
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভয়াবহ ভূমিকম্পে তুরস্ক ও প্রতিবেশী সিরিয়ায় মৃত্যুর সংখ্যা ৪৬ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। ভূমিকম্পে বহু মানুষ এখনও নিখোঁজ থাকায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত তুরস্কে মোট ৪০ হাজার ৬৪২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এতে এটি আধুনিক তুরস্কের ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী প্রাকৃতিক দুর্যোগে পরিণত হয়েছে। ভূমিকম্পে দেশটিতে প্রায় ২ লাখ ৬৪ হাজার অ্যাপার্টমেন্ট ভবন ধসে পড়ায় এবং বহু মানুষ নিখোঁজ থাকায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে ধারণা।
প্রতিবেশী সিরিয়ায় মৃতের সংখ্যা ৫ হাজার ৮০০ ছাড়িয়ে গেছে। কয়েকদিন ধরে দেশটিতে মৃতের সংখ্যা একই আছে। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধের কারণে সিরিয়ার পরিস্থিতি আগেই থেকেই নাজুক ছিল, ভূমিকেম্পে তা আরও গুরুতর আকার ধারণ করেছে।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি ভোররাতের ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ওই ভূমিকম্পের কয়েক ঘণ্টা পর কাছেই ৭ দশমিক ৫ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্প হয়। এই দুই ভূমিকম্পের ফলে হাজার হাজার ভবন ধ্বংস হয়ে দেশ দুটির প্রায় লাখো মানুষ আহত, লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়।
প্রচণ্ড ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় ধ্বংসস্তূপের নিচে এত দিন ধরে আটকে থাকা সত্ত্বেও জীবিত লোকদের খুঁজে পাওয়ার আশা ছাড়া হয়নি। উদ্ধারকর্মীরা প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। তবে গত কয়েক দিনে ধীরে ধীরে জীবিত উদ্ধারের সংখ্যা কমে এসেছে। এ সময় হাতে গোনা কিছু লোক জীবিত উদ্ধার হয়েছে।
গত শুক্রবার তুরস্ক ও সিরিয়ার নিহতদের জন্য বিশ্বব্যাপী গায়েবানা জানাজা পাঠ করা হয়। দুর্যোগের ব্যাপকতার কারণে বহু নিহতকে দাফন অনুষ্ঠান ছাড়াই কবর দেওয়া হয়েছে, অনেকে ধ্বংসস্তূপের নিচে চিরতরে চাপা পড়েছেন।
বহু আন্তর্জাতিক উদ্ধারকারী দল ভূমিকম্প বিধ্বস্ত বিশাল অঞ্চলটি থেকে চলে গেলেও সব প্রতিকূলতা ছাপিয়ে জীবিতরা এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে থেকে বের হয়ে আসছেন।
ভূমিকম্পের ২৭৮ ঘণ্টা পর তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ হতাইয়ে একটি ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে হাকান ইয়াসিনোলু নামের চল্লিশোর্ধ এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে ইস্তাম্বুলের দমকল বাহিনী জানিয়েছে।
এর আগে তুরস্কের ঐতিহাসিক শহর আন্তাকিয়ায় ওসমান হালেবিয়ে (১৪) ও মুস্তফা আভিজেয়িকে (৩৪) উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারের পর মেরসিন শহরের এক হাসপাতালে স্ত্রী বিলগে, কন্যা আলমিলের সঙ্গে মিলন হয় তার; বাবা-মায়ের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা হয় তার।
আভিজেয়ির বাবা বলেন, আমি আশা পুরোপুরি ছেড়ে দিয়েছিলাম। এটা সত্যিই অলৌকিক ঘটনা। তারা আমার ছেলেকে ফিরিয়ে দিয়েছেন। আমি ওই ধ্বংসাবশেষ দেখেছি। সেখানে থেকে কেউ বেঁচে ফিরতে পারবে না বলে ভেবেছিলাম আমি।
তুরস্কের ধ্বংসস্তূপ থেকে আরও মানুষ উদ্ধার হতে পারেন বলে আশা বিশেষজ্ঞদের।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: