরোজ মিয়া, দিলীপ চন্দ্র সাহা ও তার ভাই দিজেন্দ্র চন্দ্র সাহা, ফয়জুল রহমান, আব্দুল হামিদ, ইদ্রিছ মিয়া,মাহবুব আলম, রসরাজ সাহা, সুবল চন্দ্র ধর শাহাজালাল হোসেন ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আজমল ভূইঁয়া।থানায় নেওয়া পর ১২জন মৌলভী মুছলেকা নিয়ে পুলিশ তাদের ছেড়ে দেই। সেইদিন ২২জন মুজিবসেনা গ্রেফতার হলেও তাদের মধ্যে অন্যতম কুলিয়ারচরের প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদ মিয়াকে কেউ স্মরণ করে না ।

এজন্য দুঃখ প্রকাশ করেন তার একমাত্র ছেলে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা অধিদপ্তর এর মাঠ কর্মকর্তা রাসেল রায়হান বলেন,আমার বাবা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং বঙ্গবন্ধুর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী পালন করতে গিয়ে গ্রেফতার হয়েছিলেন কিন্তু অত্যান্ত  দুঃখের বিষয় যখনি ১৫ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস আসে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয় কিন্তু আমার প্রয়াত বাবা কুলিয়ারচরের সেই আসাদ মিয়ার নাম বা ছবি আসে না, এমনকি আমার বাবা ৭১রে রনাঙ্গণের বীর সেনালী হয়েও তাঁর নামের পাশে বীর মুক্তিযোদ্ধা পর্যন্ত ব্যবহার করা হয় না। 

যা খুবই দুঃখের বিষয়!  কিন্তু আমার কাছে সবচেয়ে বড় গর্ব হলো আমি একজন মুজিব সেনা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদ মিয়ার সন্তান। এছাড়াও আসাদ মিয়ার ছোট ভাই রাশেদ মিয়া জানান,আমার ভাইকে যখন এ মামলায় কারাগারে যেতে হয় তখন তাকে নিমর্ম ভাবে অত্যাচারের কারণে কারাগার থেকে ফিরে এসে আমার ভাই পাগলের মতো হয়ে গিয়েছিলো। 

কারো সাথে কোনো কথা বলতেন না সারাক্ষুণ শুধু নিশ্চুপ হয়ে বসে থাকতেন। আজ তখনই দেখি আগস্ট মাস আসে সেই মামলার সব আসামীদের ছবি সহ বর্ণমালা সাজিয়ে অনেক লেখালিখি হয় কিন্তু আমার ভাইয়ের নাম বা ছবি দেয়া হয় না। তখন অনেক কষ্ট লাগে মনে! 

মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদ মিয়ার পারিপারিক  ইতিহাস তুলে ধরা হলো, প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদ মিয়া ছিলেন বাংলাদেশ আনসার ভিডিপি'র সাবেক সহকারী অ্যাডজুটান্ট, তিনি কিশোরগঞ্জ জেলার  কুলিয়ারচর উপজেলার মৃত আব্দুল হেলিম মিয়ার ছেলে তাঁর আরেক সহোদর ভাই কুলিয়ারচর উপজেলা বীর কাসিম নগর ইউনিয়নের ১ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত আবু সাদেক (সাদু মেম্বার) এবং তাদের আপন মামা ছিলেন ভৈরবের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ৩নং সেক্টরের গ্রুপ কমান্ডার ও বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত ছিদ্দিকুর রহমান সেন। প্রয়াত আসাদ মিয়ার আপন মামাতো ভাই আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ভৈরব উপজেলা শাখার সংগ্রামী সভাপতি ও প্রতিযশা সাংবাদিক এম. আর.সোহেল এবং চট্রগ্রাম রিজিয়নের ট্যাুরিস্ট পুলিশ সুপার আপেল মাহমুদ। আসাদ মিয়ার এক ভগ্নিপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত আব্দুল কাদির মিয়া,বলতে গেলে মুজিব সেনা আসাদ মিয়ার পুরো পরিবারটি ছিলো আওয়ামী লীগের রাজনীতির জন্য একটি নিবেদিত প্রাণ।

এই মুজিব সৈনিক আসাদ মিয়া গত কয়েক বছর আগে বার্ধক্য জনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ১ছেলে ১মেয়েসহ অসংখ্যগুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

ঢাকানিউজ২৪.কম / সোহানুর রহমান (সোহান)/কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image