মো. জাহিদুল ইসলাম, বাকেরগঞ্জ প্রতিনিধি, বরিশাল : বাকেরগঞ্জ উপজেলার ভরপাশা ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ড কৃষ্ণকাঠী গ্রামের দিনমজুর মো: আ:বারেকের স্ত্রী (শ্রবণ) প্রতিবন্ধী শাহিনুর বেগমকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে।
প্রতিবেশি মো: মেনাজ বিশ্বাস এর পুত্র রিপন বিশ্বাসের লালসার শিকার হন গৃহবধূ শাহিনুর বেগম। ধর্ষণের ঘটনায় ভরপাশা ইউনিয়ন পরিষদের ২ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আউয়াল হাওলাদার ও নুর ইসলাম ভূঁইয়ার সহযোগীতায় রিপন বিশ্বাস ধর্ষণ করে উল্লেখ করে তিন জনের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ করেন ধর্ষণের শিকার শাহিনুর বেগমের পিতা : পাদ্রীশিবপুর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের দূর্গাপুর গ্রামের মো: আইয়ুব আলী সিকদার। আইয়ুব আলী সিকদার তার কন্যা শাহিনুরকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করায় তিন জনের বিরুদ্ধে ন্যায় ও সুষ্ঠু বিচার চেয়ে ভরপাশা ইউপি চেয়ারম্যান বরাবর প্রায় ১৫ দিন আগে আবেদন করেন।
এ বিষয়ে শাহিনুর জানান, তাকে প্রতিবন্ধী কার্ড দেয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বাকেরগঞ্জ উপজেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ে নিয়ে যায় প্রতিবেশি রিপন বিশ্বাস। সেখানে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরে রিপন বিশ্বাস শাহিনুরকে প্রতিবন্ধী কার্ড পেতে বরিশাল যেতে হবে বলে বরিশাল রুপাতলী আবাসিক হোটেলে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। গত সেপ্টেম্বর মাসের ৫ তারিখ প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের ধর্ষণের শিকার হলে শাহিনুর তার পরিবারের কাছে বিষয়টি জানালে বিচার পেতে দ্বারে দ্বারে ঘুরলেও বিচার পায়নি। তাদের হুমকি ধামকিতে শাহিনুর ভয়ে আইনের সহায়তা নিতে পারেনি। ধর্ষণ ঘটনা এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে শাহিনুর তার ঘরে থাকা কৃষি ফসলের সার খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে।
স্থানিয়রা জানান, অচেতন অবস্থায় শাহিনুরকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেয়া হয়। দুই মাস পরে শাহিনুরকে ঢাকা থেকে পিত্রালয় আনা হয়। শাহিনুর এখন ভারসাম্যহীন জীবন যাপন করছেন। ঠিকমত কথা বলতে পারেন না কথা মুখে আটকে যায়।
শাহিনুরের চাচি শাশুড়ি মনোয়ারা বেগম জানান, আমার ভাশুরের ছেলে বারেক দিনমজুরের কাজ করে তাই আউয়াল মেম্বার শাহিনুরকে প্রতিবন্ধী ভাতা দেয়ার কথা বলেন। কিছুদিন পর রিপন বিশ্বাস শাহিনুরকে তার পিতার বাড়ি থেকে মেম্বর আউয়ালের কথা বলে বাকেরগঞ্জ নিয়ে যায়। তখন রিপন বিশ্বাসের সাথে গেলে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। শাহিনুর ঐ ঘটনার পরের দিন তার কাছে বিষয়টি জানায়। শাহিনুর আগে সুস্থ ছিল একটু কানে কম শুনতো এখন সার খাওয়ার পরে জ্ঞানহীন হয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ধর্ষণের ঘটনা এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে রিপন বিশ্বাস ঢাকায় আত্মগোপনে রয়েছে। তার মোবাইল ফোনে ফোন করা হলে সাংবাদিকদের পরিচয় পেয়ে ফোন কেটে দেয়।
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য আউয়াল হাওলাদার জানান, রিপন বিশ্বাস শাহিনুরকে ধর্ষণ করেছে কিনা সেটা আমি দেখিনি। তবে আমার কাছে কিছুদিন আগে শাহিনুরের পরিবারের লোকজন বিচার চাইতে আসছিল। আমার সাথে পরে আর তারা যোগাযোগ করেনি।
এ বিষয় ভরপাশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশ্রাফুজ্জামান খান খোকন জানান, কিছুদিন আগে পরিষদে শাহিনুরের বাবা ধর্ষণ ঘটনা কেন্দ্র করে বিচারের দাবিতে আবেদন করে। তখন আমি শাহিনুরকে চিকিৎসা করাতে বলি ও বিষয়টি থানা পুলিশকে জানাতে পরামর্শ দেই। তবে সালিশি বিচার ঘটনার বিষয় আমি বলে দিয়েছি এই ঘটনা সালিশ করা আমার কাজ নয়।
এ বিষয়ে বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এম মাকসুদুর রহমান জানান, এ বিষয়ে আমাদের কাছে অভিযোগ আসেনি। তবে ধর্ষণ ঘটনা যদি বরিশাল রুপাতলী ঘটে থাকে তাহলে বরিশাল কোতয়ালি থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নিবে।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: