• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ১৬ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্রের এমন বিরোধ আগে দেখা যায়নি


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ০৮:৩০ পিএম
সেখানে শান্তি ফেরানোর প্রক্রিয়া
এমন বিরোধ আগে দেখা যায়নি

নিউজ ডেস্ক:    পশ্চিম তীর, গাজা উপত্যকা ও পূর্ব জেরুজালেমে প্রায়ই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সম্প্রতি ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ইহুদি বসতি সম্প্রসারণসহ নানা ইস্যুতে সহিংসতার মধ্যে সম্প্রতি পবিত্র আল-আকসা মসজিদে ঢুকে পড়ে ইসরায়েলি বাহিনী। মধ্যপ্রাচ্যের দীর্ঘদিনের এই সমস্যা নিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার সাংবাদিক ইলিয়াহু ফ্রেডম্যানের সঙ্গে কথা বলেছেন খ্যাতিমান মার্কিন শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবী ও দার্শনিক নোয়াম চমস্কি।
৯ এপ্রিল আল-জাজিরার ওয়েবসাইটে এই সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে শান্তি ফেরানোর প্রক্রিয়া ও নিজের প্রত্যাশা নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন তিনি। প্রথম আলোর পাঠকদের জন্য সাক্ষাৎকারের সংক্ষেপিত অংশ তুলে ধরা হলো-

নোয়াম চমস্কি: আমাদের নেতাদের কথাই ধরুন। তাঁদের অন্যতম অপরাধ হচ্ছে, তাঁরা বিপর্যয়ের দিকে ছুটছেন। সম্প্রতি আমরা ইরাকে মার্কিন আগ্রাসনের ২০তম বার্ষিকী পালন করেছি। অথচ এটা শতাব্দীর সবচেয়ে জঘন্য অপরাধ। সম্প্রতি মার্কিন নৌবাহিনী তাদের একটি যুদ্ধ নৌযানের নাম ইউএসএস ফালুজাহ রেখেছে। মূলত ইরাকে নৃশংস হামলার স্মরণে নৌযানটির এই নাম রাখা হয়েছে। অথচ ফালুজাহ ইরাকের একটি সুন্দর শহর ছিল। মার্কিন মেরিন সেনাদের হামলায় সুন্দর এই শহর ধ্বংস হয়ে গেছে। এখানে হাজারো মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। ব্যবহৃত অস্ত্রের ফসফরাস, ডিপ্লিটেড ইউরেনিয়ামে (নিঃশেষিত হয়ে আসা তেজস্ক্রিয় পদার্থ) এখনো অনেক মানুষ মারা যাচ্ছে।

ইরাকে আগ্রাসন চালানো যে একটি অপরাধ, শতাব্দীর সবচেয়ে জঘন্য অপরাধ—এমন একটি বাক্যও আপনি গত ২০ বছরে মূলধারার কোথাও খুঁজে পাবেন না। সর্বোচ্চ সমালোচনার ক্ষেত্রে এটিকে ‘ভুল’ বলা হয়ে থাকে। আবার এই আগ্রাসনকে নতুন রূপে উপস্থাপন করা হচ্ছে। উদারপন্থী বিশ্লেষকদের অনেকে একজন স্বৈরশাসকের হাত থেকে ইরাকি জনগণকে বাঁচানোর ব্যর্থ প্রচেষ্টা হিসেবে একে উল্লেখ করেছেন।

সত্যটা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র যখন সাদ্দাম হোসেনকে সমর্থন জুগিয়ে আসছিল, তখন তিনি সবচেয়ে ভয়ংকর অপরাধ করছিলেন। এর মধ্যে রয়েছে বিষ প্রয়োগে মানুষ খুন, হালাবজা গণহত্যা (ইরাকে কুর্দি জনগোষ্ঠীর ওপর গ্যাস প্রয়োগ), রাসায়নিক অস্ত্রের প্রয়োগ। এসব করে হাজার হাজার ইরাক ও ইরানের মানুষকে হত্যা করেছিলেন তিনি। তখন যুক্তরাষ্ট্র খুশি হয়েছিল, সমর্থন দিয়েছিল।

এখন নতুন করে ইতিহাস লেখা হচ্ছে। বলার চেষ্টা চলছে, আমরা সাদ্দামের হাত থেকে ইরাকিদের বাঁচানোর চেষ্টা করেছি। তিনি (সাদ্দাম) ইরাকে ‘গণহত্যা’ চালিয়েছেন। তাঁর নির্বিচার মানুষ হত্যাকে ‘গণহত্যা’ বলে শীর্ষ কূটনীতিকেরা পদত্যাগ করেছিলেন। অথচ ইরাকিরা এর প্রতিবাদে জোরালো আওয়াজ তুলতে পারেনি।

এভাবেই বুদ্ধিজীবীরা রাষ্ট্রের পরিচালিত জঘন্য অপরাধকে আড়াল করেন। অথচ এতে আপনি প্রান্তিক মানুষের কণ্ঠ শুনতে পাবেন না। আপনি ইউএসএস ফালুজাহ সম্পর্কে জানতে চান? আপনি মার্কিন সংবাদমাধ্যমে তা পড়তে যাবেন না। প্রান্তিক মানুষের সমালোচনামূলক মাধ্যম বা লেখায় তা পাবেন। আমি নিজেও মার্কিন সংবাদমাধ্যম নয়, বরং আল-জাজিরা থেকে এটা জেনেছি।

আল-জাজিরা: ইসরায়েলে ১৯৯৬ সালে যখন বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ক্ষমতায় আসেন, তখন আপনি ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, নেতানিয়াহুর শাসনের ধরন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বেশি ইতিবাচক হবে। কেননা তিনি বেশ যুক্তরাষ্ট্রপন্থী। নেতানিয়াহুর শাসনকাল ফিরে দেখলে ওই ভবিষ্যদ্বাণী কি সঠিক মনে হয়?

নোয়াম চমস্কি: কমবেশি কয়েক বছর অনুমান সঠিকই ছিল। চলতি শতকের প্রথম দশকে ইসরায়েলের রাজনীতিতে বড় পরিবর্তন দেখা যায়। ওই সময় থেকে নেতানিয়াহু বেশি ডানপন্থায় ঝুঁকে পড়েন। তবে মার্কিন পৃষ্ঠপোষক ও সমর্থকদের সঙ্গে কীভাবে কথা বলতে হবে, তা তিনি ভালোভাবে জানেন। আপনাকে মনে রাখতে হবে, ইসরায়েল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাব বদলে গেছে।

এখন ইসরায়েলের প্রধান সমর্থক অতি ডানপন্থী ধর্মপ্রচারক গোষ্ঠী। গত ২০ থেকে ৩০ বছরে তারা ইসরায়েলের শক্তিশালী সমর্থক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। উদারপন্থী ও উদার গণতন্ত্রপন্থীরা ক্রমেই দূরে সরে গেছে। সর্বশেষ মার্কিন নির্বাচনের ফলাফলের দিকে দেখুন, ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ইসরায়েলের তুলনায় ফিলিস্তিনিদের প্রতি সহানুভূতি বেশি। বিশেষত, তরুণ ও তরুণ ইহুদিদের মধ্যে।

নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্রের এই মনোভাব বুঝতে পারেন। তাই তো পারমাণবিক অস্ত্র ইস্যুতে ইরানের সঙ্গে ওবামা প্রশাসনের চুক্তির বিষয়ে কংগ্রেসে দেওয়া বক্তব্যে নিন্দা জানানোর আগে নেতানিয়াহু তাঁর অতি ডানপন্থী ও ধর্মপ্রচারক মার্কিন সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলে নিয়েছিলেন।

আল-জাজিরা: আপনি আগেই বলেছেন, মার্কিন সমর্থন থাকার কারণে ইসরায়েল বেআইনি কাজ করতে পারছে। তবে আমরা দেখেছি, নেতানিয়াহু বারবার ডেমোক্র্যাটদের বিব্রত করেছেন। ২০১৫ সালের কংগ্রেসে দেওয়া ভাষণ, ২০১৮ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রকাশ্যে সমর্থন, সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে বাদানুবাদ এই প্রমাণ দেয়। এর কারণ কী? বিশ্বশক্তি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের পিছিয়ে পড়ার কারণ সম্পর্কে নেতানিয়াহু কি এমন কিছু জানেন, যা আমরা জানি না? নাকি তিনি দ্বিদলীয় মার্কিন সমর্থন নিয়ে জুয়া খেলছেন?

নোয়াম চমস্কি: যুক্তরাষ্ট্র ক্রমেই বিভক্ত হচ্ছে। ইসরায়েলেরও একই অবস্থা...প্রথমবারের মতো ইসরায়েলি নেতারা প্রকাশ্যে মার্কিন নেতৃত্বের সঙ্গে বিরোধে জড়ালেন। বেজালেল মত্রিচ (ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী), ইতামার বেন-জাভির (ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রী), কখনো কখনো নেতানিয়াহু নিজেও মার্কিন নেতৃত্বকে প্রকাশ্যে বলেছেন, ‘আপনি যা চান, তা আমরা উপেক্ষা করতে যাচ্ছি।’ এটা একদমই নতুন বিষয়।

ইসরায়েল কোনো বিষয়ে মার্কিন নীতি পছন্দ না-ও করতে পারে। তবে এটাও ঠিক, যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো চাওয়া পূরণ করে থাকে দেশটি। ট্রাম্পের আমল আলাদা। ইসরায়েলের প্রতি অতি ভালোবাসা থেকে তিনি দেশটির জন্য যা খুশি করার চেষ্টা করেছিলেন। গোলান উপত্যকা (সিরিয়া থেকে ইসরায়েলের দখল করা ভূখণ্ড) দখল, জেরুজালেম অধিগ্রহণকে স্বীকৃতি, বসতি স্থাপন নীতি এগিয়ে নেওয়া স্পষ্টতই আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। এসব মার্কিন নীতিরও প্রতিফলন।

কিন্তু ইসরায়েলের নতুন সরকার, বিশেষত বেজালেল মত্রিচ, ইতামার বেন-জাভির মতো প্রভাবশালী ব্যক্তিরা বারবার যুক্তরাষ্ট্রকে বলছেন, ‘বেরিয়ে যাও’। নেতানিয়াহু কড়া ভাষায় বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, ‘আমরা একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র। আমাদের যা প্রয়োজন, আমরা সেটাই করব।’ ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্রের এমন নজিরবিহীন বিরোধ আগে দেখা যায়নি।

দু-তিন বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য বেটি ম্যাককলাম ইসরায়েলকে দেওয়া সামরিক সহায়তা পুনর্বিবেচনা বিষয়ে আইন পাসের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। সেই উদ্যোগ বেশি দূর এগোয়নি। কয়েক দিন আগে বার্নি স্যান্ডার্স ইসরায়েলকে সহায়তা দেওয়া নিষিদ্ধ করে একটি আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছেন। আমি মনে করি, এসব উদ্যোগ ভবিষ্যতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে। প্রভাব ফেলতে পারে জনমতে।

আল-জাজিরা: ইসরায়েলকে কেবল ইহুদি সম্প্রদায়ের মানুষের রাষ্ট্র বিবেচনা করায় আপনি দেশটির সুপ্রিম কোর্টের তীব্র সমালোচনা করেছিলেন। সেই সঙ্গে আপনি এমন কিছু উদাহরণ দিয়েছিলেন, যেখানে আদালত ইসরায়েলে থাকা ফিলিস্তিনিদের স্বার্থ সুরক্ষার কথাও বলেছিলেন। এ পরিস্থিতিতে আপনার মূল্যায়ন কী?

নোয়াম চমস্কি: ইসরায়েলের ইহুদি নাগরিকদের স্বার্থ সুরক্ষায় সুপ্রিম কোর্ট যুক্তিসংগতভাবে স্পষ্ট অবস্থান নিয়েছেন। সেই তুলনায় ইসরায়েলের ফিলিস্তিনিদের ব্যাপারে ততটা নয়। আপনি যেটা উল্লেখ করলেন, সেটা কাতজির (বিতর্কিত এলাকায় ইহুদি বসতি) মামলা। মনে রাখতে হবে, মামলাটি ২০০০ সালের। ওই সময় প্রথম ইসরায়েলের সর্বোচ্চ আদালত সিদ্ধান্তে পৌঁছান, বসতি স্থাপনে ইসরায়েলে বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের বাদ দেওয়া যাবে না। এ সিদ্ধান্ত নিতে এতটা বিলম্ব হওয়াটা দুঃখজনক।

তবে ইসরায়েল সরকার ফিলিস্তিনিদের ভূমি দখল করে বসতি গড়ে তুলছে—বিষয়টি দেশটির সর্বোচ্চ আদালত স্বীকার করেন না। এটিই বিশ্বের একমাত্র আইনি প্রতিষ্ঠান, যারা এই কর্মকাণ্ডকে বেআইনি মনে করে না। ইসরায়েলের সর্বোচ্চ আদালত নিয়মিতভাবে অবৈধ বসতি স্থাপন, অধিকৃত এলাকায় ফিলিস্তিনিদের ওপর বিধিনিষেধ, সহিংসতাকে অনুমোদন দিয়েছেন।

আল-জাজিরা: আপনি দীর্ঘদিন ধরে দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের পক্ষে সরব। এ জন্য আন্তর্জাতিক ঐকমত্যের কথাও বলেছেন। আপনি কি এখনো বিশ্বাস করেন, এটাই সবচেয়ে পছন্দসই সমাধান?

নোয়াম চমস্কি: এখানে দুটি বিকল্প নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। এক, দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের পক্ষে আন্তর্জাতিক ঐকমত্য। দুই, এক রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান। দ্বিতীয়টির পক্ষে অনেকেই ক্রমবর্ধমান সমর্থন জুগিয়ে যাচ্ছেন। তবে এই বিতর্কে কিছু ভুল রয়েছে। এখানে তৃতীয় একটি বিকল্পকে বাদ দেওয়া হয়েছে, যা ১৯৬৯ সাল থেকে ইসরায়েল পদ্ধতিগতভাবে বাস্তবায়ন করে আসছে। এটা হলো—বৃহত্তর ইসরায়েল গঠন।

বৃহত্তর ইসরায়েল গড়লেও সরকারের যুক্তি, ইহুদি সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখতে হবে। এই কৌশল বাস্তবায়নের উপায়, জর্ডান উপত্যকা দখলে নিয়ে স্থানীয়দের তাড়িয়ে সেখানে ইহুদি বসতি গড়ে তোলা। একইভাবে পশ্চিম তীরের মালে আদুমিমসহ নব্বইয়ের দশকে গড়ে ওঠা বিভিন্ন শহর দখলে নিয়ে ইহুদি বসতি সম্প্রসারণ করা। এসব শহরে বসবাসরত ফিলিস্তিনিরা ১৬০টির মতো ছোট আকারের ছিটমহলে আটকে রয়েছেন। মনে হচ্ছে, তাঁরা যেন উন্মুক্ত একটি কারাগারে আছেন।

ইসরায়েলের মধ্যে যা কিছু মূল্যবান, তা একীভূত করাই ইহুদি বসতি সম্প্রসারণের মূল্য উদ্দেশ্য। এ জন্য খুব ধীরে ধীরে অগ্রসর হচ্ছে তারা। আশপাশের গ্রামগুলোকে একে একে দখল করে এক ছাতার নিচে আনা হচ্ছে।

আপনি যদি দীর্ঘমেয়াদি ফলাফল নিয়ে কথা বলতে চান, তবে কেবল এক রাষ্ট্র বা দুই রাষ্ট্র নিয়ে বললে হবে না। বাস্তবে যা ঘটছে (বৃহত্তর ইসরায়েল) তা নিয়ে কথা বলতে হবে। আমার ব্যক্তিগত মতামত হলো, স্থায়ী সমাধান পেতে হলে বৃহত্তর ইসরায়েল কিংবা দ্বিজাতিভিত্তিক যেকোনো কৌশলের পথে এগিয়ে যেতে হবে। তবে প্রায়ই দাবি করা হয়, এটা আদতে সম্ভব নয়। কিন্তু আমি মনে করি, যুক্তরাষ্ট্র বাস্তবিকভাবে চাপ দিলে এটা সম্ভব হতে পারে।

নোয়াম চমস্কি: হ্যাঁ, আমার কাছে একটা নিদর্শন আছে। প্রথম ইন্তিফাদার (ইসরায়েলি দখলদারত্বের বিরুদ্ধে ১৯৮৭ সালে প্রথম ফিলিস্তিনি আন্দোলন) সময় আমি কালানদিয়া শরণার্থীশিবির থেকে সেটা এনেছিলাম। ওই সময় সেখানে কারফিউ চলছিল। কিছু ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনি বন্ধুর সহযোগিতায় আমি ওই শিবিরে কাজ করেছিলাম। পরে ইসরায়েলি টহলদল আমাদের সেখান থেকে নিয়ে আসে। এর আগে আমরা শিবিরের চারপাশে হাঁটাচলা, বেড়ার ওপর দিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলতে পেরেছিলাম। সেখান থেকে আমি একটি কাঁদানে গ্যাসের শেল এনেছিলাম। এটা কোনো আনন্দদায়ক সময়ের স্মৃতিচিহ্ন বা নিদর্শন নয়।

আল-জাজিরা: এই স্মারক কিসের প্রতিনিধিত্ব করে?

নোয়াম চমস্কি: এই স্মারক ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে দখল করে রাখা একটি অঞ্চলের মানুষের ওপর কঠোর এবং নৃশংস দমনপীড়নের প্রতিনিধিত্ব করে। সেখানে সহিংসতা ও দমনপীড়ন বাড়ছে। প্রায় প্রতিদিন সহিংসতা, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও দমনপীড়নের ঘটনা ঘটছে। আপনি হেবরনে যান, সেখানকার পরিস্থিতি দেখে নিশ্চিতভাবে মর্মাহত হবেন।

গাজার পরিস্থিতি আরও খারাপ। আমি সেখানে গিয়েছিলাম। ওই সময় ইসরায়েলি হামলা চলছিল। ২০ লাখের বেশি মানুষ সেখানে কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে ছিল। সেখানে পানি নেই, জ্বালানি নেই। ইসরায়েলি হামলায় পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে। এমনকি মৎস্যজীবীরা পর্যন্ত পয়োমিশ্রিত নোংরা পানির বাইরের জলসীমায় যেতে পারেন না। গেলে ইসরায়েলি গানবোট তাঁদের আটকে রাখে। আধুনিক সময়ে এটা জঘন্য একটি অপরাধ। গোলান উপত্যকা নিয়ে এখন আর কেউ কথাও বলে না। ইসরায়েলে এখন এসবই চলছে।

অনুবাদ: অনিন্দ্য সাইমুম

ঢাকানিউজ২৪.কম /

আরো পড়ুন

banner image
banner image