
মোঃ জাহিদুল ইসলাম, বাকেরগঞ্জ প্রতিনিধি, বরিশাল : বরিশালের সাথে পটুয়াখালীর দুমকী ও বাউফল উপজেলার সাথে যোগাযোগ ব্যবস্হাকে আরো সহজতর করার লক্ষে বাকেরগঞ্জের রাঙ্গামাটি নদীর উপর সেতু নির্মাণে উদ্যোগ নেয় সরকার।
সেই লক্ষে বরিশালের (দিনারের পুল) -লক্ষীপাশা -দুমকী আঞ্চলিক সড়কে বাকেরগঞ্জ উপজেলার দুধল ও চরাদী ইউনিয়নের গোমায় রাঙামাটি নদীর ওপর নির্মিত হচ্ছে গোমা সেতু।
সেতু ও সড়ক বিভাগের অধীনে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এম খান গ্রুপ সেতুর কাজ করছে।
নির্মাণাধীন গোমা সেতুর নির্মান প্রকল্পে ২০১৭ সালে ৫৭ কোটি ৬২ লাখ ১৫ হাজার টাকা ব্যয়সাপেক্ষে ৩ বছর মেয়াদের প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়েছিল।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ভিক্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়েছিল ২০২০ সালের জুনে।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সেতুর নির্মাণকাজ ৪৪ ভাগ সম্পন্ন হলেও তখন উচ্চতা নিয়ে আপত্তি তোলে বিআইডব্লিউটিএ। ফলে সেতু নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে যায়। প্রকল্পটির ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছিল। পরে আন্তমন্ত্রণালয়ের দফায় দফায় সভা এবং বিশেষজ্ঞ দলের পরিদর্শনের পর নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমঝোতায় সেতুর সংশোধিত প্রকল্প গ্রহণ করে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়।
জানা গেছে, প্রথম প্রকল্প অনুযায়ী মাঝবরাবর সেতুর উচ্চতা রাখা হয়েছিল সর্বোচ্চ জোয়ারের সময় ৭ দশমিক ৮৬ মিটার। পিলার স্থাপন সম্পন্নের পর বিআইডব্লিউটিএ আপত্তি তুলে জানায়, এ উচ্চতায় রাঙ্গামাটি নদীতে নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে। নৌযান চলাচল স্বাভাবিক রাখার জন্য উচ্চতার প্রয়োজন কমপক্ষে ১২ দশমিক ২ মিটার।
সওজ থেকে দাবি করা হয়, উচ্চতা নিয়ে বিআইডব্লিউটিএ’র চূড়ান্ত সম্মতিপত্র নিয়েই প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়। এ নিয়ে দুই মন্ত্রণালয়ের দ্বন্দ্বের বিষয়টি শেষ পর্যন্ত আন্তমন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপে নিষ্পত্তি হয়।
সওজ সূত্রে জানা গেছে, সংশোধিত প্রকল্পে সেতুর নকশায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। নদীপথ সচল রাখার জন্য বিআইডব্লিউটিএ’র দাবি অনুযায়ী সেতুর মাঝবরাবর সর্বোচ্চ জোয়ারের সময় ১২ দশমিক ৪ মিটার উচ্চতা রেখে নতুন নকশা করা হয়েছে। সংশোধিত প্রকল্পে ব্যয় বেড়েছে ৩৪ কোটি ৮২ লাখ ৭৪ হাজার টাকা।
প্রকল্পে বলা হয়েছে, বরিশাল- চরামদ্দী - লক্ষ্ীপাশা -দুমকি জেলা সড়কের ১৪ কিলোমিটারে রাঙ্গামাটি নদীর ওপর ১০ দশমিক ২৫ মিটার প্রশস্ত দুই লেনে সেতু নির্মিত হবে। সেতুর দৈর্ঘ্য হবে ২৮৩ দশমিক ১৮৮ মিটার। সংশোধিত প্রস্তাবে প্রকল্প ব্যয় দেখানো হয়েছে ৯২ কোটি ৪৪ লাখ ৮৯ হাজার টাকা
১১ জুলাই বরিশালের সড়ক ও জনপদের প্রকৌশলী মাসুদ মাহমুদ সুমন জানান, বিআইডব্লিউটিএর দাবি অনুযায়ী সংশোধিত প্রকল্পে সেতুর মাঝে উচ্চতা রাখা হয়েছে ১২ দশমিক ৪ মিটার।
এ জন্য নদীর মধ্যে দুটি পিলারের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং গার্ডার নির্মাণে কংক্রিটের বদলে স্টিলের পাত ব্যবহার করা হবে। সেতুর( ৩,৪) নং পিলারের গার্ডার নির্মাণে কাজের শিঘ্রই দরপত্র আহ্বান করা হবে। ইতিমধ্য সেতুর দুই পাশের সংযোগ সড়কের ১ দশমিক ৯ কিলোমিটার সংযোগ সড়কের কাজ শেষ প্রায়। ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হবে বলে জানান তিনি।
স্থানিয় দুধল গ্রামের সবুজ সিকদার জানান, সেতুটি চালু হলে দক্ষিণাঞ্চলের তিন উপজেলার যাতায়াত, বাণিজ্য ও শিক্ষাক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটবে। সহজ হবে সড়কে যোগাযোগ ব্যবস্থা।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: