
নিউজ ডেস্ক: পাবনায় নিজেদের উৎপাদিত বীজে পেঁয়াজ আবাদ ভাল হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। গত বছর বাজার থেকে চড়া দামে বীজ কিনে পেঁয়াজ চাষের খরচ প্রায় ৪০ শতাংশ বেড়ে গেলেও আশানুরূপ লাভ করতে না হওয়ায় কৃষকরা এবার নিজেদের উৎপাদিত বীজে পেঁয়াজ আবাদে আশার আলো দেখছেন।
সুজানগর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের কৃষক কামরুজ্জামান জানান, গত বছর হতাশ হলেও এ বছর মনের আনন্দে পেঁয়াজ চাষ করেছেন। তার ঘরেই রয়েছে পেঁয়াজের বীজ। অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এ বছর প্রায় আধ মন পেঁয়াজের বীজ প্রস্তুত করেছেন। নিজেদের উৎপাদিত সেই বীজে আবাদ ভাল হওয়ায় তিনি এ বছর লাভবান হওয়ার আশা করছেন।
তিনি আরো বলেন, গত বছর ১ কেজি পেঁয়াজের বীজ কিনতে হয়েছিল প্রতি কেজি প্রায় সাড়ে ৮ হাজার টাকা দরে। চড়া দামে বীজ কিনে ২০ বিঘা জমিতে আবাদ করেতে প্রায় ৯ লাখ টাকা খরচ হয়েছিল। এবার নিজের ঘরের বীজ দিয়ে পেঁয়াজ আবাদ করে ভালো ফল পাওয়ায় এখন আশাবাদী। বাজার থেকে চড়া দামে কেনা ১ কেজি বীজ দিয়ে সাধারণত বিঘা জমি আবাদ করা যায়। কিন্তু, এ বছর ৬০০ থেকে ৭০০ গ্রাম বীজ দিয়েই এক বিঘা জমির আবাদ করা সম্ভব হয়েছে। প্রথম দফায় ১১ বিঘা জমিতে ঘরের বীজ দিয়ে আবাদ করে ভালো ফলন পাওয়ায় আরও ৮/১০ বিঘা আবাদের পরিকল্পনা করছি। সুজানগরের প্রায় প্রতিটি চাষির ঘরেই এ বছর নিজেদের উৎপাদিত পেঁয়াজ বীজ রয়েছে। সেই বীজ দিয়ে আবাদে সবাই সফল হয়েছেন বলে দাবী করেন।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত বছর পেঁয়াজের বীজের চড়া দামের কারণে অনেকেই হিমশিম খান। এ বছর তারা নিজেদের তৈরি বীজ থেকে পেঁয়াজ আবাদের উদ্যোগ নিয়েছেন। এতে উৎপাদন খরচ কমার পাশাপাশি পেঁয়াজ আবাদের পরিমাণও বেশি হবে বলে আশা করছেন কৃষি কর্মকর্তারা।
পাবনা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উন্নয়ন শাখার কর্মকর্তা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. ইদ্রিস আলী বলেন, 'গত বছর পাবনায় ৪৪ হাজার ৩০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ আবাদ হয় ৬ দশমিক ৩৫ লাখ মেট্রিক টন। ইতোমধ্যে ৩১ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে চারা পেঁয়াজ চাষ শেষ হয়েছে। জানুয়ারি জুড়েই চলবে পেঁয়াজ চাষ। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা রয়েছে।
পাবনা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান জানান, 'এ বছর চারা পেঁয়াজ ও মূলকাটা পেঁয়াজ মিলে প্রায় ৫৩ হাজার হেক্টর জমিতে সাড়ে ৭ লাখ টনের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে আবাদ ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, 'পেঁয়াজের বর্তমান বাজার দর ঠিক থাকলে কৃষকদের লোকসান হবে না। এ বছর উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় এবং পেঁয়াজ চাষে কৃষকদের সক্ষমতা বেড়ে যাওয়ায় তারা লাভবান হবেন।
ঢাকানিউজ২৪.কম /
আপনার মতামত লিখুন: