• ঢাকা
  • শুক্রবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ১৯ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

চালককে মারধরে কেন্দুয়া-ঢাকা রুটে বাস চলাচল বন্ধ 


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: রবিবার, ১৯ মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ০৫:৪১ পিএম
চালককে মারধরে
কেন্দুয়া-ঢাকা রুটে বাস চলাচল বন্ধ 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ময়মনসিংহ: দুটি নতুন বাস চলতে বাধা দেয়ায় নেত্রকোণার কেন্দুয়া থেকে ঢাকা রুটে শাহ সুলতান পরিবহনের চালককে মারধর ও নানা হুমকি-ধমকি দিয়ে বাসগুলোকে তাড়িয়ে দিয়ে দীর্ঘদিনের এই বাস সার্ভিসটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এতে ৪০টি বাস বন্ধ রয়েছে এক সপ্তাহ ধরে। তাড়িয়ে দেয়া বাসগুলোর শ্রমিকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাত্রীদের বাসসেবা অব্যাহত রাখতে বর্তমানে নান্দাইল চৌরাস্তা থেকে ঢাকা পর্যন্ত চলাচল করছে। এ সমস্যা নিরসনে ঢাকায় বাস মালিক ও মোটরযান কর্মচারিদের মধ্যে আলোচনা চলছে বলে সূত্র জানায়।

শাহ সুলতান পরিবহনে মো: শরীফ নামের একজন চালক অভিযোগে জানান, গত ১৩ই মার্চ সন্ধ্যার পর কেন্দুয়া উপজেলা সদরে ঢাকা বাস স্ট্যান্ডে শাহ সুলতান পরিবহনে আরো বাস অন্তর্ভুক্তি নিয়ে মেয়র চাপ দেয়াতে শাহ সুলতান পরিবহনের চালকরা এতে অসম্মতি প্রদান করে। একপর্যায়ে মো: শরীফ নামের একজন চালকের গায়ে হাত তুলেন কেন্দুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র আসাদুল হক ভুইঁয়া। অন্য কয়েকজন চালকদেরও মেয়রের লোকজন মারধর করে কেন্দুয়া হতে শাহ সুলতান পরিবহনের বাস চলাচল বন্ধ করে দেন। এর প্রেক্ষিতে শাহ
সুলতান পরিবহনের বাসগুলো আঠারবাড়ি বাজার হতে চলাচল শুরু করে কিন্তু এতেও বাধা হয়ে দাঁড়ান পৌর মেয়র আসাদুল হক ভুইঁয়া। মেয়র তারই বন্ধু আঠারবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের মাধ্যমে আঠারবাড়ি বাজার কাউন্টার হতে শাহ সুলতান পরিবহনের বাসের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। এরপর শাহ সুলতান পরিবহনের বাস গুলো বর্তমানে নান্দাইল চৌরাস্তা হতে চলাচল করছে।

আসাদুল হক ভুইঁয়ার রোষানলে পড়া শাহ সুলতান পরিবহনের চালক মোঃ শরীফ তার বক্তব্যে বলেন যে, মেয়রের ইচ্ছে মতো বাস অন্তর্ভুক্ত করা এবং চাঁদার হার বাড়ানোর দ্বন্ধে আমার গায়ে হাত তুলেন এবং শাহ সুলতান পরিবহনের বাস চলাচল কেন্দুয়া এবং আঠারবাড়ি বাজার হতে বন্ধ করে দেন। এর প্রতিবাদে আমরা পরিবহন শ্রমিকরা ধর্মঘটের চিন্তা ভাবনা করছি।

পৌর মেয়র আসাদুল হক ভুইঁয়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন কেন্দুয়া শাখারও সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন দীর্ঘদিন ধরে। তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন চালককে মারধরের বিষয়টি তার জানা নেই। তবে সংশ্লিষ্টদের অনুমতি সাপক্ষে কেন্দুয়া ঢাকা রুটে হিমাচল নামে দুটি বাস চলাচল শুরু করলে শাহ সুলতান পরিবহনের শ্রমিকরা তাতে বাধা দেয়। এর জের ধরে বাস চলাচল বন্ধ।  এ সমস্যা সমাধানে ঢাকায় মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে আলোচনা চলছে।

নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলাতে পৌর মেয়র আসাদুল হক ভুইঁয়ার মদদে একটি প্রেসার গ্রæপ তৈরি হয়েছে। আসাদুল হক ভুইঁয়া একই সাথে কেন্দুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং দীর্ঘ প্রায় ১৬-১৭ বছর যাবৎ কেন্দুয়া উপজেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি। অর্থাৎ কেন্দুয়া উপজেলাতে তার একচ্ছত্র আধিপত্য। শুধু আসাদুল হক ভুইঁয়াই নন, তার আপন বড় ভাই এনামুল হক ভুইঁয়া কেন্দুয়া পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি, কেন্দুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এবং কেন্দুয়া বাজার কমিটির সভাপতি। এছাড়াও মেয়রের ভাতিজা রাতুল হক ভুইঁয়া চাচার সাথে কেন্দুয়া উপজেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের কমিটিতে দায়িত্বে রয়েছেন ও কেন্দুয়া উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী।
২য় ভাতিজা আহসানুল হক শাফিম ঢাকা কলেজে অধ্যয়নরত থাকলেও কেন্দুয়া উপজেলার ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী থাকলেও তিনি আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক-৫ নির্বাচিত হয়েছেন। অর্থাৎ কেন্দুয়া উপজেলা মূলত হক ফ্যামেলিই আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠন নিয়ন্ত্রণ করেন।

ব্যতিক্রম ছিলেন আসাদুল হক ভুইঁয়ার বড় ভাই মরহুম মেয়র আব্দুল হক ভুইঁয়া। আব্দুল হক ভুইঁয়ার বিরুদ্ধে কোন অবৈধ কাজের অভিযোগ ছিলো না। মেয়র গ্রুপের নেতৃত্বে কেন্দুয়া উপজেলার প্রতিটি সিএনজি, অটো রিকশা, ট্রাক, বাস এমনকি প্রতিটি দোকান থেকেও প্রতিদিন চাঁদা আদায় করা হয়। প্রতিদিন বিশাল অংকের চাঁদা তোলার অভিযোগ রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন আওয়ামী লীগের নেতা বলেন, আসাদুল হক ভুইঁয়ার কারণে কোন ভালো বাস সার্ভিস কেন্দুয়াতে চলতে পারে না। এর ফলে কেন্দুয়ার সাধারণ মানুষ সিএনজি করে ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনাতে যাতায়াত করতে বাধ্য হয় এবং প্রায় সময় মর্মান্তিক দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন।
 

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image