নিউজ ডেস্ক: বাঙালি জাতির বহুদিনের স্বপ্ন পূরণ হতে আর মাত্র দিন কয়েক বাকি। বিশেষ করে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ অর্থনৈতিকভাবে আরও এগিয়ে যাবে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পিছিয়ে পড়া ২১টি জেলা হচ্ছে- খুলনা বিভাগের খুলনা, বাগেরহাট, যশোর, সাতক্ষীরা, নড়াইল, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ ও মাগুরা।
বরিশাল বিভাগের বরিশাল, পিরোজপুর, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা ও ঝালকাঠি এবং ঢাকা বিভাগের গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরীয়তপুর ও রাজবাড়ী। পদ্মা বহুমুখী সেতু চালু হলে বাংলাদেশজুড়ে একটি সমন্বিত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠবে।
তখন পায়রা ও মংলাবন্দর, বেনাপোল স্থলবন্দরের সঙ্গে রাজধানী এবং বন্দর নগরী চট্টগ্রামের সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হবে। এতে শুধু দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নয়, পুরো বাংলাদেশের অর্থনীতিই আমূল বদলে যাবে।।
বহুল আকাঙ্ক্ষিত স্বপ্নের পদ্মা সেতু আগামী ২৫ জুন উদ্বোধন করা হবে। মঙ্গলবার (২৪ মে) দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাত শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। । এই সেতু চালু হলে শিল্পায়ন ও বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক ও কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধির পাবে। যার মাধ্যমে সরাসরি সুবিধার কারণে পরিবর্তন আসবে দেশের তিন কোটিরও বেশি মানুষের জীবনে। চালু হওয়ার এক বছরের মধ্যেই উঠে আসবে পদ্মা সেতু নির্মাণের খরচ। এই সেতু চালু হলে দেশের অর্থনীতিতে সামগ্রিক উৎপাদন, সেবা, পর্যটন, শিল্প, বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানে যে ইতিবাচক গতি তৈরি হবে, প্রথম বছরে তার আর্থিক মূল্য দাঁড়াবে জিডিপির ১ দশমিক ২ শতাংশ।
টাকার অঙ্কে প্রাপ্তির পরিমাণ হবে ৩৩ হাজার ৫৫৬ কোটি ৫৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা, যা পদ্মা সেতুর নির্মাণ ব্যয়ের চেয়ে বেশি।পদ্মা বহুমুখী সেতুর প্রকল্প পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম জানান, ‘পদ্মা সেতু সার্বিক নির্মাণব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকায়। চালুর আগে এ ব্যয় আর বাড়বে না।’
পদ্মা বহুমুখী সেতু চালু হলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কী প্রভাব ফেলবে, তার মূল্যায়ন করেছে বিশ্বব্যাংক, জাইকা ও সরকার।
সরকারের সম্ভাব্যতা জরিপে বলা হয়, সেতুটি নির্মিত হলে দেশের জিডিপি ১ দশমিক ২ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। এতে ওই অঞ্চলের মানুষের আয় বাড়বে এক দশমিক চার শতাংশ এবং নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে ৭ লাখ ৪৩ হাজার।
জাইকার সমীক্ষাতেও বলা হয়েছে, জিডিপি বাড়বে ১ দশমিক ২ শতাংশ। এতে আরও বলা হয়েছে, পদ্মা সেতু দিয়ে প্রতিদিন ২১ হাজার ৩০০ যানবাহন চলাচল করবে, ২০২৫ সাল নাগাদ এ সংখ্যা বেড়ে হবে ৪১ হাজার ৬০০।
আর বিশ্বব্যাংকের সমীক্ষায় বলা হয়, পদ্মা সেতু চালু হলে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি বাড়বে ১ শতাংশ হারে।
নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণের সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার নির্দেশে বাংলাদেশ ব্যাংকের তখনকার গভর্নর ড. আতিউর রহমান বিশাল ব্যয়ের অর্থ বৈদেশিক মুদ্রা বা ডলারে পরিশোধ করতে অগ্রণী ব্যাংককে দায়িত্ব দেন। এখনও এর তত্ত্বাবধান করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে পদ্মা সেতুর নাম করার প্রস্তাবকে না করে দিলেন সংসদ নেতা নিজেই। সরকার দলীয় সংসদ সদস্য গাজীপুর-৩ মুহাম্মদ ইকবাল হোসেন সবুজ এই প্রস্তাব দেন। তিনি বলেছেন, পদ্মা সেতুর নাম শেখ হাসিনা সেতু হওয়াই উচিত।
এছাড়া আর কিছু হতে পারে না। এসময় সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হাত নেড়ে ‘না’ ‘না’ করতে দেখা যায়। বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়ার সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনিত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি একথা বলেন।
আমি জানি মাননীয় নেত্রী আপনি উদার। আপনি মহানুভবতার মূর্ত প্রতীক। প্রেরণা কোনদিন প্রকাশ্যে আসে না প্রেরণা ভেতরে লালন করে। আর অক্সিজেন নিজেকে জড়িয়ে অপরকে আলোকিত করে। আপনি নিজের নামেই পদ্মা সেতু করবেন। ইতিমধ্যে আপনি না করেছেন কিন্তু আমাদেরও দায়বদ্ধতা আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে মুহাম্মদ ইকবাল হোসেন এসব কথা বলেন।
ঢাকানিউজ২৪.কম / এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির/কেএন
আপনার মতামত লিখুন: